অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন করার নিয়ম ২০২৪

Australia Work Visa Application 2024: অস্ট্রেলিয়ার মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, উন্নত জীবনযাত্রা এবং আকর্ষণীয় কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেককেই আকৃষ্ট করে। আর আপনিও যদি অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করার স্বপ্ন দেখেন, তাহলে আপনাকে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

চিন্তা করছেন, ভিসা পাওয়া কি খুব কঠিন? – তাহলে ভাবনাটা ভুল! কারণ,নিয়ম কানুন মেনে চললে আপনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা অসম্ভব নয়। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাকে অস্ট্রেলিয়ার কাজের ভিসা আবেদন করার নিয়ম গুলোকে স্টেপ-বাই-স্টেপ গাইডলাইন দিয়ে বুঝিয়ে বলার চেস্টা করবো।

Table of Contents

অস্ট্রেলিয়া যেতে কি কি লাগে? | অস্ট্রেলিয়া লেবার ভিসা

ক্যাঙ্গারুর দেশ অস্ট্রেলিয়া এটা তো আমরা সবাই জানি। তবে অস্ট্রেলিয়া শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই নয়, বরং উন্নত জীবনযাত্রা, কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং স্থিতিশীল অর্থনীতির জন্যও এটি একটি আকর্ষণীয় দেশ। আর যারা অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসার আবেদন করতে চান, তাদের নিকট কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র থাকতে হবে। 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকাঃ

  • বৈধ পাসপোর্ট: আপনার পাসপোর্ট অবশ্যই আবেদনের তারিখের পর কমপক্ষে ৬ মাসের জন্য বৈধ থাকতে হবে।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স: পুলিশ কর্তৃপক্ষ থেকে আপনার অপরাধমুক্ত সনদপত্র।
  • ব্যাংক একাউন্ট: আপনার আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রমাণের জন্য সর্বশেষ ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
  • ইংরেজি ভাষার দক্ষতা: IELTS, TOEFL, PTE এর মতো পরীক্ষায় উত্তীর্ণতার সনদপত্র।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা: সনদপত্র, ডিগ্রি এবং সার্টিফিকেট (ইংরেজিতে অনুবাদ করা)।
  • কাজের অভিজ্ঞতা: পূর্ববর্তী চাকরির অভিজ্ঞতা প্রমাণের জন্য সার্টিফিকেট, NOC, এবং বেতন স্লিপ (যদি থাকে)।
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট: অস্ট্রেলিয়ার সরকার কর্তৃক অনুমোদিত চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদপত্র।
  • অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাসের সাক্ষাৎকার: সকল কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার পর দূতাবাস কর্তৃপক্ষের সাথে মুখোমুখি সাক্ষাৎকার।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপসঃ

  • আপনার সকল কাগজপত্র ইংরেজিতে অনুবাদ করে নিবেন এবং নোটারি পাবলিক কর্তৃক সত্যায়িত করবেন।
  • ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার সময়কাল অনেক দীর্ঘ হতে পারে, তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিবেন।
  • অস্ট্রেলিয়ান সরকারের ওয়েবসাইটে (https://immi.homeaffairs.gov.au/visas/getting-a-visa/visa-listing) ভিসার বিষয়ে সকল আপডেট তথ্য জানতে পারবেন।
  • অভিজ্ঞ ভিসা কনসালটেন্টের সাহায্য নিলে আপনার আবেদন প্রক্রিয়া সহজ হবে।

আরো পড়ুনঃ দুবাই ভিজিট ভিসায় যেতে কি কি লাগে বিস্তারিত দেখে নিন

বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা (আপডেট)

অস্ট্রেলিয়ায় কাজের সুযোগের লোভনীয় প্রলোভনে অনেকেই ভিসার প্রতারণার শিকার হন। সম্প্রতি, বাংলাদেশ হাইকমিশন অস্ট্রেলিয়ায় কর্মসংস্থান ভিসা প্রতারণা সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে। কিছু অসাধু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অর্থের বিনিময়ে ভিসা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশিদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

তারা আপনাকে শর্ত পূরণ ছাড়াই অর্থের বিনিময়ে ভিসা এবং অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চ বেতনের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিবে। কিন্তুু আপনি যদি তাদের ফাঁদে পা দেন তাহলে আপনার অর্থ হারানোর ঝুঁকি সহো আইনি জটিলতায় পড়ার সম্ভাবনা থাকবে। তাই আপনাকে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনে অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন বিভাগের ওয়েবসাইট এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ওয়েবসাইট থেকে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ ইতালির ভিসা কবে খুলবে? ইতালি স্পন্সর ভিসা আবেদন

অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন করার নিয়ম

আমরা অনেকেই মনে করি বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা পাওয়া খুব কঠিন। তবে আপনি যদি সকল নিয়ম সঠিক ভাবে ফলো করে কাজ করতে পারেন তাহলে আপনার স্বপ্ন পূরণের সম্ভাবনা কয়েকগুন বেড়ে যাবে। তাই এবার আমি আপনাকে একটি গাইডলাইন শেয়ার করবো। যেগুলো অনুসরন করে আপনাকে অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন করতে হবে।

প্রথম ধাপ: ভিসা ধরণ নির্বাচন

আমাদের কাজের অবস্থার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরণের অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা পাওয়া যায়। যেমন,

  • দক্ষ শ্রমিক ভিসা: যারা অস্ট্রেলিয়ার দক্ষ শ্রমিক তালিকাভুক্ত পেশায় কাজ করতে চান।
  • স্পন্সরশিপ ভিসা: যারা অস্ট্রেলিয়ান নিয়োগকর্তার স্পন্সরশিপ পেয়েছেন।
  • সাধারন শ্রমিক ভিসা: যারা অস্ট্রেলিয়াতে সাধারন শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে চান ।

তো আপনার জন্য আসলে কোন ধরনের ভিসা উপযুক্ত হবে তা আপনার কাজের ধরনের উপর নির্ভর করবে। তবে আপনি উপরোক্ত অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসার মাধ্যমে আপনার স্বপ্নের দেশে যেতে পারবেন।

দ্বিতীয় ধাপ: অনলাইনে আবেদন

যখন আপনি আপনার পছন্দের ভিসা ধরণ নির্বাচন করবেন তারপর আপনাকে ভিসার আবেদন করতে হবে। আর আপনি চাইলে অনলাইন থেকে অস্ট্রেলিয়া জব ভিসা আবেদন করতে পারবেন। সেজন্য আপনাকে অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন ও কিয়ার গেটস কমিশন (Department of Home Affairs) এর ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করতে হবে।

অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য কিভাবে আবেদন করব?

অনলাইন থেকে অস্ট্রেলিয়া ভিসা এপ্লিকেশন করা খুব সহজ। কারণ আপনি অনলাইনে homeaffairs.gov.au ওয়েবসাইট থেকে অস্ট্রেলিয়া ভিসা ফরম সংগ্রহ করে আবেদন করতে পারবেন।

তৃতীয় ধাপ: আবেদন ফরম পূরণ

অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন ফরম পূরণ করার সময় আপনার সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। কারণ আপনি যদি ভুল তথ্য প্রদান করেন তাহলে আপনার ভিসা আবেদন বাতিল বলে বিবেচিত হবে। আর অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করার সময় বিভিন্ন তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। যেমন,

  • ব্যক্তিগত ও পেশাদার তথ্য: আপনার নাম, জন্ম তারিখ, যোগাযোগের তথ্য, শিক্ষাগত যোগ্যতা, কর্ম অভিজ্ঞতা ইত্যাদি।
  • পাসপোর্ট তথ্য: আপনার পাসপোর্টের নম্বর, ইস্যু এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ।
  • অন্যান্য তথ্য: আপনার ইংরেজি ভাষার দক্ষতা, অস্ট্রেলিয়ায় থাকার পরিকল্পনা ইত্যাদি।

চতুর্থ ধাপ: আবেদন ফি প্রদান

ভিসা আবেদন করার জন্য আপনাকে অস্ট্রেলিয়া সরকারের নির্ধারিত আবেদন ফি প্রদান করতে হবে। আর যখন আপনি আবেদন ফি দিবেন তখন অবশ্যই রশিদ অথবা ফি প্রদানের প্রমাণ রাখবেন। কারণ, এগুলো পরবর্তী সময়ে আবার প্রয়োজন হবে।

পঞ্চম ধাপ: সাপোর্টিং ডকুমেন্টস সংগ্রহ করুন

ভিসা আবেদন করার সময় আপনি যে তথ্য গুলো প্রদান করবেন সেই তথ্য অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো আপনার কাছে সংগ্রহ করে রাখবেন। যেমন,

  • শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র: আপনার শিক্ষাগত ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা সার্টিফিকেটের কপি।
  • স্বাস্থ্য বিমা: অস্ট্রেলিয়ায় আপনার থাকাকালীন সময়ে বৈধ স্বাস্থ্য বিমা থাকার প্রমাণ।
  • চারিত্রিক সনদপত্র: আপনার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (যদি প্রয়োজন হয়)।

ষষ্ঠ ধাপ: অভিযোগ করুন

আবেদন জমা দেওয়ার পরে আপনার অবস্থান সংশ্লিষ্ট অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনের কাছে যাচাইকরণের জন্য অভিযোগ করতে হবে।

🔥হিডেন টিপসঃ নিজে নিজে অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন করার সময় আপনার কাছে খুব কঠিন মনে হতে পারে। তাই যদি আপনি নিজে আবেদন করতে অস্বস্তিবোধ করেন, তাহলে অভিবাসন অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সাহায্য নেওয়ার চেস্টা করবেন। কারণ, তারা আপনার আবেদন প্রস্তুত করতে এবং সমস্ত প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে সাহায্য করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ মালয়েশিয়া ওয়ার্কার ভিসা চেক করার নিয়ম 

অষ্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা কত টাকা খরচ হবে?

অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা খরচঃ আপনারা যারা অস্ট্রেলিয়া তে কাজের ভিসায় যেতে চান। তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় টি হল, এই ভিসায় অস্ট্রেলিয়া যেতে হলে আপনাকে মোট কত টাকা খরচ করতে হবে। যে টাকার পরিমান সম্পর্কে আপনার অবশ্যই স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।

আর আপনার কাজের ভিসায় অস্ট্রেলিয়া যেতে আসলে মোট কত টাকা খরচ হবে। সেটি নির্ভর করবে আপনি আসলে কোন ধরনের কাজের ভিসার (Work Visa) এর জন্য আবেদন করছেন তার উপর। কেননা উপরে যে ওয়েবসাইটের লিংক শেয়ার করা হয়েছে। সেই ওয়েবসাইট থেকে আপনি জানতে পারবেন যে, অস্ট্রেলিয়া ভিন্ন কাজের ভিসার জন্য ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণে অর্থ ব্যয় করার প্রয়োজন হয়।

কিন্তু আমাদের বাংলাদেশ থেকে যে সকল মানুষ নিজে থেকে ভিসার যাবতীয় কাজ করবেন তাদের প্রায় ৫-৬ লাখ টাকা খরচ হবে। তবে যারা বিভিন্ন ধরনের এজেন্সির মাধ্যমে কিংবা দালালের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া যাবেন তাদের সব মিলিয়ে প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার মতো খরচ হবে।

অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন ফরম | অস্ট্রেলিয়া ভিসা ফরম

অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন ফরম

অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন ফরম

অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন ফরম

অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন ফরম

📁অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন ফরম পিডিএফ লিংকঃ এখানে ক্লিক করুন।

অস্ট্রেলিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি?

বর্তমান সময়ে আমাদের বাংলাদেশিরা অষ্ট্রেলিয়ায় গিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবে। তবে তার আগে আপনাকে জানতে হবে যে, অষ্ট্রেলিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি আছেকেননা, আপনি যদি আগে থেকেই সেই চাহিদা সম্পন্ন কাজে নিজের দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। তাহলে আপনার অষ্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা পেতে সুবিধা হবে। আর বর্তমান সময়ে অষ্ট্রেলিয়ার যেসব কাজের চাহিদা আছে। সেই কাজের তালিকা নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন,

  1. স্বাস্থ্যসেবার কাজ (ডাক্তার, নার্স, ফার্মাসিস্ট, এবং থেরাপিস্ট)
  2. শিক্ষাসেবার কাজ (শিক্ষক, প্রশাসক, এবং গবেষক)
  3. প্রকৌশলীর কাজ (সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, এবং ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার)
  4. তথ্যপ্রযুক্তির কাজ (সফটওয়্যার ডেভেলপার, নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার, এবং সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটর)
  5. ব্যবসায়িক কাজ (মার্কেটার, অ্যাকাউন্টেন্ট, সেলস)
  6. পর্যটন ভিত্তিক কাজ (হোটেল ম্যানেজার, ট্যুর গাইড, এবং রেস্তোরাঁ ম্যানেজার)
  7. কৃষিকাজ (কৃষক, পশুপালক)
  8. নির্মাণ কাজ (নির্মাণ শ্রমিক, ইলেকট্রিশিয়ান, এবং প্লাম্বার)
  9. পরিবহন এর কাজ (ড্রাইভার, বিমানচালক এবং নাবিক)

উপরের তালিকায় আপনি যে সকল কাজের নাম দেখতে পাচ্ছেন। অষ্ট্রেলিয়া তে এই কাজ গুলোর যথেষ্ট চাহিদা আছে। আর আপনি যদি আগে থেকেই এই কাজ গুলোর যে কোনো এক বা একাধিক কাজে নিজের দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। তাহলে আপনার ক্ষেত্রে অষ্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা পেতে সুবিধা হবে।

আরো পড়ুনঃ দুবাই মাল্টিপল ভিসা খরচ | দুবাই মাল্টিপল ভিসা ৫ ইয়ার্স

অস্ট্রেলিয়া কাজের বেতন কত?

যেহেতু আপনি কাজের ভিসায় অস্ট্রেলিয়া যাবেন সেহেতু আপনাকে কাজের বেতন সম্পর্কে ধারণা দেওয়া আমার নৈতিক দায়িত্ব। আর আপনি জানলে অবাক হয়ে যাবেন কারণ, অন্যান্য দেশের তুলনায় অস্ট্রেলিয়া তে কাজ করলে। আপনি অনেক বেশি বেতন পাওয়ার সুযোগ পাবেন। যদিওবা অস্ট্রেলিয়া তে কম বেতন এবং বেশি বেতন এই দুই ধরনেরই কাজ পাওয়া যায়।

তবে আপনি যদি স্বাভাবিক ভাবে ভালো কোন কোম্পানি তে চাকরি করতে পারেন। তাহলে আপনি বাংলাদেশী টাকায় ১ লক্ষ থেকে শুরু করে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন পাবেন। কিন্তু সবাই এই পরিমাণ বেতন পাবেন না। কেননা আপনার আসলে বেতন হিসেবে কত টাকা প্রদান করা হবে সেটা নির্ভর করবে আপনার কাজের উপর, আর আপনার দক্ষতার উপর।

কারণ আমাদের বাংলাদেশের মধ্যে যেমন দক্ষতা না থাকলে কাজ পাওয়া যায় না। ঠিক তেমনি ভাবে অস্ট্রেলিয়া তে আপনি একই চিত্র লক্ষ্য করতে পারবেন। তবে এটা আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি যে, অস্ট্রেলিয়ায় থাকা মানুষদের জীবন যাত্রার মান অনেক উন্নত। তাই আমাদের এশিয়া মহাদেশ থেকে যে সকল মানুষ অস্ট্রেলিয়া তে কাজ করতে যায়। তাদের খুব ভালো বেতন দেওয়া হয়।

আরো পড়ুনঃ ইতালিতে যেতে কত টাকা লাগে?

অস্ট্রেলিয়া কৃষি ভিসা বেতন কত?

আমাদের বাংলাদেশ থেকে অধিকাংশ মানুষ অষ্ট্রেলিয়ায় কৃষি কাজ করার জন্য যেতে চায়। আর সে কারণে তাদের মনে প্রশ্ন জাগে যে, অষ্ট্রেলিয়া কৃষি কাজের বেতন কত। তো অষ্ট্রেলিয়াতে আপনার কৃষি কাজের বেতন কত হবে তার সম্পূর্ণ বিষয়টা নির্ভর করবে আপনার কাজ করার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উপর।

কেননা, যদি আপনার কৃষি কাজ করার পর্যাপ্ত দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি অষ্ট্রেলিয়াতে ৫০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন সুবিধা পাবেন। আর যখন আপনি অষ্ট্রেলিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে কৃষিকাজে নিযুক্ত থাকবেন তারপর ধীরে ধীরে আপনার বেতন বৃদ্ধি পাবে।সেক্ষেত্রে দীর্ঘদিন অষ্ট্রেলিয়া তে কৃষিকাজ করার ফলে। আপনার কৃষি কাজের বেতন সর্বোচ্চ ০২ লাখ থেকে ০৩ লাখ (বাংলাদেশি টাকা) প্রদান করা হবে।

অস্ট্রেলিয়া গিয়ে বাংলাদেশিরা কি কি কাজ করতে পারেন?

আমাদের বাংলাদেশ থেকে যে সকল বাঙালিরা কাজের জন্য অস্ট্রেলিয়া যায়। তাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষ আসলে কোন ধরনের কাজ করে সেটা যদি আপনার আগে থেকে জানা থাকে। তাহলে আপনার জন্য অনেক হেল্পফুল হবে। তাই নিচের তালিকায় আমি সেই সকল কাজ গুলোর নাম উল্লেখ করেছি। যে কাজ গুলো অধিকাংশ সময় আমাদের বাংলাদেশের বাঙালিরা করে। যেমন,

  1. সিকিউরিটি গার্ড (security guard),
  2. কনস্ট্রাকশন সাইট (construction site),
  3. আইটি সেক্টর (IT sector),
  4. কোম্পানি সার্ভিস জব (Company Service Job),
  5. কৃষি কাজ (agricultural work),
  6. স্বনামধন্য রেস্টুরেন্ট এর কাজ (reputed restaurants),
  7. ক্লিনিং করার কাজ (cleaning work),
  8. ইলেকট্রনিশিয়ান এর কাজ (electrician),

উপরের তালিকায় শুধুমাত্র কয়েকটি কাজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এর বাইরেও আমাদের বাংলাদেশিরা বিভিন্ন ধরনের কাজ করে। আর আপনি যাতে করে এই কাজ সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন। সে কারণে উপরের এই তালিকা টি প্রকাশ করা হয়েছে।

আরো পড়ুনঃ দুবাই ভিজিট ভিসা ফর বাংলাদেশী

আপনার জন্য কিছু সর্তকতা

সচরাচর আমরা যখন বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করি। তখন অধিকাংশ মানুষ প্রথমেই একটা ভুল কাজ করে। আর সেটি হল, আমরা অনেকেই দালালের মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করার চেষ্টা করি, যা বিরাট একটা ভুল। কেননা আপনি যখন দালালের মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করার চেষ্টা করবেন।

তখন আপনার অনেক বেশি টাকা ব্যয় হবে এবং দ্বিতীয়ত আপনার বিদেশে যাওয়ার পরে চাকরি সংক্রান্ত সংশয় থাকবে। তাই সর্বদা লিগ্যাল ভাবে ভিসা করার চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনার অনেক কম টাকা খরচ হবে। এর পাশাপাশি আপনার অষ্ট্রেলিয়া তে চাকরি নিয়েও কোনো ধরনের সংশয় থাকবে না।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে?

FAQ – Australia Work Visa From Bangladesh

Q:অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য কিভাবে আবেদন করব?

A: বিভিন্ন ধরনের এজেন্সির মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন করতে পারবেন। আর আপনি চাইলে নিজেই অনলাইন থেকে অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন করতে পারবেন। সেজন্য আপনাকে homeaffairs.gov.au ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে।

Q:অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার উপায় কি?

A: বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের ভিসায় অস্ট্রেলিয়া যেতে পারবেন। যেমন, 

Q:অস্ট্রেলিয়া কৃষি কাজের বেতন কত?

A: বেতন আপনার কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করবে।তবে স্বাভাবিক ভাবে আপনি অস্ট্রেলিয়াতে ৫০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা বেতন সুবিধা পাবেন। আর কাজের দক্ষতা বাড়লে আরো বেশি বেতন পবেন।

Q:অস্ট্রেলিয়া ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইট লিংক

A:অস্ট্রেলিয়ান ইমিগ্রেশনের অফিসিয়াল ওয়েব সাইট লিংক – https://immi.homeaffairs.gov.au/

অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন ও কিছুকথা 

প্রিয় পাঠক, আপনারা যারা অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন করতে চান। তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল টি অনেক বেশি হেল্পফুল হবে। কারণ অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসার আবেদন করার জন্য যে সকল নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। সে গুলো কে আজকে ধাপে ধাপে উল্লেখ করা হয়েছে। আশা করি আপনি আজকের আলোচিত আলোচনা গুলো সম্পর্কে ষ্পষ্ট ধারনা পেয়ে গেছেন।

আর আপনি যদি এই ধরনের পাসপোর্ট কিংবা ভিসা রিলেটেড আরও অজানা তথ্য জানতে চান। তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করবেন। কেননা আমরা প্রতিনিয়ত এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করি।

এর পাশাপাশি আমাদের ওয়েবসাইটে পাবলিশ করা আর্টিকেল গুলো সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত কিংবা অভিযোগ থাকে। তাহলে অবশ্যই তা কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। ধন্যবাদ, এতক্ষণ ধরে আমার লেখা আর্টিকেল টি পড়ার জন্য। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন