জমি ক্রয় করার নিয়ম
Rules for purchase of land: যখন আপনি নির্দিষ্ট কোন জমি ক্রয় করবেন কিংবা আপনার নিজস্ব কোন জমির বিক্রয় করবেন। তখন অবশ্যই আপনাকে বেশ কিছু বিষয়ের দিকে বিশেষ ভাবে নজর দিতে হবে।
তবে প্রাথমিক ভাবে যখন আপনি জমি ক্রয় করবেন। তখন আপনাকে যে সকল বিষয় গুলোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সে গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন,
- প্রথমত আপনাকে রেজিস্ট্রি অফিস থেকে মূল দলিল সংগ্রহ করতে হবে।
- কিন্তু মূল দলিল সংগ্রহ করতে বিলম্ব হলে, আপনাকে উক্ত দলিলের সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করতে হবে।
- এছাড়াও আপনাকে সহকারী ভূমি কমিশনার এর অফিস থেকে দলিলের সত্যায়িত কপি নিতে হবে।
- সবশেষে আপনাকে সেই সত্যায়িত কপি সহ নির্ধারিত ফরমের মধ্যে নামজারি করানোর জন্য আবেদন করতে হবে।
স্বাভাবিক ভাবে যখন আপনি অন্য কোন ব্যক্তির জমি ক্রয় করতে যাবেন। তখন আপনাকে যে সকল বিষয় গুলোর দিকে বিশেষ ভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। সেই বিষয় গুলো উপরে উল্লেখ করা হলো। তবে এর বাইরেও আরো অনেক কিছু রয়েছে, যে গুলো নিয়ে এখন আমি বিস্তারিত আলোচনা করব।
আরো পড়ুনঃ জমির দাগ নম্বর ভুল হলে করনীয়
জমি ক্রয় করার পূর্বে কি কি দেখবেন?
সবার শুরুতেই আমি আপনাকে জমি ক্রয় করার পূর্বে বেশ কিছু বিষয় দিকে লক্ষ্য রাখতে বলেছি। তবে এ গুলোর পাশাপাশি যখন আপনি অন্য কোনো ব্যক্তির জমি ক্রয় করবেন। তখন আরো অনেক বিষয় থেকে খেয়াল রাখতে হবে। যে গুলো নিচে ধাপে ধাপে উল্লেখ করা হলো। আর আপনি অবশ্যই এই বিষয় গুলো কে যথেষ্ট গুরুত্ব দিবেন। যেমন,
- জমির নকশা এবং খতিয়ান যাচাই করে নিবেন।
- যে জমিটি ক্রয় করছেন সেই জমির মৌজা নং, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর এবং উক্ত দাগে মোট জমির পরিমাণ যাচাই করবেন।
- জমি ক্রয় করার পূর্বে অবশ্যই সেই জমির রেকর্ড ভালো ভাবে চেক করে নিবেন। যেমন, সিএস রেকর্ড, এসএ রেকর্ড আরএস রেকর্ড এর সাথে মাঠ পর্চা মিলিয়ে নিবেন।
- যদি বিক্রেতা সেই জমির ক্রয় সূত্রে মালিকানা পেয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই আপনাকে তার দলিলের রেকর্ডের সাথে বিক্রেতার মালিকানা ঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে নিবেন।
- অপরদিকে সেই জমিটি যদি উত্তরাধিকার সূত্রে মালিক হয়ে থাকে। তাহলে তার সর্বশেষ জরিপ এর খতিয়ানে উক্ত ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা আছে কিনা তা দেখে নিবেন।
- কিন্তু কোন কারনে যদি আপনি লক্ষ্য করতে পারবেন যে, উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমির খতিয়ানের সেই ব্যক্তির নাম না থাকে। তাহলে তিনি যার কাছ থেকে জমি পেয়েছেন। সেই ব্যক্তির সাথে তার রক্তের সম্পর্ক আছে কিনা তা দেখে নিবেন।
- এছাড়াও জমির বিক্রেতার নিকট রক্ষিত পর্চা ঠিক আছে নাকি ভুল আছে তা অবশ্যই আপনাকে যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে।
- যার কাছ থেকে আপনি জমি ক্রয় করবেন তার নিকট থাকা দলিল, বায়না দলিল, খতিয়ান, মাঠ পর্চা ইত্যাদি সকল কাগজ গুলো ইউনিয়নের ভূমি অফিসে গিয়ে সত্যতা যাচাই করবেন।
- বিক্রেতা আপনার নিকট যে জমিটি বিক্রি করতে চাচ্ছে। সেই জমি নিয়ে কোন ধরনের মামলা মোকদ্দমা ইত্যাদি রেকর্ড আছে কিনা তা আপনাকে পরখ করে নিতে হবে।
- আপনি যে জমিটি ক্রয় করতে চাচ্ছেন, সেই জমিটি খাস, পরিত্যক্ত বা অধিগ্রহণের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে কিনা। সেটি অবশ্যই আপনাকে জেলা প্রশাসক এর কার্যালয়ে গিয়ে যাচাই করতে হবে।
- জমি ক্রয় করার পূর্বে আপনাকে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে সেই জমির সর্বশেষ কেনাবেচা করার রেকর্ড দেখতে হবে।
- আপনি যে জমিটি কিনতে চাচ্ছেন, সেই জমিটি ব্যাংক ঋণের দায়বদ্ধ কিনা সে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিবেন।
- উক্ত জমিটি ক্রয় করতে গেলে কোনো তৃতীয় পক্ষের আপত্তি থাকবে কিনা, তা অবশ্যই আপনাকে জেনে নিতে হবে।
যখন আপনি জমি ক্রয় করতে যাবেন। তখন আপনাকে কোন কোন বিষয় গুলোর দিকে যথেষ্ট পরিমাণ গুরুত্ব দিতে হবে। সেই বিষয় গুলো উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। এবং জমি ক্রয় করার সময় আপনি অবশ্যই এই যাবতীয় দলিল এবং তথ্য গুলো যাচাই-বাছাই করে নিবেন।
আরো পড়ুনঃ খাস জমি দখল আইন সম্পর্কে জেনে রাখুন
আপনার জন্য আমাদের শেষ কথা
জমি হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্পদ। আর সে কারণে আমরা অনেকেই নির্দিষ্ট একটি জমির মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখি।
তো আপনি যখন অন্য কোন ব্যক্তির জমি ক্রয় করবেন। তখন আপনাকে বেশ কিছু বিষয় দিকে যথেষ্ট পরিমাণ গুরুত্ব দিতে হবে। আর সেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো নিয়েই আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আশা করি, আজকের এই আর্টিকেল টি আপনার জন্য অনেক হেল্পফুল হবে। আর আপনি যদি এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গুলো বিনামূল্যে পেতে চান। তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন। ধন্যবাদ, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।