rs খতিয়ান বের করার নিয়ম | আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান | www.land.gov bd
RS Khatian search: আমরা সকলেই জানি যে, নির্দিষ্ট কোন জমির জরিপ সম্পন্ন হওয়ার পরে যদি পরবর্তীতে পুনরায় ভুল ত্রুটি সংশোধন করা হয়। আর এই চুড়ান্ত সংশোধন করার লক্ষ্যে যখন পুনরায় জরিপ করা হয়। তখন সেই জরিপ থেকে প্রকাশিত ডকুমেন্টস কে বলা হয়, আরএস খতিয়ান (RS Khatian).
আর উক্ত জরিপ শেষে কিভাবে আপনি আপনার ”আর এস খতিয়ান” অনুসন্ধান করবেন, আপনি কিভাবে আরএস খতিয়ান বের করবেন। সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেওয়ার জন্যই আজকের এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে।
আরএস খতিয়ান কাকে বলে?
What is RS Khatian: সহজ কথায় বলতে গেলে, যখন নির্দিষ্ট কোন জমির আর এস খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়। তখন যে সকল জরিপ কর্মচারী বা কর্মকর্তা থাকবেন, তারা সরেজমিনে গিয়ে এই সকল জরিপ এর তদন্ত করে না। সে কারণে উক্ত জরিপ এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভুল ত্রুটি থেকে যায়।
তো এই ভুল ত্রুটি গুলো সংশোধন করার লক্ষ্যে পরবর্তী সময়ে পুনরায় জরিপ করা হয়। আর এই জরিপ করার পরে যে চূড়ান্ত খতিয়ান প্রকাশিত হয় তাকে বলা হয়,আর এস খতিয়ান।
যদিওবা এখন পর্যন্ত আমাদের সম্পূর্ণ বাংলাদেশে আরএস খতিয়ান প্রকাশিত হয়নি। তবে আমাদের বাংলাদেশ এর মধ্যে এমন অনেক জেলা আছে। যে জেলা গুলো তে চূড়ান্ত ভাবে আরএস খতিয়ান প্রকাশ হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের সরকারি জরিপ কর্মী বা সরকারি আমীন সরাসরি সরেজমিনে গিয়ে জমির পরিমাপ করে ভুল ত্রুটি গুলো সংশোধন করার কাজ করেছে।
আরো পড়ুনঃ খতিয়ান সংশোধন আবেদন ফরম
আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করার উপায়
Ways to search RS Khatian: যদি আপনি আপনার আরএস খতিয়ান অনুসন্ধান করতে চান। তাহলে সবার প্রথমেই আপনাকে বাংলাদেশ ই পর্চা এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এর মধ্যে প্রবেশ করতে হবে।
এরপর এই ওয়েবসাইট এর মধ্যে প্রবেশ করার পরে আপনাকে আপনার নিজস্ব জেলা এবং আপনার নিজস্ব উপজেলা বাছাই করে নিতে হবে। যখন আপনি এই কাজ গুলো করবেন, তারপর আপনি আসলে কোন ধরনের খতিয়ান বের করতে চান, সেটি সিলেক্ট করে দিতে হবে।
আর যেহেতু আপনি আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করতে চান। সেহেতু অবশ্যই আপনাকে ”আর এস খতিয়ান” – নামক অপশনের মধ্যে ক্লিক করতে হবে।
এরপর আপনাকে বেশ কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে। যেমন, আপনার মৌজা নং এর পাশাপাশি আপনাকে আপনার খতিয়ান নম্বর প্রদান করতে হবে। আর উপরোক্ত তথ্য গুলো প্রদান করার পর, আপনি আপনার আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ নামজারি খতিয়ান যাচাই করার সহজ উপায়
আর এস (RS) খতিয়ান বের করার নিয়ম
Rules for issue of RS certificate: উপরের আলোচনা তে আমি আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করার পদ্ধতি কে খুব সংক্ষেপে উল্লেখ করেছি। তবে এবার আমি আপনাকে প্রতিটি নিয়ম ধাপে ধাপে দেখিয়ে দিবো। তো আপনি যদি নিচে উল্লেখিত নিয়ম গুলো সঠিক ভাবে অনুসরণ করতে পারেন। তাহলে আপনি সফলভাবে আরএস খতিয়ান বের করতে পারবেন। যেমন,
- সবার প্রথমে আপনাকে বাংলাদেশ ই পর্চা এর মূল ওয়েবসাইট এর মধ্যে প্রবেশ করতে হবে।
- আপনি চাইলে গুগল থেকে অথবা এখানে ক্লিক করে সরাসরি উক্ত ওয়েবসাইটের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবেন।
- যখন আপনি উক্ত লিংক এর মধ্যে ক্লিক করবেন, তখন আপনি বাংলাদেশ ই পর্চা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন। এখন আপনাকে একটু নিচের দিকে স্ক্রল করতে হবে।
- একটু নিচের দিকে আসলেই আপনি ”সার্ভে খতিয়ান অনুসন্ধান” – নামক একটি অপশন দেখতে পারবেন।
- মূলত এই অপশনের মধ্যে আপনাকে আপনার বিভাগ, জেলা, উপজেলা, খতিয়ানের ধরন, মৌজা এবং খতিয়ানের নাম্বার প্রদান করতে হবে। যা উপরের পিকচার দেখানো হয়েছে।
- আর যখন আপনি এই যাবতীয় তথ্য গুলো সঠিক ভাবে প্রদান করবেন। তারপর আপনি সবার উপরের ডান পাশে ”খুঁজুন” নামক অপশনে ক্লিক করুন।
- এরপর আপনি আপনার খতিয়ান বের করতে পারবেন।
আপনি চাইলে এই ওয়েবসাইট ছাড়াও আপনার মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন থেকে আপনার আরএস খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন। আর মোবাইলের অ্যাপসের মাধ্যমে আর এস খতিয়ান বের করার জন্য আপনাকে কোন কোন পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করতে হবে। সে গুলোর নিচে দেখিয়ে দেওয়া হল।
আরো পড়ুনঃ খতিয়ান সংশোধন আবেদন ফরম
অ্যাপ্লিকেশন থেকে আরএস খতিয়ান বের করার নিয়ম
Rules for extracting RS Khatian from application: আপনি চাইলে উপরে উল্লেখিত ওয়েবসাইট ছাড়াও একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন এর মাধ্যমে আরএস খতিয়ান বের করে নিতে পারবেন। তবে তার আগে অবশ্যই আপনার মোবাইলে eKhatian নামক এপ্লিকেশন টি ইন্সটল করা থাকতে হবে।
আর আপনি চাইলে এখানে ক্লিক করে সরাসরি গুগল প্লে স্টোর থেকে, উক্ত মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন টি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
তো উক্ত অ্যাপ্লিকেশন টি ডাউনলোড করার পরে যখন আপনি নতুন ভাবে প্রবেশ করবেন। তখন আপনাকে বেশ কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে। আর সেই তথ্য গুলো কিভাবে প্রদান করবেন, তা নিচে দেখিয়ে দেওয়া হলো। যেমন,
- সবার প্রথমেই আপনাকে খতিয়ান নির্ধারণ করে দিতে হবে। আর এখানে অবশ্যই আপনি আরএস খতিয়ান সিলেক্ট করে দিবেন।
- তারপর আপনাকে আপনার বিভাগ সিলেক্ট করতে হবে।
- এরপর পর্যায় ক্রমে আপনার জেলা ও উপজেলা সিলেক্ট করতে হবে।
- এই তথ্য গুলো দেওয়ার পরে আপনাকে মৌজা নং সিলেক্ট করতে হবে।
- তারপর আপনার খতিয়ান নম্বর প্রদান করতে হবে।
- এরপর সবার নিচের দিকে আপনি একটি ক্যাপচা কোড দেখতে পারবেন। আপনাকে সেই ক্যাপচা কোড টি সঠিক ভাবে প্রদান করতে হবে।
আর যখন আপনি উপরোক্ত কাজ গুলো সঠিকভাবে করতে পারবেন। তারপর আপনি আপনার মোবাইল এর অ্যাপ্লিকেশন এর সাহায্য আর এস খতিয়ান বের করে নিতে পারবেন। আশা করি, এতে আপনার কোন ধরনের সমস্যা হবে না।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে জমির রেকর্ড যাচাই বাংলাদেশ
অনলাইন ছাড়া কিভাবে আরএস খতিয়ান বের করা যায়?
How to get RS Khatian without online: দেখুন, বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবকিছুর মধ্যে অনলাইন পদ্ধতির প্রয়োগ করছে। তবে সবাই কিন্তু অনলাইন সম্পর্কে খুব বেশি একটা ধারণা রাখেনা।
আর যারা আসলে অনলাইন সম্পর্কে একটু কম জানে, তাদের অনলাইন থেকে আর এস খতিয়ান বের করাটা বেশ কষ্টসাধ্য একটা বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। তো আপনি চাইলে অনলাইন ছাড়াও আরও ভিন্ন পদ্ধতি তে আপনার আর এস খতিয়ান বের করে নিতে পারবেন।
আর আপনি যদি অনলাইন ছাড়া অফলাইনে আপনার আর এস খতিয়ান বের করতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনাকে ভূমি অফিসের মধ্যে সরাসরি যেতে হবে। তবে ভূমি অফিসে যাওয়ার আগে আপনার নিকট অবশ্যই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট গুলো থাকতে হবে। যেমন,
- আপনার জমির দাগ নম্বর।
- খতিয়ান নম্বর।
- মৌজা নং ইত্যাদি থাকতে হবে।
আর এ গুলোর মাধ্যমে আপনি ভূমি অফিস থেকে সরাসরি আপনার আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন।
তবে এরপরও যদি আপনার ভূমি সংক্রান্ত কোনো ধরনের সমস্যার সমাধান জানার প্রয়োজন হয়। তাহলে আপনি সরাসরি ভূমি অফিসের মধ্যে কল করতে পারবেন।
আর তাদের সাথে কথা বলার নম্বর টি হল, ১৬১২২. যদি আপনি এই নম্বরে ফোন করেন, তাহলে আপনি ভূমি সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়ের সহায়তা মোবাইলের কলের মাধ্যমে নিতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ জমির দলিল সার্চ করার নতুন নিয়ম
খতিয়ান বের করার লিংক
Link to download khatian: আপনারা অনেকেই গুগলে খতিয়ান বের করার লিংক খোজ করেন। তো আপনার সুবিধার জন্য এবার আমি আপনাকে লিংক শেয়ার করবো। যে লিংক এর মধ্যে ক্লিক করে আপনি আপনার খতিয়ান বের করতে পারবেন। আর উক্ত লিংকটি নিচে শেয়ার করা হলো।
জমির খতিয়ান মানে কি?
What does land survey mean: এতক্ষণের আলোচনা থেকে আমরা আরএস খতিয়ান বের করার নিয়ম গুলি সম্পর্কে জানতে পারলাম। তো এখন অনেকের মনে একটি প্রশ্ন জেগে থাকবে। সেটি হল, জমির খতিয়ান মানে কি। আর আপনার মনেও যদি এই ধরনের প্রশ্ন জেগে থাকে, তাহলে শুনুন…..
নির্দিষ্ট কোন জমির খতিয়ান কে মূলত ভূমি স্বত্ব বলা হয়ে থাকে। যেখানে নির্দিষ্ট কোন জমির যাবতীয় বিবরণী গুলো উল্লেখ করা থাকে।
যেমন, জমির এক বা একাধিক মালিকের নাম উল্লেখ থাকে। জমির মালিকের পিতা এবং মাতার নাম, তার স্থায়ী ঠিকানা, দাগ নম্বর, ভূমির পরিমাণ ইত্যাদি বিষয় গুলো জমির খতিয়ান এর মধ্যে উল্লেখ করা থাকে।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে জমির রেকর্ড যাচাই বাংলাদেশ
জমির মাঠ পর্চা এবং পর্চা বলতে কী বোঝায়?
What is the meaning of parcha of land and parcha of land: আমরা অনেকেই আছি যারা জমির মাঠ পর্চা এবং জমির পর্চা এই দুটো কে একই বিষয় মনে করি। যদিও বা এই দুটো একই বিষয়, তবে কার্যত দিক থেকে যথেষ্ট পরিমাণ পার্থক্য রয়েছে।
কেননা যখন সরকারি ভূমি জরিপ কর্মকর্তারা নির্দিষ্ট কোন জমি জরিপ করার সময়। কোন প্রকার সত্যায়িত ছাড়াই এক ধরনের খসড়া খতিয়ান প্রদান করে।এবং সেই খতিয়ান সত্যায়িত করার পূর্বেই উক্ত জমির মালিকের নিকট সেই খসড়া খতিয়ান প্রদান করে। তখন তাকে বলা হয়ে থাকে, জমির মাঠ পর্চা।
তবে যখন চূড়ান্ত ভাবে কোন জমির পর্চা প্রদান করা হয়। তখন সেটি ভূমি রাজস্ব অফিসার কর্তৃক সত্যায়িত করা হয় এবং চূড়ান্ত ভাবে খতিয়ান প্রকাশ করা হয়, তখন তাকে বলা হবে, পর্চা। মূলত এটি হলো মাঠ পর্চা এবং পর্চা এর মধ্যে থাকা মূল পার্থক্য।
জমির প্রকৃত মালিক কে তা বোঝার উপায় কি?
How to know who is the real owner of the land: যখন আপনি কোন জমির ক্রয় করবেন, তখন জমি ক্রয় করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে জমির প্রকৃত মালিকানা যাচাই করতে হবে। আর নির্দিষ্ট কোন জমির প্রকৃত মালিক যাচাই করার অন্যতম ডকুমেন্টস হল সেই জমির দলিল।
কেননা একটি জমির দলিল এর মধ্যে সেই জমির বিভিন্ন তথ্য উল্লেখ করা থাকে। যেমন,
- জমির সঠিক পরিমাণ,
- সেই জমিটি কবে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে,
- এবং কেনাকাটা করার সময় কত টাকা মূল্য আদান প্রদান করা হয়েছে,
এই যাবতীয় তথ্য গুলো জমির দলিল এর মধ্যে উল্লেখ করা থাকে। আর আপনি যখন সেই জমির দলিল এর সাথে অন্যান্য ডকুমেন্ট গুলোর সত্যতা খুঁজে পাবেন। তখন আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন যে, নির্দিষ্ট কোন জমির প্রকৃত মালিক কে।
আরো পড়ুনঃ নামজারি খতিয়ান যাচাই করার সহজ উপায়
জমি রেজিস্ট্রি করার কতদিন পর দলিল পাওয়া যায়?
How many days after land registration can the document be obtained: এবার আমি আপনার সাথে গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য শেয়ার করার চেষ্টা করব। সেই তথ্যটি হল, আমরা অনেকেই জানতে চাই যে, জমি রেজিস্ট্রি করার কতদিন পর দলিল পাওয়া যায়।
মূলত একটি জমি রেজিস্ট্রি করার পর সেই জমির সকল দলিল সঠিক ভাবে সম্পন্ন হতে মোট ৩০ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
আর যখন আপনি এই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। তারপর আপনাকে ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসে আপনার দলিলের জন্য যোগাযোগ করতে হবে। আর যোগাযোগ করার পরে আপনি ভূমি অফিস থেকে জমির রেজিষ্ট্রি সংগ্রহ করতে পারবেন।
জমির দলিল কত প্রকার ও কি কি?
How many types of land documents are there and what are they: কোন একটি জমির মালিকানা নির্ণয় করার উপযুক্ত পদ্ধতি হলো দলিল যাচাই-বাছাই করা। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই জমির দলিল কে আরো বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়?
যদি আপনি না জেনে থাকেন, তাহলে দেখে নিন জমির দলিল কত প্রকার ও কি কি। সেজন্য নিচের তালিকায় বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের জমির দলিল এর নাম উল্লেখ করা হলো।
- সাব কবলা দলিল,
- দানপত্র দলিল,
- হেবা দলিল,
- হেবা বিল এওয়াজ দলিল,
- এওয়াজ দলিল,
- বণ্টননামা দলিল,
- অসিয়ত নামা দলিল,
- উইল দলিল,
- নাদাবী দলিল,
- বায়না দলিল,
- আদালতে সাফকবলা দলিল,
উপরের তালিকা তে আপনি মোট ১১ প্রকারের জমির দলিল দেখতে পারছেন। মূলত এই ধরনের জমির দলিল এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট কোন একটি জমির আসল মালিকানা কে, তা নির্ধারণ করা যায়।
দলিলের হাত নক্সা ভুল হলে কি করা যায়?
What can be done if the hand drawing of a document is wrong: এটা খুব স্বাভাবিক একটা বিষয় যে, আমাদের বিভিন্ন সময় জমির দলিল এর মধ্যে ত্রুটি থাকে। তো আপনার জমির দলিল এর মধ্যেও যদি কোন ধরনের ত্রুটি থাকে। তাহলে হতাশ হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
বরং আপনি চাইলে মাত্র কয়েকটি পদ্ধতি অনুসরণ করে, আপনার দলিল এর ত্রুটি গুলো সংশোধন করে নিতে পারবেন। আর এই সংশোধন এর জন্য আপনাকে সাব রেজিস্টার কার্যালয়ে যেতে হবে। যেখানে মূলত আগে থেকেই সেই দলিল টি নিবন্ধন করা ছিল।
আর সাব রেজিস্টার কার্যালয়ে যাওয়ার পর সেখানে থাকা কর্মরত কর্মচারীরা আপনাকে যে সকল ডকুমেন্টস প্রদান করতে বলবে। আপনি সেই সকল ডকুমেন্টস প্রদান করে আপনার দলিলের মধ্যে থাকা ত্রুটি সংশোধন করার জন্য আবেদন করবেন।
সেই আবেদন জমা হওয়ার পর নির্দিষ্ট সময় যাওয়ার পর, আপনার দলিল এর মধ্যে থাকা ত্রুটি গুলো সংশোধন করা হবে। এবং পরবর্তীতে আপনি আপনার দলিল সংগ্রহ করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ নামজারি খতিয়ান যাচাই করার সহজ উপায়
কত বছর পর পর জরিপ করা হয়?
How many years are surveys conducted: আমরা সকলেই জানি যে, নির্দিষ্ট সময় পরপর জমির জরিপ করা হয়। আর আমাদের বাংলাদেশ এর মধ্যে সেই জমির জরিপ করার সময়কাল হলো মোট ৩০ বছর। আর এইদিক থেকে এটা ষ্পষ্ট করে বলা যায় যে, আমাদের দেশে প্রায় ৩০ বছর পর পর জমির রেকর্ড করা হয়।
তবে এই সময়ে যদি নির্দিষ্ট কোনো জমির মলিকানা পরিবর্তন না হয়। তাহলে সেই ব্যক্তিকে উক্ত জমির মালিকা হিসেবে ধরা হয়। আর তার নামেই সেই জমির মালিকানা রেকর্ড হয়। আর শুধু এটুকু জেনে রাখুন যে, আমাদের বাংলাদেশে মোট ৩০ বছর পরপর জমির জরিপ করা হয়।
আরো পড়ুনঃ জমির দলিল সার্চ করার নতুন নিয়ম
খতিয়ান কিভাবে পেতে পারি?
How can I get Khatian: যখন আপনি বিভিন্ন মাধ্যমে খতিয়ান চেক করবেন। তার পরবর্তী সময়ে আপনার খতিয়ান কপি সংগ্রহ করার দরকার হবে। সে কারণে কিভাবে আমরা সেই খতিয়ান কপি সংগ্রহ করতে পারবো সে বিষয়ে সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া দরকার।
তো আপনার প্রয়োজন হলে আপনি ডাকযোগের মাধ্যমে খতিয়ানের অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে তার জন্য আপনাকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আর যখন আপনি সঠিক ভাবে অনলাইনে আবেদন করবেন। তারপর আপনার ঠিকানা বরাবর ডাকযোগে খতিয়ান এর অনলাইন কপি পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
তবে আপনি চাইলে সরাসরি আপনার খতিয়ান সংগ্রহ করতে পারবেন। তো যখন আপনি সরাসরি আপনার খতিয়ান সংগ্রহ করতে চাইবেন। তখন আপনাকে আপনার এলাকার সেটেলমেন্ট অফিসে যেতে হবে।
তারপর আপনাকে জমির খতিয়ান নাম্বার বা দাগ নাম্বার প্রদান করতে হবে। এরপর আপনাকে খতিয়ান এর কপি সংগ্রহ করার জন্য ১০০ টাকা দিতে হবে। তবে যদি আপনি অনলাইন থেকে আপনার খতিয়ান কপি নেন। তাহলে আপনার খরচ পড়বে মাত্র ৫০ টাকা। (এটি খতিয়ান কপি সংগ্রহের নির্ধারিত ফি যেটি যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে)।
এস এ দাগ কি?
সহজ কথায় বলতে গেলে এস.এ খতিয়ান কে বলা হয়, এস.এ দাগ। তবে এখানে কিছু কথা বলে রাখা ভালো। সেটি হলো, বর্তমান সময়ে যারা এসএ খতিয়ান ব্যবহার করছেন। তাদের এই খতিয়ান হলো, পাকিস্তান শাসনামলের জরিপ করা খতিয়ান।
কেননা, আমরা সকলেই জানি যে, ১৯৪৭ সালে ভারত উপমহাদেশ থেকে পাকিস্তান আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে ভাগ হয়। আর তখন আমাদের বর্তমান বাংলাদেশ সেই পাকিস্তান রাষ্ট্রের মধ্যে অর্ন্তভুক্ত ছিলো।
তবে যখন ভারতীয় উপমহাদেশের সাথে পাকিস্তান যুক্ত ছিলো। তখন ভারতে জমিদারী প্রথা চালু ছিলো। যার কারণে ১৯৪৭ সালে যখন পাকিস্তান ভাগ হয়ে যায়। ঠিক সেই সময়ে পুনরায় জমির জরিপ করার প্রয়োজন পড়েছিলো।
তো সেই জরিপের মধ্যে যে খতিয়ান প্রদান করা হয়েছে সেটিকে বলা হয়, এসএ দাগ বা এসএ খতিয়ান।
খারিজ না করলে কি হয়?
আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা আসলে জানতে চায় যে, খারিজ না করলে কি হয়। আর আপনিও যদি এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান।তাহলে আমি আপনাকে বলবো যে, আপনি যদি খারিজ না করেন। তাহলে আপনি বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়বেন।
কেননা, যখন আপনি আপনার জমির খারিজ করবেন না। তখন স্বাভাবিক ভাবে আপনি আপনার জমির মালিকানার দাবি করবেন।
কিন্তুু সমস্যা হলো যে, খারিজ না করলে আপনি সম্পূর্ণ ভাবে আপনার জমির মালিকানা দাবি করতে পারবেন না। এর পাশাপাশি খারিজ না করলে উক্ত জমির যে আসল মালিক থাকবে। সে নির্দিষ্ট জমির তুলনায় আরো অধিক জমি বিক্রি করতে পারবে।
সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, যেহুতু তার নামে এখনও জমি থাকবে। সেহুতু সে পুনরায় তার জমি অন্য কারো কাছে দ্বিতীয় বার বিক্রিও করতে পারবে। তাই আপনার অবশ্যই অবশ্যই জমির খারিজ করা দরকার। নাহলে আপনি উপরোক্ত সমস্যা গুলোর মধ্যে পড়বেন।
আরো পড়ুনঃ জমির দলিল সার্চ করার নতুন নিয়ম
নাম খারিজ কি?
আপনি যখন জমির খারিজ করতে যাবেন। তখন আপনি এই নাম খারিজ এর কথা শুনতে পারবেন। তো যখন নির্দিষ্ট কোনো জমির মালিকানা পরিবর্তন হবে। আর সেই নতুন মালিকের নামে উক্ত জমির রেকর্ড করা হবে। তখন তাকে বলা হবে, নাম খারিজ।
অর্থ্যাৎ নির্দিষ্ট কোনো জমির মালিকের নাম পরিবর্তনে নতুন মালিকের নামে জমি রেকর্ড করাকে নাম খারিজ বলা হয়। আবার আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা মূলত এই ধরনের খারিজ কে নামজারী বলে থাকে।
জমি খারিজ করতে কত সময় লাগে?
আপনারা অনেকেই গুগলে সার্চ করেন যে, জমি খারিজ করতে কত সময় লাগে। আর যারা এই বিষয়ে জানতে চান। তাদের বলবো যে, জমির খারিজ করতে কত সময় লাগবে। সেটা সম্পূর্ণ ভাবে বেশ কিছু বিষয় এর উপর নির্ভর করবে। আর সেই বিষয় গুলো হলো,
- জমির অবস্থান,
- জমির আকার,
- জমির মালিকানা,
- জমির দলিলপত্রের সচ্ছতা,
- জমির খারিজের জন্য আবেদনকারীর নথিপত্রের সচ্ছতা,
- জমির খারিজের জন্য আবেদনকারীর সাথে জমি বিক্রেতার মধ্যে সমন্বয়,
তো উপরোক্ত বিষয় গুলোর ভিত্তি করে নির্ভর করে যে, আপনার জমির খারিজ করতে কত সময় লাগবে।
তবে সাধারন ভাবে একটি নির্দিষ্ট জমির খারিজ করার জন্য ২ মাস থেকে ৩ মাস পর্যন্ত সময় লাগে। আবার যদি আপনার জমির তথ্য বা ডকুমেন্টেস এর মধ্যে কোনো ধরনের সমস্যা থাকে। সেক্ষেত্রে আপনার জমির খারিজ হতে আরো বেশি সময়ের প্রয়োজন হবে।
জমির খারিজ করতে কি কি লাগে?
যখন আপনি একজন ব্যক্তি হিসেবে জমির খারিজ করতে যাবেন। তখন আপনার নিকট অবশ্যই বেশ কিছু নথি থাকতে হবে। যে নথি গুলোর মাধ্যমে আপনি জমির খারিজের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর সেই নথি গুলো হলো,
- জমির খতিয়ান,
- জমির মালিকানা সনদ,
- জমির দলিল,
- আবেদনকারীর পরিচয়পত্র,
- আবেদনকারীর ঠিকানা,
- আবেদনকারীর স্বাক্ষর,
- জমি বিক্রেতার কাছ থেকে একটি ছাড়পত্র,
তো যখন আপনার কাছে উপরোক্ত নথি গুলো থাকবে। তখন আপনি আপনার অঞ্চলের ভূমি অফিস বরাবর জমি খারিজের জন্য আবেদন করতে হবে।
এরপর ভূমি অফিসের মধ্যে থাকা কর্মকর্তারা আপনার আবেদন ও জমির সকল নথি গুলো যাচাই করবে। যদি আপনার নথিতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয়। তাহলে আপনি তাদের নির্ধারিত সময়ে আপনার খতিয়ান সংগ্রহ করতে পারবেন।
তবে যখন আপনি কোনো জমির খারিজ করার আবেদন করবেন। তখন যদি আপনি কোনো উকিলের সহায়তা নেন। তাহলে আপনার জমির খারিজ করার কাজ গুলো অনেক সহজ হবে।
আরো পড়ুনঃ নামজারি খতিয়ান যাচাই করার সহজ উপায়
আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা
গুরুত্বপূর্ণ এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমি আপনাকে আর এস খতিয়ান বের করার নিয়ম সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছে। আশা করি, আজকের এই পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করতে পারলে। আপনি খুব সহজেই আপনার আরএস খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন।
তবে এরপরও যদি আপনার RS খতিয়ান বের করতে কোন ধরনের সমস্যা হয়। তাহলে অবশ্যই নিচে আপনার সমস্যা টি কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।
আর জমি সংক্রান্ত কোনো ধরনের তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে, অবশ্যই নিয়মিত আমাদের ওয়েব সাইটে ভিজিট করবেন। এতক্ষণ থেকে আমাকে সাথে থাকার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।