ইতালি এগ্রিকালচার ভিসা ২০২৩

Italy Agriculture Visa 2023: আমাদের বাংলাদেশ যারা প্রবাস জীবনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে চায়। তাদের মধ্যে অনেক মানুষ ইতালি এগ্রিকালচার ভিসায় যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে আপনিও যদি ইতালি এগ্রিকালচার ভিসায় যেতে চান। তাহলে আপনাকে বেশ কিছু বিষয় জেনে নিতে হবে।

যেমন, কিভাবে ‍ইতালি এগ্রিকালচার ভিসার আবেদন করবেন, কত টাকা খরচ হবে, বেতন কেমন হবে ইত্যাদি।

আর আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমি আপনাকে সেই বিষয় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাই আর দেরী না করে চলুন, সরাসরি মূল আলোচনা তে ফিরে যাওয়া যাক।

ইতালি এগ্রিকালচার ভিসা কাকে বলে?

সহজ কথায় বলতে গেলে আমাদের বাংলাদেশ থেকে যেসব মানুষ ইতালি যায়। আর সেখানে গিয়ে ইতালির কৃষিকাজে নিযুক্ত থাকে। তাকে বলা হয়, ইতালি এগ্রিকালচার ভিসা।

মূলত ইতালি উন্নত একটি দেশ হওয়ার কারণে এই দেশের অধিকাংশ মানুষ শহরে বাস করে। যার কারণে সেই দেশে কৃষিকাজ করার জন্য দক্ষ জনবলের প্রয়োজন হয়।

আর সেই কৃষিকাজ গুলো করার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে জনবল নিয়োগ দেয়। তো উক্ত কাজের জন্য যারা ইতালি যায়। তাদের ভিসা কে বলা হয়, ইতালি কৃষিভিসা।

আরো পড়ুনঃ ইতালিতে যেতে কত টাকা লাগে?

বাংলাদেশিরা কি এগ্রিকালচার ভিসায় ইতালি যেতে পারবে?

অনেকের মনে প্রশ্ন জেগে থাকতে পারে যে, বাংলাদেশিরা কি ইতালি ভিসায় যেতে পারবে কিনা। তো যারা আসলে এমন প্রশ্ন করবেন। তাদের ষ্পষ্ট করে বলবো যে, আপনি অবশ্যই এগ্রিকালচার ভিসায় ইতালি যেতে পারবেন।

তবে একজন বাংলাদেশি হয়ে যদি আপনি ইতালি যেতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনার ইতালি যাওয়ার জন্য নির্ধারিত দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রয়োজন হবে। তাহলেই আপনি আমাদের বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে পারবেন।

ইতালি এগ্রিকালচার ভিসার ধরন কত প্রকার ও কি কি?

বর্তমান সময়ে ইতালিতে মোট ০২ ধরনের এগ্রিকালচার ভিসা পাওয়া যায়। আর আপনি চাইলে এই দুই ধরনের ভিসার মাধ্যমে ইতালি যেতে পারবেন। সেগুলো হলো,

  1. ইতালি সিজনাল এগ্রিকালচার ভিসা এবং 
  2. ইতালি নন সিজনাল এগ্রিকালচার ভিসা।

তবে এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, সিজনাল ও নন-সিজনাল ভিসার মধ্যে পার্থক্য কি। আর যদি আপনার মনে এমন প্রশ্ন জেগে থাকে, তাহলে শুনুন….

আরো পড়ুনঃ ইতালির ভিসা কবে খুলবে? ইতালি স্পন্সর ভিসা ২০২৩ আবেদন

ইতালি সিজনাল ভিসা কাকে বলে?

সাধারন ভাবে যখন আপনি ইতালি তে সিজনাল ভিসায় যাবেন। তখন আপনি নির্দিষ্ট একটা সময় পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করতে পারবেন। আর সেই সময়ের মধ্যে ইতালি তে কাজ করতে পারবেন।

আর সিজনাল ভিসার ক্ষেত্রে মোট সময়কাল হয় প্রায় ০৬ মাস থেকে ১০ মাস পর্যন্ত। আর যখন আপনার সেই সময় শেষ হয়ে যাবে। তখন আপনাকে পুনরায় নিজের দেশে ফিরে আসতে হবে।

ইতালি নন-সিজনাল ভিসা কি?

সিজনাল ভিসার ঠিক উল্টো হলো নন সিজনাল ভিসা। কেননা, এই ভিসার মাধ্যমে আপনি দীর্ঘ সময় ধরে ইতালি তে অবস্থান করতে পারবেন। আর সেই সময়ে ইতালি তে কাজ করতে পারবেন।

কেননা, ইতালির নন সিজনাল ভিসার মেয়াদ সাধারন ০৫ বছর থেকে ০৬ বছর পর্যন্ত হয়। আর এই দীর্ঘ সময় আপনি ইতালি তে কৃষিকাজে নিযুক্ত থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ ইতালি সর্বনিম্ন বেতন কত? | ইতালিতে কোন কাজের বেতন বেশি হয়?

ইতালি এগ্রিকালচার ভিসায় যেতে কি কি লাগবে?

যখন আপনি আমাদের বাংলাদেশ থেকে ইতালি তে এগ্রিকালচার ভিসায় যেতে চাইবেন। তখন আপনার নিকট বেশ কিছু ডকুমেন্টস এর প্রযোজন পড়বে। সেইসাথে আপনার বেশ কিছু ক্ষেত্রে যোগ্যতার দরকার হবে।

আর বর্তমান সময়ে ইতালি যেতে হলে আপনার কি কি ডকুমেন্টস ও যোগ্যতার প্রয়োজন হবে। সে গুলোর তালিকা নিচে প্রদান করা হলো। যেমন,

ইতালি এগ্রিকালচার ভিসার ডকুমেন্টস 

প্রথমত যখন আপনি ইতালি তে এগ্রিকালচার ভিসার জন্য আবেদন করবেন। তখন আপনার আবেদন করার সময় বেশ কিছু ডকুমেন্টস প্রদান করতে হবে। আর সেগুলো হলো,

  1. ইতালি যাওয়ার জন্য আবেদন পত্র এর কপি।
  2. একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে, যার মেয়াদ কমপক্ষে ০৬ মাস হতে হবে।
  3. আপনাকে অবশ্যই বাধ্যতামূলক ভিসা ফি প্রদান করতে হবে।
  4. আপনি যে মেডিকেল টেষ্ট করবেন, তার আসল কপি।
  5. ইতালির কৃষিকাজ গুলো মূলত চুক্তিভিত্তিক হয়। তাই আপনাকে সেই চুক্তিপত্র দেখাতে হবে।
  6. এছাড়াও আপনার সদ্য তোলা রঙ্গিন ছবির দরকার হবে।

তো একজন বাংলাদেশি নাগরিক যখন ইতালি এগ্রিকালচার ভিসার জন্য আবেদন করবে। তখন সেই ব্যক্তির নিকট কি কি কাগজপত্র থাকতে হবে। সেই কাগজপত্র এর তালিকা গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।

আরো পড়ুনঃ ইতালি স্পন্সর ভিসা মানে কি?

ইতালি এগ্রিকালচার ভিসার যোগ্যতা

বর্তমান সময়ে ইতালির এগ্রিকালচার ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর পাশাপাশি যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। আর সেজন্য আপনার আসলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে। সেই যোগ্যতার তালিকা নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন,

  1. আপনাকে অবশ্যই একজন বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  2. আপনার সর্বনিন্ম বয়স ১৮ বছর ও সর্বোচ্চ বয়স ৪০ বছর হতে হবে।
  3. আপনার নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে।
  4. ইতালি তে কাজ করার জন্য চুক্তি করতে হবে।

তো আপনি যদি ইতালি তে এগ্রিকালচার ভিসায় যেতে চান। তাহলে আপনার ক্ষেত্রে আসলে কি কি যোগ্যতা ও ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে। সেগুলো উপরের তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।

আর আপনি যখন উক্ত ভিসার জন্য আবেদন করবেন। তখন অবশ্যই আপনার নিকট এই দক্ষতা ও যোগ্যতা গুলোর প্রয়োজন হবে।

ইতালি এগ্রিকালচার ভিসার খরচ কত টাকা?

এতক্ষনের আলোচনা থেকে আমরা ইতালি এগ্রিকালচার ভিসা সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় জানতে পারলাম। তো এবার আমাদের আরো একটি বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে। সেটি হলো, ইতালি এগ্রিকালচার ভিসার খরচ কত টাকা হবে।

তো বর্তমান সময়ে আপনি ইতালি তে এগ্রিকালচার ও নন-এগ্রিকালচার ভিসার মাধ্যমে যেতে পারবেন। আর এই ভিসার ধরনের উপর নির্ভর করে আপনার খরচের পরিমান নির্ভর করবে।

যেমন, আপনি যদি আমাদের বাংলাদেশ থেকে সিজনাল ভিসার মাধ্যমে ইতালি যান। তাহলে আপনার মোট খরচের পরিমান হবে প্রায় ০৩ লাখ থেকে ০৪ লাখ টাকা।

আবার আপনি যদি নন সিজনাল ভিসার মাধ্যমে ইতালি যান। তাহলে আপনার মোট খরচের পরিমান পড়বে ১০ লাখ থেকে ১১ লাখ টাকা।

কিন্তুু যদি আপনি বেসরকারি এজেন্সি কিংবা দালালের মাধ্যমে ইতালি যেতে চান। তাহলে আপনার এর থেকেও আরো বেশি টাকা খরচ করার প্রয়োজন পড়বে।

আরো পড়ুনঃ ইতালি গ্রিন কার্ড পাওয়ার উপায় কি?

কিভাবে ইতালি এগ্রিকালচার ভিসার আবেদন করতে হয়?

যখন আমাদের বাংলাদেশ থেকে কোনো ব্যক্তি ইতালি এগ্রিকালচার ভিসার জন্য আবেদন করবে। তখন তাকে অবশ্যই সঠিক নিয়ম মেনে আবেদন করতে হবে। সে কারণে ইতালি এগ্রিকালচার ভিসার আবেদন পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে আপনার সঠিক ধারনা রাখা জরুরী।

তো প্রথমত আপনাকে ইতালির দূতাবাস বা কনস্যুলেটের ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র ডাউনলোড করতে হবে। তারপর সেই আবেদনপত্র এর মধ্যে যে প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো প্রদান করার দরকার হবে। আপনাকে সেই তথ্য গুলো নির্ভুল ভাবে প্রদান করতে হবে। যেমন,

  1. আবেদনকারীর নাম
  2. ঠিকানা
  3. জন্ম তারিখ
  4. শিক্ষাগত যোগ্যতা
  5. কাজের অভিজ্ঞতা
  6. ইতালির ভাষা জানার স্তর ইত্যাদি

এর পাশাপাশি আপনার যেসকল ডকুমেন্টস থাকবে, সেগুলো উক্ত আবেদপত্রের সাথে যুক্ত করে জমা দিতে হবে।

এর পরবর্তী ধাপে আবেদনপত্র পর্যালোচনা করার পর, দূতাবাস বা কনস্যুলেট থেকে আপনার  সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য ডাকবে। আর সেই সাক্ষাৎকারে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা, ইতালির ভাষা জানার স্তর ইত্যাদি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে।

তো উক্ত সাক্ষাৎকারের পর, যদি আপনি তাদের কাছে যোগ্য ব্যক্তি বলে বিবেচিত হতে পারেন। তাহলে আপনাকে সিলক্টে করা হবে। অন্যথায় যদি আপনি তাদের কাছে অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়ে থাকেন। তাহলে আপনার আবেদন গ্রহনযোগ্য হবেনা।

আরো পড়ুনঃ ইতালির ভিসা আবেদন ফরম

আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা

যারা আমাদের বাংলাদেশ থেকে ইতালি এগ্রিকালচার ভিসায় যেতে চান। তাদের জন্য আজকের লেখাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কেননা, আজকে আমি ইতালি এগ্রিকালচার ভিসার যাবতীয় তথ্য গুলোকে সহজ ভাষায় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

তো এরপরও যদি আপনার মনে কোনো ধরনের প্রশ্ন থাকে। তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। আর ধন্যবাদ, এতক্ষন ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *