জমির পরিমাপ করার নিয়ম
Rules for measuring land: ভূমি হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্পদ। আর যখন আপনি কোন ভূমি বা জমি পরিমাপ করবেন। তখন অবশ্যই আপনাকে সঠিক সূত্র এবং নিয়ম মেনে পরিমাপ করতে হবে। আর এই জমি পরিমাপ করার সময় যে সূত্রের প্রয়োগ করতে হয়। সেটি নিচে উল্লেখ করা হলো,
- সবার প্রথমেই আপনাকে আপনার জমির দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ কতটুক তা বের করে নিতে হবে।
- কিন্তু আপনার জমি যদি চারদিক থেকে সমান না হয়। সেক্ষেত্রে আপনাকে জমির দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থের গড় হিসাব বের করে নিতে হবে।
- এখন আপনাকে জমির দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ কে গুণ করতে হবে।
- আর উক্ত গুনফল কে ৪৩৫.৬ দিয়ে ভাগ করতে হবে।
এবার আপনি যে উত্তরটি পাবেন। সেটি হবে আপনার জমির মোট শতাংশের পরিমাণ। আশা করি, আপনি যদি এই পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তাহলে আপনি যে কোন জমির পরিমাপ করতে পারবেন। আর এটি হল সঠিক পদ্ধতিতে জমির পরিমাপ করার নিয়ম।
আরো পড়ুনঃ জমির রেকর্ড কত বছর পর পর হয়?
জমি পরিমাপের পরিমাপক গুলো কি কি?
বর্তমান সময়ে আমাদের বাংলাদেশের মধ্যে ভূমি সংক্রান্ত হিসেবে নিকেশ করার জন্য। যে সকল পরিমাপক ব্যবহার করা হয়। সে গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন,
- ডেসিমেল বা শতাংশ অথবা শতক
- কাঠা
- বিঘা
- একর
উপরে আপনি যে সকল পরিমাপক দেখতে পাচ্ছেন। মূলত এ গুলোর সাহায্য আমরা আমাদের জমির সীমা (পরিমাপ) প্রকাশ করে থাকি। আর এই ধরনের পরিমাপক গোটা বাংলাদেশের জন্য গৃহীত।
গান্টার শিকল জরিপ | জমির পরিমাপ করার নিয়ম
জমির পরিমাপ করার অন্যতম এটি উপায় হল, গান্টার শিকল। যে শিকলের দৈর্ঘ্য প্রায় ২০.৩১ মিটার।
আর এই পদ্ধতিতে জমি পরিমাপ করার জন্য প্রথমত এটি কে ১০০ টি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। এবং এর প্রতিটি ভাগের ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে। যেমন, আমরা অনেকেই এই ভাগ গুলোকে লিঙ্ক বা জরিপ বলি। আবার অনেকেই আছি, যারা এই ভাগ গুলোকে ”কড়ি” নামে ডাকি।
তবে এটির ভিন্ন ভিন্ন নাম থাকলেও, প্রতিটা নামের নির্দিষ্ট পরিমাণ রয়েছে। সেগুলো হলো,
- প্রতি এক লিঙ্ক = ৭.৯২ ইঞ্চি
- দৈর্ঘ্য ১০ চেইন ×প্রস্থে ১ চেইন = ১০ বর্গ চেইন = ১ একর
- গান্টার শিকলে ১০ লিঙ্ক বা ৭৯.২ ইঞ্চি
- ২০ লিঙ্ক বা ১৫৮.৪ ইঞ্চি
- ৩০ লিঙ্ক বা ২৩৭.৩ ইঞ্চি
আপনি হয়তোবা ভাবছেন যে, এই ধরনের গান্টার শিকল জরিপ এটা আবার কি জিনিস।
তো আপনি যদি এটা ভেবে থাকেন। তাহলে শুনেন, একজন ফরাসি বিজ্ঞানী ছিলেন। তার নাম ছিল এডমন্ড গান্টা। মূলত তিনি হলেন এমন একজন ব্যক্তি, যিনি সর্বপ্রথম এই ধরনের জমি পরিমাপ করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন।
আর এই পদ্ধতিতে জমি পরিমাপ করার জন্য যে শিকল এর ব্যবহার করা হয়। সেটি মূলত ইস্পাত দিয়ে তৈরি। এবং আমাদের বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এটা সহজেই বলা যায়। আমাদের দেশে জমির সঠিক পরিমাপ করার জন্য এই পদ্ধতিটি ব্যাপক পরিমাণে ব্যবহার করা হয়।
আরো পড়ুনঃ খতিয়ান সংশোধন আবেদন ফরম
ভিন্ন প্রকারের আঞ্চলিক ভুমি পরিমাপ করার নিয়ম
আমাদের বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন প্রকারের জমির পরিমাপক রয়েছে। যেমন, আমাদের এই দেশের মধ্যে সরকারিভাবে জমির হিসেব কাটা, বিঘা কিংবা একরে প্রকাশ করা হলেও। এমন অনেক অঞ্চল রয়েছে, যে অঞ্চল গুলো তে ভিন্ন ভিন্ন পরিমাপক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর সে গুলো হলো,
- কাচ্চা কানি
- সাই কানি
আপনি যখন প্রথমবার এই ধরনের পরিমাপক এর নাম শুনবেন। তখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, এই পরিমাপক গুলোর মধ্যে কি পরিমান জমির হিসেব থাকে?
আর আপনি যদি এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান।তাহলে আমি আপনাকে বলব যে, প্রায় ৪০ শতাংশ জমিকে বলা হয়ে থাকে কাচ্চা কানি।
আর ১২০ শথাংশ জমি কে বলা হয়ে থাকে সাই কানি। তবে কিছু কিছু অঞ্চলের মধ্যে ১৬০ শতাংশ জমিকে সাই কানি বলা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে জমির রেকর্ড বের করার নিয়ম
আপনার জন্য কিছু কথা
আমাদের বাংলাদেশের মধ্যে জমি পরিমাপ করার জন্য কি কি নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম গুলো উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন প্রকারের জমির পরিমাপক সম্পর্কে আপনাকে ধারণা দেওয়া হয়েছে।
তো আশা করি, আজকের আলোচিত আলোচনা গুলো বুঝতে আপনার কোন ধরনের সমস্যা হয়নি। তবে এরপরও যদি আপনার জমির পরিমাপ করার নিয়ম নিয়ে আরো কিছু জানার থাকে। তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।
আর ধন্যবাদ, এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য।