বর্তমানে জ্বালানি তেলের দাম কত ২০২৩?
What is the current price of fuel oil?: আপনারা সবাই জানবেন যে, জ্বালানি তেলে দাম পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এটা শুধুমাত্র আমাদের বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই নয় বরং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে এমন মূল্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে।
আর যেহুতু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে। সেহুতু আমাদের বাংলাদেশের মধ্যেও দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।
মূলত সে কারণে অনেকেই জানতে চায় যে, বর্তমানে জ্বালানি তেলের দাম কত। আর আপনি যেন এই জ্বালানি তেলে সঠিক দাম জানতে পারেন। সে কারণে আজকের এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে। তো চলুন এবার তাহলে সেই তেলে দাম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
বর্তমানে জ্বালানি তেলের দাম কত?
বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের মধ্যে যেভাবে দ্রব্যের দাম বাড়া কমা চলছে। যার কারণে আমরা কোনো কিছু কিনতে গেলে দ্বিধায় পড়ে যাই। কেননা, কোনো দোকানদার যদি হুট করে বেশি দাম চায়। তাহলে আমরা বুঝতে পারিনা যে, দোকানদার কি আসল দাম চাইলো নাকি বেশি দাম চাইলো।
আর জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রেও সেই একই বিষয় লক্ষ্য করা যায়। তো সেই সময় যেন আপনি বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে না পড়েন। সে কারণে এখন আপনি আপনাকে বর্তমানে জ্বালানি তেলে দাম এর তালিকা নিচে প্রদান করলাম। যেমন,
What is the current price of fuel oil? | ||
সিরিয়াল | জ্বালানি তেলের নাম | জ্বালানি তেলের দাম |
০১ | ডিজেল | প্রতি লিটার ১০৯ টাকা। |
০২ | কেরোসিন | প্রতি লিটার ১০৯ টাকা। |
০৩ | অকটেন | প্রতি লিটার ১৩০ টাকা। |
০৪ | পেট্রোল | প্রতি লিটার ১২৫ টাকা। |
বিঃদ্রঃ উপরে উল্লেখিত দামের তালিকাটি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন থেকে সংগৃহীত |
আরো পড়ুনঃ মিল্ক শেক এর দাম কত টাকা ২০২৩?
কোন দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি তেলের মজুদ আসে?
উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম বর্তমানে জ্বালানি তেলের দাম সম্পর্কে। তো এবার অনেকের মনে প্রশ্ন জেগে থাকতে পারে যে, কোন দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি তেলের মজুদ আসে।
আর বর্তমান সময়ে পৃথিবীর মধ্যে যেসব দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি তেলের মজুদ পাওয়া যায়। সেই দেশ গুলোর নাম নিচের তালিকায় উল্লেখ করা হলো।
- নাইজেরিয়া
- লিবিয়া
- রাশিয়া
- সংযুক্ত আরব আমিরাত
- কুয়েত
- ইরাক
- ইরান
- ক্যানাডা
উপরের তালিকায় আপনি যে সকল দেশের নাম দেখতে পাচ্ছেন। বর্তমান সময়ে সেই দেশ গুলো থেকে সবচেয়ে বেশি তেলের মজুদ আসে। তবে এই দেশ গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তেলের মজুদ আসে নাইজেরিয়া ও লিবিয়া থেকে।
তো বর্তমান সময়ে নাইজেরিয়া থেকে গোটা বিশ্বের মোট তেলের মজুদের প্রায় দুই ভাগেরও বেশি তেল আসে। কেননা, নাইজেরিয়ার মোট তেল মজুদের পরিমান প্রায় ৩৬.৯৭ বিলিয়ন ব্যারেল। এছাড়াও লিবিয়া থেকে মোট তেল মজুদের পরিমান প্রায় ৪৮.৩৬ বিলিয়ন ব্যারেল।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করার নতুন নিয়ম
আমেরিকার তেলের উৎস কি?
বর্তমান সময়ে বিশ্বের উন্নত দেশ গুলোর মধ্যে আমেরিকা হলো অন্যতম। তবে আপনি কি জানেন, আমেরিকার তেলের উৎস কি? -যদি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে শুনুন……
আমেরিকার মতো উন্নত একটি দেশের প্রায় ০৪ টি স্থানের মধ্যে তেলের মজুদ আছে। আর সেই স্থান গুলো হলো, টেক্সাসের ফ্রিপোর্ট ও উইনির কাছে, আর লুইজিয়ানায় লেক চার্লস আর ব্যাটন রুজে। মূলত এই স্থান গুলোতে আমেরিকার তেলের উৎস আছে। যেখানে প্রায় ৬৫ কোটি ব্যারেল তেল মজুদ রয়েছে।
আমেরিকা কি সৌদি আরবের চেয়ে বেশি তেলের মালিক?
আমরা সকলেই জানি যে, আমেরিকা ও সৌদি আরব এই দুটো দেশের মধ্যে তেলের উৎস আছে। তাই অনেকের মনে একটি প্রশ্ন জেগে থাকবে। সেটি হলো, আমেরিকা কি সৌদি আরবের চেয়ে বেশি তেলের মালিক কিনা।
তো যদি আপনি তেল মজুদের পরিসংখ্যান এর দিকে লক্ষ্য করেন। তাহলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে, আমেরিকা কি সৌদি আরবের চেয়ে বেশি তেলের মালিক কিনা। আর সেই পরিসংখ্যান টি নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন,
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২৬৪ বিলিয়ন ব্যারেল
- রাশিয়া ২৫৬ বিলিয়ন ব্যারেল
- সৌদি আরব ২১২ বিলিয়ন ব্যারেল
- কানাডা ১৬৭ বিলিয়ন ব্যারেল
- ইরান ১৪৩ বিলিয়ন ব্যারেল
এখন আপনি যদি উপরে উল্লেখিত পরিসংখ্যান এর দিকে তাকান। তাহলে এটা ষ্পষ্ট ভাবে দেখা যায় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সৌদি আরবের তুলনায় বেশি তেলের মালিক। কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট তেলের মজুদ হলো ২৬৪ বিলিয়ন ব্যারেল আর সৌদি আরবের ১৪৩ বিলিয়ন ব্যারেল।
আরো পড়ুনঃ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য তালিকা ২০২৩ | আজকের বাজার মূল্য তালিকা
সৌদি আরবের এত তেল কেন?
আমরা সবাই জানি যে, সৌদি আরবের মধ্যে ২৬৭ বিলিয়ন বা ২৬ হাজার ৭০০ কোটি ব্যারেল। তো সেই কারণে অনেকের মনে প্রশ্ন জেগে থাকে যে, সৌদি আরবের এত তেল কেন। তো বর্তমান সময়ে সৌদি আরবের মধ্যে তেল বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ হলো, ভূ-তাত্ত্বিক অবস্থঅন।
কেননা, সৌদি আরব হলো মধ্যেপ্রাচ্যের একটি দেশ। যেখানে ভূমির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে সেই দেশের টেথিস মহাসাগর এর পরিমান হ্রাস পেয়েছে। ধারনা করা হয় যে, এই মহাসাগর টি প্রায় ১০০ মিলিয়ন বছর আগেই বন্ধ হয়ে গেছিলো। আর দীর্ঘদিন এভাবে থাকার কারণে সমুদ্রের তলদেশে বিপুল পরিমান জৈব পদার্থ জমা হয়ে গিয়েছিলো।
তারপর সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে সেই জৈব পদার্থ গুলো ক্রমাগত ভাবে জীবাশ্ম জ্বালানীর আকার নেওয়া শুরু করেছিলো। আর সেগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো, তেল। তবে সৌদি আরব এর মধ্যে শুধু তেল আছে বিষয়টি এমন নয়। বরং এই দেশের মধ্যে রয়েছে বিপুল পরিমান গ্যাসের উৎস। কারণ, তেল ও গ্যাস একইসাথে গঠিত হয়।
আরো পড়ুনঃ ভেলোর হোটেল ভাড়া সম্পর্কে জেনে নিন
বিশ্বের বৃহত্তম পেট্রোলিয়াম উৎপাদনকারী দেশ কোনটি?
আপনি কি জানেন, বিশ্বের বৃহত্তম পেট্রোলিয়াম উৎপাদনকারী দেশের নাম কি? -যদি না জেনে থাকেন তাহলে শুনুন.. বর্তমান সময়ে বিশ্বের বৃহত্তম পেট্রোলিয়াম উৎপাদনকারী দেশের নাম হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কেননা, এই দেশের মধ্যে থেকে প্রতিদিন গড়ে ২.২১ কোটি ব্যারেল তেল উৎপাদন করা হয়।
আর যদি আমরা পেট্রোলিয়াম উৎপাদনকারী দেশ গুলোর সাথে তুলনা করি। তাহলে দেখতে পারবো যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে পরিমান পেট্রোলিয়াম উৎপাদন করা হয়। তা গোটা বিশ্বের মোট উৎপাদনের প্রায় ২০ শতাংশ।
এছাড়াও সৌদি আরব গোটা বিশ্বের মধ্যে পেট্রোলিয়াম উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। যদিওবা ২০২২ সালে সৌদি আরব ছিলো বৃহত্তম পেট্রোলিয়াম উৎপাদনকারী দেশ। তবে ২০২৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই অবস্থান দখল করে নিয়েছে। এছাড়াও তেল উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে রাশিয়ার অবস্থান রয়েছে তৃতীয় তম।
আরো পড়ুনঃ ২২ ক্যারেট স্বর্ণের বর্তমান দাম কত? | ২২ ক্যারেট স্বর্ণ চেনার উপায়
গ্যাস ও তেলের মধ্যে পার্থক্য কি?
উপরের আলোচনা থেকে আমরা একটা বিষয় সম্পর্কে জেনেছি। সেটি হলো, গ্যাস ও তেল একই স্থানে একইসাথে গঠন হয়ে থাকে। কিন্তুু তারপর এই দুটো প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে রয়েছে যথেষ্ট পার্থক্য। আর আমাদের সেই গ্যাস ও তেলের মধ্যে থাকা পার্থক্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া দরকার।
তো স্বাভাবিক ভাবে দেখলে গ্যাস ও তেল একইভাবে গঠিত হয়ে থাকে। কেননা, এই দুটো প্রাকৃতিক সম্পদ গাছপালা ও জীব জন্তুর দেহাবশেষ থেকে তৈরি হয়। তবে গ্যাস মাটির নিচের যে অবস্থানে থাকে। তার থেকে আরো নিচুতে তেলের সন্ধান পাওয়া যায়।
এছাড়াও আমরা জানি যে, তেলের ঘনত্ব গ্যাসের তুলনায় অনেক বেশি। কারণ, তেলের ঘনত্বের পরিমান প্রায় ৭৮৫ কিলোগ্রাম প্রতি ঘনমিটার। অপরদিকে গ্যাসের ঘনত্ব প্রায় ১.২ কিলোগ্রাম প্রতি ঘনমিটার। আর তেল সাধারণত গ্যাসের চেয়ে বেশি আঠালো হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ খালি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম কত ২০২৩
আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা
প্রিয় পাঠক, বর্তমানে জ্বালানি তেলের দাম কত সেটি আজকে উল্লেখ করা হয়েছে। তো আশা করি, এই আর্টিকেল টি আপনার জন্য অনেক হেল্পফুল হবে। আর যদি আপনি এমন ধরনের হেল্পফুল তথ্য গুলো বিনামূল্যে জানতে চান। তাহলে নিয়মিত Learning Boss ওয়েবসাইটে ভিজিট করবেন। ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।