ভিসা কিভাবে করতে হয় ( আপডেট তথ্য)

How to do visa: ভিসা নিয়ে আমাদের বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন আছে। যেমন, আমরা অনেকেই জানিনা যে, ভিসা কাকে বলে। আবার অনেকেই বুঝতে পারিনা যে, ভিসা কিভাবে করতে হয়। তো আপনিও যদি তাদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন। তাহলে চিন্তা করার কোনো দরকার নেই।

কেননা, ভিসা রিলেটেড যে সকল অজানা বিষয় আছে। সেই বিষয় গুলো নিয়ে আজকে আমি বিস্তারিত আলোচনা করবো। আর আপনি যদি উক্ত আলোচনা গুলো সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আপনাকে একটু সময় নিয়ে আজকের পুরো লেখাটি পড়তে হবে।

ভিসা বলতে কি বুঝায়?

যেহুতু আজকে ভিসা সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। সেহুতু সবার প্রথমে আমাদের জানতে হবে যে, ভিসা কাকে বলে বা ভিসা বলতে কি বোঝায়।

তো সহজ কথায় বলতে গেলে, ভিসা হলো  এক ধরনের বিশেষ অনুমতিপত্র। যার সাহায্য কোনো একটি দেশের নাগরিক অন্য আরেকটি দেশে যাওয়ার জন্য অনুমতি পায়। আর যদি আপনি কোনো কারণে এই ভিসা ছাড়াই একটি দেশে প্রবেশ করেন। এবং সেই দেশের মধ্যে অবস্থান করেন। তাহলে আপনাকে উক্ত দেশের অবৈধ অভিবাসী হিসেবে গন্য করা হবে।

আর ভিসার জন্য আলাদা কোনো ধরনের কার্ড প্রদান করা হয়না। বরং যখন আপনি ভিসার জন্য আবেদন করবেন। তখন আপনাকে অবশ্যই পাসপোর্ট জমা দিতে হবে। আর উক্ত পাসপোর্ট এর মধ্যে সিল বা স্টিকার লাগিয়ে দিলে ভিসা পারমিট দেওয়া হয়।

আরো পড়ুনঃ কুয়েত ভিসা বাংলাদেশ ২০২৩

ভিসা কিভাবে করতে হয়?

উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম যে, ভিসা কাকে বলে। তো এবার আমাদের জানতে হবে যে, ভিসা কিভাবে করতে হয়। তো যখন আপনি কোনো দেশে যাওয়ার জন্য ভিসা করতে চাইবেন। তখন আপনাকে বেশ কিছু কাজ করতে হবে।

প্রথমত আপনাকে আপনার পাসপোর্ট সহো বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সাথে রাখতে হবে। তারপর আপনি যে দেশের মধ্যে যেতে চান। সেই দেশের দুতাবাসে গিয়ে কিংবা অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। তারপর আপনাকে আপনার নির্ধারিত ভিসা ফি প্রদান করতে হবে। সবশেষে আপনি আপনার ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন।

যেমন, আপনি আমাদের বাংলাদেশ থেকে কানাডা যেতে চান। এখন আপনাকে আমাদের বাংলাদেশের মধ্যে থাকা কানাডা দুতাবাস থেকে আবেদন করতে হবে। আর আবেদন করার সময় আপনাকে যাবতীয় ডকুমেন্টস ও ফি জমা দিতে হবে।

তারপর তারা আপনার সবকিছু যাচাই বাচাই করবে। এবং এই যাচাই শেষে তাদের কাছে আপনি যদি উপযুক্ত ব্যক্তি হয়ে থাকেন। তাহলে তারা আপনাকে আপনার ভিসা প্রদান করবে। কিন্তুু যদি আপনি তাদের কাছে যোগ্য বলে বিবেচিত না হতে পারেন। তাহলে তারা আপনার ভিসা আবেদন রিজেক্ট করবে।

আরো পড়ুনঃ ইবি ৩ ভিসা কি? কিভাবে EB3 Visa পাবেন?

ভিসা কত প্রকারের হয়?

দেখুন, আমরা ভিসা নামক এই শব্দকে এক কথায় বললেও। বর্তমান সময়ে আপনি বিভিন্ন প্রকারের ভিসা দেখতে পারবেন। কেননা, ভিসার অনেক ধরন আছে। আর এবার আমি আপনাকে একটি তালিকা প্রদান করবো। যে তালিকা থেকে আপনি সকল প্রকারের ভিসার নাম দেখতে পারবেন। যেমন,

  1. অ্যারাইভাল ভিসা
  2. ট্রানজিট ভিসা
  3. মেডিকেল ভিসা
  4. ট্যুরিস্ট ভিসা
  5. বিজনেস ভিসা
  6. ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  7. ইমিগ্র্যান্ট ভিসা
  8. শিক্ষার্থী ভিসা
  9. নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের ভিসার প্রচলন আছে। তবে যে ধরনের ভিসা গুলো প্রায় সব দেশেই পাওয়া যায়। সেই ভিসা গুলোর নাম উপরের তালিকায় উল্লেখ করা আছে।

আরো পড়ুনঃ আমেরিকান ডিবি লটারি ২০২৩ ( আপডেট তথ্য)

ভিসা করতে কি কি লাগে? 

ভিসার ধরন ও প্রকারভেদ হিসেবে ভিসা করতে বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্টস এর দরকার হয়। তবে স্বাভাবিক ভাবে একটি দেশের ভিসার আবেদন করার জন্য। আপনার আসলে প্রাথমিক পর্যায়ে যে সকল ডকুমেন্টস প্রদান করতে হবে। সেই ডকুমেন্টস গুলোর তালিকা নিচে দেওয়া হলো। যেমন,

  1. প্রথমত আপনার নিকট একট বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে। যার নির্ধারিত মেয়াদ কমপক্ষে ৩-৬ মাস পর্যন্ত থাকতে হবে।
  2. এছাড়াও আপনার পাসপোর্ট এর মধ্যে সর্বনিন্ম ০৩ টা খালি পৃষ্ঠা থাকতে হবে।
  3. আপনার সদ্য তোলা ছবি দরকার হবে।
  4. অবশ্যই আপনার নিকট জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকতে হবে।
  5. ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করেন। তাহলে আপনার নির্ধারিত কাজের সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
  6. বিভিন্ন দেশ ভেদে আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর দরকার হবে।
  7. আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট এর দরকার হবে।
  8. আবেদন করার ফরমে আপনার যাবতীয় তথ্য উল্লেখ থাকতে হবে।

তো প্রাথমিক ভাবে আপনার ভিসা করার জন্য যে সকল ডকুমেন্টস এর দরকার হবে। সেই ডকুমেন্টস গুলোর তালিকা উপরে প্রদান করা হয়েছে। তবে এর বাইরেও আপনার ভিসার ধরন এর উপর ভিত্তি করে আরো অন্যান্য ডকুমেন্টস এর দরকার হবে।

আরো পড়ুনঃ কাতারের ভিসা কবে চালু হবে ২০২৩

ভিসা করতে কত টাকা লাগে?

বর্তমান পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশের ভিসার জন্য ভিন্ন পরিমান টাকা খরচ করার দরকার হয়। তাই এটা আসলে নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় যে, আপনার ভিসা করতে কত টাকা লাগবে। যেমন, আমাদের বাংলাদেশ থেকে ভারতে যেতে আপনার যে পরিমান টাকা খরচ করতে হবে। তার থেকে অনেক বেশি টাকা সিঙ্গাপুর কিংবা কানাডার ভিসার জন্য ব্যয় করতে হবে।

তবে আপনি যদি ধারনা নিতে চান যে, ভিসা করতে কত টাকা লাগে। তাহলে আমি আপনাকে বলবো যে, আপনার সর্বনিন্ম ০৩ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১২ লাখ কিংবা এর থেকেও বেশি টাকা লাগতে পারে। আবারও বলছি যে, ভিসার খরচ মূলত দেশ ও ভিসার ধরন এর উপর নির্ভর করে।

ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে?

বিভিন্ন ধরনের ভিসা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পাওয়া যায়। যেমন, কিছু ভিসা আছে যেগুলোর জন্য আবেদন করার পর মোট ৭-১০ দিনের মধ্যেই পাওয়া যায়। আবার আপনি এমন অনেক ভিসা দেখতে পারবেন। যেগুলো আবেদন করার পর প্রায় ৩০ দিন বা তারও বেশি সময় অপেক্ষা করার প্রয়োজন হবে।

তাই এটা আসলে নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয় যে, আপনার ভিসা পেতে আসলে মোট কতদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কেননা, এটা সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভর করে আপনি কোন দেশে কোন ভিসার জন্য আবেদন করেছেন তার উপর।

আরো পড়ুনঃ মালয়েশিয়া রেস্টুরেন্ট ভিসা (নতুন তথ্য)

ভিসার মেয়াদ কতদিন পর্যন্ত থাকে?

উপরের তালিকা তে আমরা বিভিন্ন প্রকারের ভিসা সম্পর্কে জানতে পেরেছি। তো এই ভিন্ন ধরনের ভিসা অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদ প্রদান করা হয়। যেমন, কিছু ভিসা আছে যেগুলো শুধুমাত্র ০৬ মাস মেয়াদী হয়। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে, কিছু কিছু ভিসার মেয়াদ ১ বছর থেকে শুরু করে ১০ বছর পর্যন্ত মেয়াদ থাকে।

এছাড়াও এমন অনেক ধরনের ভিসা আছে। যেগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আপনি পুনরায় সেই ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য রিনিউ করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায়?

বাংলাদেশ থেকে ভিসা ছাড়াই কোন দেশে যাওয়া যাবে?

আমরা সকলেই জানি যে, বাংলাদেশ আয়তনের দিক থেকে অনেক ছোট একটি দেশ। কিন্তুু তারপরও পৃথিবীর এমন অনেক দেশ আছে। যে দেশ গুলোতে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের কোনো ধরনের ভিসার দরকার হবেনা। কিন্তুু তার জন্য আপনার নিকট অবশ্যই বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকতে হবে।

আর বাংলাদেশ থেকে ভিসা ছাড়াই যাওয়া যাবে। এমন দেশ গুলোর নাম নিচের তালিকা তে প্রদান করা হলো। যেমন,

  1. বেনিন
  2. কেপ ভার্দ
  3. কমোরো দ্বীপপুঞ্জ
  4. জিবুতি
  5. গাম্বিয়া
  6. গিনি বিসাউ
  7. কেনিয়া
  8. লেসোথো
  9. মাদাগাস্কার
  10. মৌরিতানিয়া
  11. মোজাম্বিক
  12. রুয়ান্ডা
  13. সিসিলি
  14. সোমালিয়া
  15. টোগো
  16. উগান্ডা
  17. বলিভিয়া
  18. কুক আইল্যান্ডস
  19. ফিজি
  20. মাইক্রোনেশিয়া
  21. নিউই
  22. সামাউ
  23. ত্রিভালু
  24. ভানুয়াতু
  25. বাহামা
  26. বার্বাডোজ
  27. ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ডস
  28. ডোমিনিকা
  29. গ্রেনাডা
  30. হাইতি
  31. জামাইকা
  32. মন্টসেরাত
  33. সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস
  34. সেন্ট ভিনসেন্ট
  35. ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগো
  36. ভুটান
  37. ইন্দোনেশিয়া
  38. মালদ্বীপ
  39. নেপাল
  40. শ্রীলঙ্কা ও 
  41. পূর্ব তিমুর

উপরের তালিকাতে আপনি মোট ৪১ টি দেশের নাম দেখতে পাচ্ছেন। মূলত এই দেশ গুলোতে আপনি ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ ইতালির ভিসা আবেদন ফরম

আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা

প্রিয় পাঠক, আলোচনার শুরুতে বলেছিলাম যে, আজকে আমি ভিসা সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় গুলো শেয়ার করবো। আর আশা করি, ভিসা নিয়ে আপনাদে যা কিছু জানার আছে। তার সবকিছু এই লেখা থেকে জেনে নিতে পারবেন।

তো আপনি যদি এই ধরনের ভিসা কিংবা পাসপোর্ট সম্পর্কে আরো অজানা তথ্য জানতে চান। তাহলে নিয়মিত Learning Boss এর সাথে থাকবেন। ধন্যবাদ, এতক্ষন ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *