পর্তুগাল কৃষি ভিসা আবেদন করার উপায় 

How to Apply for Portugal Agricultural Visa: বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। তবুও উচ্চ বেতনের প্রত্যাশায় অনেকেই পর্তুগাল কৃষি ভিসার আবেদন করতে চান। তো আপনিও যদি তাদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন।

তাহলে অবশ্যই আপনার পর্তুগাল কৃষি ভিসার আবেদন করার সঠিক উপায় গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। আর আজকের আর্টিকেলে আমি উক্ত বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

পর্তুগাল কৃষি ভিসা বলতে কি বোঝায়?

সহজ ভাষায় বলতে গেলে, যখন আপনি পর্তুগালে কাজ করার জন্য ভিসার আবেদন করবেন। তখন তাকে বলা হবে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা। তো এই ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আমরা অনেকেই সেই দেশে গিয়ে কৃষি কাজ করতে চাই।

আর কৃষি কাজ করার জন্য যখন পর্তুগাল থেকে নিয়োগ প্রকাশ করা হয়। আর আপনি যখন পর্তুগালে কৃষি কাজ করার জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাবেন। মূলত সেই ভিসাকে বলা হবে, পর্তুগাল কৃষি ভিসা।

আরো পড়ুনঃ পর্তুগাল ভিসার দাম কত?

পর্তুগাল কৃষি ভিসার আবেদন করতে কি কি কাগজপত্র লাগে?

যেহুতু পর্তুগাল কৃষি ভিসা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আওতায় পড়ে। তাই যখন আপনি এই ভিসার জন্য আবেদন করবেন। তখন আপনার নিকট বেশ কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস থাকতে হবে।

আর বর্তমান সময়ে পর্তুগাল কৃষি ভিসা আবেদনের জন্য যেসব কাগজপত্র এর দরকার হবে। সেগুলো নিচের তালিকায় উল্লেখ করা হলো। যেমন,

  1. আপনার নিকট বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে।
  2. সেই পাসপোর্ট এর মেয়াদ কমপক্ষে ০৬ মাস হতে হবে।
  3. জাতীয় পরিচয়পত্র এর কপি প্রদান করতে হবে।
  4. আপনার কৃষিকাজ করার দক্ষতার প্রমানপত্র (সনদ)।
  5. আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (যদি প্রয়োজন হয়)।

তো স্বাভাবিক ভাবে যখন আপনি পর্তুগাল কৃষি ভিসার আবেদন করবেন। তখন আপনার উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্টস গুলোর দরকার হবে।

কিন্তুু পর্তুগালের বিভিন্ন নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ভেদে এর বাইরে আরো অন্যান্য ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হতে পারে। যদি এমনটা হয়ে থাকে, তাহলে আপনাকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে?

কিভাবে পর্তুগাল কৃষি ভিসার আবেদন করবো?

বর্তমান সময়ে সময়ে আপনি চাইলে বিভিন্ন পদ্ধতি ফলো করে পর্তুগাল কৃষি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। যেমন, আপনি চাইলে বিভিন্ন ধরনের এজেন্সির মাধ্যমে উক্ত ভিসার আবেদন করতে পারবেন।

আবার আমাদের বাংলাদেশের বিএমইটি নামক প্রতিষ্ঠান এর সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। অথবা যদি পর্তুগাল থেকে কৃষি কাজে দক্ষ জনবল নিয়োগ প্রকাশ করে। তাহলে আপনি সেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গুলোতে আবেদন করতে পারবেন।

তবে আপনি যদি পর্তুগাল দুতাবাস এর মাধ্যমে যোগাযোগ করতে চান। তাহলে আপনাকে ভারতের দিল্লি থেকে যোগাযোগ করতে হবে। কেননা, এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের মধ্যে পর্তুগালের কোনো ধরনের দুতাবাস নেই।

বিশেষ সতর্কতাঃ আমাদের বাংলাদেশের এজেন্সি ও দালালের মাধ্যমে ভিসার যোগাযোগ করার সময় সতর্ক থাকবেন। কেননা, দালালের খপ্পরে পড়ে আপনার অর্থ ও স্বপ্ন ধুলিসাৎ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

পর্তুগালে কৃষি কাজের বেতন কত টাকা পাওয়া যাবে?

যেহুতু আপনি কাজ করার জন্য পর্তুগাল যেতে চান। সেহুতু আপনাকে অবশ্যই সেই কাজের বেতন সম্পর্কে সঠিক ধারনা রাখতে হবে। আর পর্তুগালের মতো দেশে যদি আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে পারেন। তাহলে আপনি অবশ্যই উচ্চ বেতন সুবিধা নিতে পারবেন।

যদিওবা আপনার কৃষিকাজের দক্ষতা ও কাজের ধরনের উপর আপনার বেতন এর পরিমান নির্ভর করবে। তবে স্বাভাবিক ভাবে যদি আপনি পর্তুগালে কৃষি কাজ করতে পারেন। তাহলে আপনার মাসিক বেতনের পরিমান হবে ৮০০ ডলার এর সমান। যা আমাদের বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮০ হাজার টাকা হয়।

তবে এটি হলো, পর্তুগালের এভারেজ বেতন এর পরিমান। কেননা, আপনার কাজের দক্ষতার উপর ভিত্তি করে আপনি এর থেকেও আরো বেশি বেতন সুবিধা নিতে পারবেন। তাই এটা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় যে, পর্তুগালে আপনার কৃষিকাজের বেতন কত টাকা হবে।

কিন্তুু এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো। সেটি হলো, যখন আপনি কৃষি কাজ করার জন্য পর্তুগালে যাবেন। তখন আপনাকে নিশ্চই কোনো এজেন্সি বা কোম্পানির আওতায় যেতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনি তাদের কাছ থেকে আগেই জেনে নিবেন যে, আপনার কাজের বেতন কত হবে। তাহলে আপনি আগে থেকে আপনার বেতন সম্পর্কে সুষ্পষ্ট ধারনা নিতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ পর্তুগাল কাজের ভিসা অনলাইনে আবেদন করুন

পর্তুগাল কৃষি ভিসার খরচ কত?

যদি আপনি আমাদের বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে চান। তাহলে সাধারন ভাবে আপনার মোট ১০ লাখ থেকে ১২ লাখ টাকার মতো খরচ করতে হবে। কিন্তুু আপনার কৃষি ভিসার জন্য মোট কত টাকা খরচ হবে, তা আসলে নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।

কেননা, আপনার পর্তুগাল কৃষি ভিসার খরচ বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করবে। যেমন, আপনি কত দিনের জন্য যাবেন, কোন কোম্পানির আন্ডারে কাজ করবেন, কোন ধরনের কৃষিকাজ করবেন ইত্যাদি। তাই বর্তমান সময়ে আপনার কৃষি ভিসার খরচ নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব হবেনা।

কেন আপনার পর্তুগালে ‍কৃষি ভিসায় যাওয়া উচিত?  

দেখুন, আপনি যদি আমাদের বাংলাদেশ থেকে পর্তুগালে কৃষি ভিসায় যেতে পারেন। তাহলে আপনি বিভিন্ন দিক থেকে সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। আর এবার আমি আপনাকে সেই সুবিধা গুলো সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো। যেমন,

০১ – ইউরোপে কাজ করার সুযোগঃ আমরা সকলেই জানি যে, ইউরোপ হলো উন্নত একটি মহাদেশ। আর যখন আপনি পর্তুগালে কৃষি ভিসায় যেতে পারবেন। তখন আপনি সেই উন্নত মহাদেশের দেশ গুলোতে কাজ করার সুযোগ পাবেন।

০২ – উচ্চ বেতনের সুবিধাঃ ইউরোপের দেশ গুলোতে সব কাজের ক্ষেত্রে উচ্চ বেতনের সুবিধা পাওয়া যায়। যেখানে আপনি কৃষি কাজ করেও অনেক ভালো বেতন নিতে পারবেন।

০৩ – স্থায়ী ভিসার জন্য সুযোগঃ যখন আপনি পর্তুগালে মোট ০১ বছর ধরে কাজ করবেন। তখন আপনি সেখানে আরো স্থায়ী হওয়ার জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবেন।

তো যদি আপনি আমাদের বাংলাদেশ থেকে পর্তুগালে গিয়ে কৃষিকাজ করেন। তাহলে আপনি যেসকল ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। সেগুলো উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার নিয়ম ২০২৩

পর্তুগালে কৃুষিকাজের চাহিদা কেমন?

এবার অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, বর্তমান সময়ে পর্তুগালে কৃষিকাজের কেমন চাহিদা আছে। আর আপনারা যারা এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান। তাদের ষ্পষ্ট করে বলবো যে, পর্তুগালে কৃষি কাজ এর ব্যাপক পরিমান চাহিদা আছে।

কেননা, সময়ের সাথে সাথে পর্তুগালের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সেই মানুষ গুলোর খাদ্য চাহিদা মেটানোর অন্যতম উপায় হলো কৃষি উৎপাদন। কিন্তুু পর্তুগাল অর্থনৈতিক ভাবে উন্নত একটি দেশ হওয়ার কারণে। এই দেশের অধিকাংশ মানুষ শহরে বসবাস করে।

যার কারণে প্রতি বছর এই দেশটির মধ্যে কৃষি কাজে দক্ষ জনবল এর প্রয়োজন হয়। এর পাশাপাশি পর্তুগালের কৃষিক্ষেত্রে এখনও ততোটা অটোমেশন এর প্রভাব পড়েনি। যার ফলে কৃষিকাজ করার জন্য পর্তুগালে সর্বদাই দক্ষ জনবলের চাহিদা বিরাজমান থাকে।

পর্তুগাল কৃষি ভিসা নিয়ে বিশেষ সতর্কতা

বিভিন্ন ধরনের এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে ভিসার আবেদন করার সময়, যখন আপনি লেনদেন করবেন। তখন অবশ্যই সেই দালাল বা এজেন্সি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবেন।

এছাড়াও যখন আপনার কাছে পর্তুগাল কাজের ভিসা আসবে। তখন আপনি অনলাইনের মাধ্যমে পর্তুগাল ভিসা চেক করে নিবেন। তাহলে আপনি দালালের প্রতারনার হাত থেকে রেহাই পাবেন।

আরো পড়ুনঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর জানা অজানা ইতিহাস

আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা

আপনারা যারা আমাদের বাংলাদেশ থেকে কৃষি ভিসায় পর্তুগাল যেতে চান। তাদের জন্য আজকের লেখাটি অনেক হেল্পফুল হবে।

কারণ, পর্তুগাল কৃষি ভিসার যাবতীয় তথ্য গুলো আজকের লেখায় শেয়ার করা হয়েছে। তবে এরপরও যদি আপনার কিছু জানার থাকে, তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।

ধন্যবাদ, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আর নতুন কিছু জানতে আমাদের সাথে থাকুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *