www.land.gov bd আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম

বাংলাদেশের জমির মালিকানার ইতিহাস জড়িয়ে আছে খতিয়ানের সাথে। ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত, জমির পরিমাপ, মালিকানা এবং কর ধার্যের জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জরিপ পরিচালিত হয়েছে। এই জরিপ গুলোর ফলাফল ‘খতিয়ান’ নামে পরিচিত।

আমাদের দেশে মূলত চার ধরণের খতিয়ান প্রচলিত:

  • সিএস খতিয়ান
  • এসএ খতিয়ান
  • আরএস খতিয়ান
  • বিআরএস খতিয়ান

আরএস খতিয়ান কি?

What is RS Khatian: ভূমি আমাদের জীবনের অপরিহার্য একটি অংশ। কৃষি, বসবাস, ব্যবসা-বাণিজ্য সকল ক্ষেত্রেই ভূমির গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু ভূমি মালিকানার সঠিক তথ্য না থাকলে জমি সংক্রান্ত বিরোধ, জালিয়াতি এবং অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সমস্যা গুলো সমাধানের জন্য সরকার আরএস খতিয়ান চালু করেছে।

আমাদের দেশে ব্রিটিশ আমলে ১৯১০-১৯২০ সালে ‘সিএস’ (Cadastral Survey) জরিপের মাধ্যমে প্রথম খতিয়ান তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৫০-৫১ সালে ‘এসএ’ (Settlement Survey) জরিপের মাধ্যমে খতিয়ান আপডেট করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হওয়ার ফলে এবং জরিপে ত্রুটি থাকার কারণে এসএ খতিয়ানে অনেক ভুল তথ্য চলে এসেছে।

তাই আমাদের বাংলাদেশ সরকার আরএস খতিয়ান (Re-survey) এর নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। যার মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভূমির পুনরায় জরিপ করা হচ্ছে। এর ফলে খুব সহজেই ভূমির সঠিক অবস্থান এবং পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে।

আরো পড়ুনঃ খতিয়ান সংশোধন আবেদন ফরম

আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান | R S khatian check

Ways to search RS Khatian: যদি আপনি আপনার আরএস খতিয়ান অনুসন্ধান করতে চান। তাহলে সবার প্রথমেই আপনাকে বাংলাদেশ ই পর্চা এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এর মধ্যে প্রবেশ করতে হবে।

এরপর এই ওয়েবসাইট এর মধ্যে প্রবেশ করার পরে আপনাকে আপনার নিজস্ব জেলা এবং আপনার নিজস্ব উপজেলা বাছাই করে নিতে হবে। যখন আপনি এই কাজ গুলো করবেন, তারপর আপনি আসলে কোন ধরনের খতিয়ান বের করতে চান, সেটি সিলেক্ট করে দিতে হবে।

আর যেহেতু আপনি আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করতে চান। সেহেতু অবশ্যই আপনাকে ”আর এস খতিয়ান” – নামক অপশনের মধ্যে ক্লিক করতে হবে।

এরপর আপনাকে বেশ কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে। যেমন, আপনার মৌজা নং এর পাশাপাশি আপনাকে আপনার খতিয়ান নম্বর প্রদান করতে হবে। উপরোক্ত তথ্য গুলো প্রদান করার পর, আপনি আপনার www land gov bd আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ নামজারি খতিয়ান যাচাই করার সহজ উপায়

www land gov bd আর এস খতিয়ান অনলাইন চেক

Rules for issue of RS certificate: উপরের আলোচনা তে আমি www land gov bd আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করার পদ্ধতি কে খুব সংক্ষেপে উল্লেখ করেছি। তবে এবার আমি আপনাকে প্রতিটি নিয়ম ধাপে ধাপে দেখিয়ে দিবো। তো আপনি যদি নিচে উল্লেখিত নিয়ম গুলো সঠিক ভাবে অনুসরণ করতে পারেন। তাহলে আপনি সফলভাবে আরএস খতিয়ান চেক (rs khatian check) করতে পারবেন। যেমন,

আর এস (RS) খতিয়ান বের করার নিয়ম

  1. সবার প্রথমে আপনাকে বাংলাদেশ ই পর্চা এর মূল ওয়েবসাইট এর মধ্যে প্রবেশ করতে হবে।
  2. আপনি চাইলে গুগল থেকে অথবা এখানে ক্লিক করে সরাসরি উক্ত ওয়েবসাইটের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবেন।
  3. যখন আপনি উক্ত লিংক এর মধ্যে ক্লিক করবেন, তখন আপনি বাংলাদেশ ই পর্চা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন। এখন আপনাকে একটু নিচের দিকে স্ক্রল করতে হবে।
আর এস খতিয়ান

আর এস খতিয়ান

এবার আপনি দুই ধরনের খতিয়ান দেখতে পারবেন। একটি হলো, সার্ভে খতিয়ান এবং অপরটি হলো, নামজারি খতিয়ান। তো আপনি আপনার প্রয়োজন অনুসারে যেকোনো একটি খতিয়ান সিলেক্ট করতে পারবেন। তবে আপনাকে বোঝানোর জন্য আমি সার্ভে খতিয়ান অপশনে সিলেক্ট করলাম। 

  1. একটু নিচের দিকে আসলেই আপনি ”সার্ভে খতিয়ান অনুসন্ধান” – নামক একটি অপশন দেখতে পারবেন।
  2. মূলত এই অপশনের মধ্যে আপনাকে আপনার বিভাগ, জেলা, উপজেলা, খতিয়ানের ধরন, মৌজা প্রদান করতে হবে। যা উপরের পিকচার দেখানো হয়েছে।
  3. এরপর আপনাকে খতিয়ানের তালিকা প্রদান করা হবে, সেখান থেকে আপনার সঠিক খতিয়ান তালিকাটি সিলেক্ট করতে হবে।
  4. তারপর আপনাকে “মালিকের নাম” ও “দাগ নং” দিতে হবে।

আবার আপনি চাইলে ”খতিয়ান নং”- প্রদান করে আপনার কাঙ্খিত খতিয়ান তালিকা বের করতে পারবেন।  আর যখন আপনি এই যাবতীয় তথ্য গুলো সঠিক ভাবে প্রদান করবেন। তারপর আপনি সবার উপরের ডান পাশে ”অধিকতর অনুসন্ধান” নামক অপশনে ক্লিক করুন। এরপর আপনি আপনার land gov bd rs khatian check করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ খতিয়ান সংশোধন আবেদন ফরম

কেন আপনার আর এস খতিয়ান চেক করা যাচ্ছেনা?

আপনার জমির সঠিক তথ্য জানার জন্য আরএস খতিয়ান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনেক সময় আমরা দেখতে পাই যে, অনেকেই তাদের আরএস খতিয়ান চেক করতে পারেন না। আর এই খতিয়ান অনুসন্ধান করতে না পারার পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে। সেগুলো হলো, 

  1. আপনার এলাকায় আরএস খতিয়ান প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যার কারণে, আপনার খতিয়ান এখনও প্রস্তুত হয়নি। তাই আপনি অনলাইনে আরএস খতিয়ান চেক করতে পারবেন না।
  2. আপনি যে তথ্য ব্যবহার করে আরএস খতিয়ান চেক করার চেষ্টা করছেন সেগুলোতে ভুল তথ্য আছে।

তাই আপনার এলাকায় আরএস খতিয়ান প্রক্রিয়াধীন কিনা তা জানতে হলে, আপনার স্থানীয় উপজেলা ভূমি অফিসে যোগাযোগ করুন। প্রয়োজনে ভূমি অফিস থেকে আপনার জমির নথি সংগ্রহ করুন। তাহলে আপনি  land gov bd আর এস খতিয়ান চেক করতে ব্যার্থ হওয়ার কারণ খুজে পাবেন।

www land gov bd আর এস খতিয়ান পাওয়ার উপায়

How can I get Khatian: যখন আপনি অনলাইন থেকে আরএস খতিয়ান চেক করবেন, তার পরবর্তী সময়ে আপনার আর এস খতিয়ানের কপি সংগ্রহ করার দরকার হবে। সে কারণে কিভাবে আমরা সেই খতিয়ান কপি সংগ্রহ করতে পারবো সে বিষয়ে সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া দরকার।

আপনার প্রয়োজন হলে আপনি ডাকযোগের মাধ্যমে খতিয়ানের অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে তার জন্য আপনাকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আর যখন আপনি সঠিক ভাবে অনলাইনে আবেদন করবেন তারপর আপনার ঠিকানা বরাবর ডাকযোগে খতিয়ান এর অনলাইন কপি পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

আবার আপনি চাইলে সরাসরি অনলাইন থেকে আপনার খতিয়ান সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে খতিয়ান এর কপি সংগ্রহ করার জন্য ১০০ টাকা দিতে হবে। যার বিনিময়ে আপনি আরএস খতিয়ান এর অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন। (খতিয়ান কপি সংগ্রহের নির্ধারিত ফি যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে)।

www.land.gov bd আর এস খতিয়ান download

অনলাইনে আরএস খতিয়ান চেক করার পর যদি আপনার সেই খতিয়ানের অনলাইন অথবা সার্টিফাইড কপির দরকার হয় তাহলে আপনাকে আরো বেশ কিছু কাজ করতে হবে। যেগুলো নিচে ধাপে ধাপে দেখিয়ে দেওয়া হলো। 

www.land.gov bd আর এস খতিয়ান download

www.land.gov bd আর এস খতিয়ান download

খতিয়ান চেক করার সময় খতিয়ানের তথ্যের নিচে ”খতিয়ান আবেদন” অপশনে ক্লিক করুন। তারপর আপনার সামনে নতুন একটি পেজ অপেন হবে যেখানে আপনি একটি আবেদন ফরম দেখতে পারবেন। তো এই আবেদন ফরম পূরণ করার পর আপনি আপনার www.land.gov bd আর এস খতিয়ান download করতে পারবেন।

  1. তাই সবার প্রথমে উক্ত ফরমে আপনার কিছু ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করুন। 
  2. যেমন, জমির তথ্য হিসেবে মৌজা, খতিয়ান নং লাগবে।
  3. এর পাশাপাশি আপনার কিছু ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে।
  4. যেমন, পরিচয়পত্র নাম্বার, জন্ম তারিখ, ইমেইল।
  5. তাই জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার দেওয়ার পর নিচে থাকা “যাচাই করুন” নামক বাটনে ক্লিক করুন  

যাচাই করার পর আপনার নাম ও ঠিকানা অটোমেটিক ভাবে নিচের অপশন গুলোতে চলে আসবে। তারপর আপনি একটু নিচের দিকে আসলেই আরো দুইটি আবেদন করার অপশন দেখতে পারবেন। একটি হলো, অনলাইন কপি এবং অপরটি হলো সার্টিফাইড কপি। তো আপনি চাইলে যেকোনো একটি কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। 

তবে আপনি যদি আর এস খতিয়ান সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করতে চান তাহলে আপনাকে আবেদন করার পর মোট ০৭ দিন অপেক্ষা করতে হবে। আর ০৭ দিন পর আপনি ডাকযোগে অফিস কাউন্টার থেকে e porcha gov bd খতিয়ান সংগ্রহ করতে পারবেন।

www.land.gov bd আর এস খতিয়ান download

www.land.gov bd আর এস খতিয়ান download

আর অনলাইন কপি তাৎক্ষনিক ভাবে পাওয়া সম্ভব। তাই আমি আপনাকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য “অনলাইন কপি” সংগ্রহ করার উপায় দেখিয়ে দিবো। সেজন্য নিচের পদ্ধতি গুলো ফলো করুন। 

  1. আবেদনের ধরন হিসেবে ”অনলাইন কপি” – সিলেক্ট করুন।
  2. তারপর আপনাকে ১০০ টাকা ফি প্রদান করতে হবে।
  3. আপনি বিভিন্ন মেথডে পেমেন্ট করতে পারবেন। যেমন, বিকাশ, নগদ, উপায়, রকেট ইত্যাদি।
  4. এবার আপনাকে একটি ক্যাপচা পূরন করতে হবে।
  5. তারপর “পরবর্তী ধাপ” অপশনে ক্লিক করে পেমেন্ট সম্পন্ন করতে হবে।

এভাবে যখন আপনি সফলভাবে খতিয়ান কপি সংগ্রহ করার ফি প্রদান করবেন তারপর আপনি আপনার কাঙ্খিত খতিয়ান ডাউনলোড করতে পারবেন। 

আরো পড়ুনঃ অনলাইনে জমির রেকর্ড যাচাই বাংলাদেশ

জমির আর এস খতিয়ান নমুনা

জমির আর এস খতিয়ান নমুনা

জমির আর এস খতিয়ান নমুনা

অনলাইন ছাড়া কিভাবে আরএস খতিয়ান বের করা যায়?

How to get RS Khatian without online: সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে অনলাইন পদ্ধতির উপর জোর দিচ্ছে। কিন্তু সকলেরই অনলাইন ব্যবহারে দক্ষতা নেই। তাদের জন্য অনলাইন ছাড়া আরএস খতিয়ান বের করার বিকল্প পদ্ধতি জানা জরুরি।

তাই আমরা আলোচনা করবো কিভাবে অনলাইনের বাইরে অফলাইন পদ্ধতিতে আপনি আপনার আরএস খতিয়ান বের করতে পারবেন।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

  • জমির দাগ নম্বর
  • খতিয়ান নম্বর
  • মৌজা নং

অফলাইন পদ্ধতি:

  1. ভূমি অফিসে যোগাযোগ: আপনার নিকটতম ভূমি অফিসে যান এবং উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র জমা দিন।
  2. আবেদনপত্র পূরণ: ভূমি অফিস থেকে আরএস খতিয়ানের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করুন এবং সঠিকভাবে পূরণ করুন।
  3. আবেদন জমা: পূরণকৃত আবেদনপত্র, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং নির্ধারিত ফি জমা দিন।
  4. খতিয়ান বের: ভূমি অফিস কর্মকর্তা আপনার কাগজপত্র যাচাই করে আপনার আরএস খতিয়ান প্রিন্ট করে দেবেন।

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে:

আপনি 16122 নম্বরে কল করে যেকোনো ধরনের ভূমি সংক্রান্ত সহায়তা নিতে পারেন। এই নম্বরে কল করে আপনি আপনার আরএস খতিয়ান সম্পর্কে জানতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ জমির দলিল সার্চ করার নতুন নিয়ম 

খতিয়ান বের করার লিংক | RS khatian Link

Link to download khatian: আপনারা অনেকেই গুগলে খতিয়ান বের করার লিংক খোজ করেন। তো আপনার সুবিধার জন্য এবার আমি আপনাকে লিংক শেয়ার করবো। যে লিংক এর মধ্যে ক্লিক করে আপনি আপনার খতিয়ান বের করতে পারবেন। আর উক্ত লিংকটি নিচে শেয়ার করা হলো। 

জমির খতিয়ান মানে কি?

What does land survey mean: এতক্ষণের আলোচনা থেকে আমরা www.land.gov bd আর এস খতিয়ান বের করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে জানতে পারলাম। তো এখন অনেকের মনে একটি প্রশ্ন জেগে থাকবে সেটি হল, জমির খতিয়ান মানে কি। আর আপনার মনেও যদি এই ধরনের প্রশ্ন জেগে থাকে, তাহলে শুনুন…..

নির্দিষ্ট কোন জমির খতিয়ান কে মূলত ভূমি স্বত্ব বলা হয়ে থাকে। জমির খতিয়ান হলো একধরণের সরকারি নথি যা নির্দিষ্ট জমির মালিকানা ও বিবরণ সনাক্ত করে থাকে। যে নথিতে নির্দিষ্ট জমির মালিকের নাম, ঠিকানা, জমির পরিমাণ, দাগ নম্বর, মৌজা, খাজনার পরিমাণ, জমির শ্রেণী, ভূমির ব্যবহার ইত্যাদি তথ্য উল্লেখ থাকে।

আরো পড়ুনঃ অনলাইনে জমির রেকর্ড যাচাই বাংলাদেশ

জমির মাঠ পর্চা এবং পর্চা বলতে কী বোঝায়?

What is the meaning of parcha of land and parcha of land: অনেকের কাছে জমির মাঠ পর্চা এবং পর্চা একই জিনিস বলে মনে হয়। তবে বাস্তবতা হলো, এই দুটোর মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।

জমির মাঠ পর্চা কি?

যখন সরকারি ভূমি জরিপ কর্মকর্তারা নির্দিষ্ট কোনো জমি জরিপ করেন, তখন তারা প্রথমে একটি খসড়া খতিয়ান তৈরি করেন। এই খসড়া খতিয়ান সত্যায়িত না করেই জমির মালিকের কাছে প্রদান করা হয়। এটিকেই বলা হয় জমির মাঠ পর্চা।

পর্চা কি?

যখন চূড়ান্তভাবে কোনো জমির খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়, তখন তা ভূমি রাজস্ব কর্মকর্তার (এলআরও) দ্বারা সত্যায়িত করা হয়। এরপর এই খতিয়ান মুদ্রণ করে জমির মালিকের কাছে প্রদান করা হয়। এটিকেই বলা হয় পর্চা।

জমির প্রকৃত মালিক কে তা বোঝার উপায় কি?

How to know who is the real owner of the land: জমি ক্রয় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ, যার সাথে জড়িত থাকে প্রচুর অর্থ এবং আইনি জটিলতা। তাই জমি ক্রয়ের পূর্বে সঠিকভাবে সকল দিক যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি। এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো জমির মালিকানা যাচাই করা। যা জমির দলিল পর্যালোচনা করার মাধ্যমে সম্পন্ন করা সম্ভব।

জমির দলিল কী?

জমি ক্রয়-বিক্রয়ের সময় তৈরি করা একটি আইনি নথি, যাকে বলা হয় জমির দলিল। এই দলিলে উল্লেখ থাকে জমির সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, যেমন:

  • জমির মালিকের নাম
  • জমির পরিমাণ
  • জমির অবস্থান
  • জমির মূল্য
  • লেনদেনের তারিখ
  • সাক্ষীদের নাম

আর আপনি যখন সেই জমির দলিল এর সাথে অন্যান্য ডকুমেন্ট গুলোর সত্যতা খুঁজে পাবেন। তখন আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন যে, নির্দিষ্ট কোন জমির প্রকৃত মালিক কে।

আরো পড়ুনঃ নামজারি খতিয়ান যাচাই করার সহজ উপায়

জমির দলিল কত প্রকার ও কি কি?

How many types of land documents are there and what are they: কোন একটি জমির মালিকানা নির্ণয় করার উপযুক্ত পদ্ধতি হলো দলিল যাচাই-বাছাই করা। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই জমির দলিল কে আরো বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়?

যদি আপনি না জেনে থাকেন, তাহলে দেখে নিন জমির দলিল কত প্রকার ও কি কি। সেজন্য নিচের তালিকায় বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের জমির দলিল এর নাম উল্লেখ করা হলো।  

  1. সাব কবলা দলিল,
  2. দানপত্র দলিল,
  3. হেবা দলিল,
  4. হেবা বিল এওয়াজ দলিল,
  5. এওয়াজ দলিল,
  6. বণ্টননামা দলিল,
  7. অসিয়ত নামা দলিল,
  8. উইল দলিল,
  9. নাদাবী দলিল,
  10. বায়না দলিল,
  11. আদালতে সাফকবলা দলিল,

উপরের তালিকা তে আপনি মোট ১১ প্রকারের জমির দলিল দেখতে পারছেন। মূলত এই ধরনের জমির দলিল এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট কোন একটি জমির আসল মালিকানা কে, তা নির্ধারণ করা যায়

দলিলের হাত নক্সা ভুল হলে কি করা যায়?

What can be done if the hand drawing of a document is wrong: কখনো কখনো দলিলে ভুল তথ্য চলে আসতে পারে। যেমন, দাগ, খতিয়ান, মৌজা, চৌহদ্দি অথবা মালিকের নাম ভুল হতে পারে। এই ধরনের ভুলের কারণে জমি সংক্রান্ত লেনদেনে জটিলতা দেখা দিতে পারে।

তবে চিন্তার কোনো দরকার নেই কারণ, 1976 সালের ‘রেজিস্ট্রেশন অফ ডকুমেন্টস অ্যাক্ট‘ অনুযায়ী, দলিল রেজিস্ট্রির পর 3 বছরের মধ্যে তাতে থাকা ভুল তথ্য সংশোধন করা যায়।

সংশোধন প্রক্রিয়া:

প্রথমে, আপনাকে একটি আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। এই আবেদনপত্রে ভুল তথ্য এবং সংশোধিত তথ্য উল্লেখ করতে হবে। এরপর, আবেদনপত্রের সাথে নিম্নলিখিত কাগজপত্রগুলো জমা দিতে হবে:

    • ভুল তথ্যযুক্ত দলিলের মূল কপি
    • সংশোধিত তথ্যের প্রমাণ (যেমন, খতিয়ান, মৌজার নকশা, ইত্যাদি)
    • আবেদনকারীর পরিচয়পত্র
    • আবেদন ফি

আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর:

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আপনার আবেদনপত্র এবং কাগজপত্র গুলো যাচাই করবেন। যদি সবকিছু ঠিক থাকে, তাহলে কর্মকর্তা দলিলে সংশোধন করে দেবেন। সংশোধন হওয়ার পর আপনাকে একটি নতুন দলিল দেওয়া হবে।

আরো পড়ুনঃ নামজারি খতিয়ান যাচাই করার সহজ উপায়

আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা

গুরুত্বপূর্ণ এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমি আপনাকে আর এস খতিয়ান বের করার নিয়ম সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছে। আশা করি, আজকের এই পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করতে পারলে। আপনি খুব সহজেই আপনার আরএস খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন।

তবে এরপরও যদি আপনার RS খতিয়ান বের করতে কোন ধরনের সমস্যা হয়। তাহলে অবশ্যই নিচে আপনার সমস্যা টি কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।

আর জমি সংক্রান্ত কোনো ধরনের তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে, অবশ্যই নিয়মিত আমাদের ওয়েব সাইটে ভিজিট করবেন। এতক্ষণ থেকে আমাকে সাথে থাকার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *