সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত?
How much is Saudi Arabia’s company visa salary: আমি গত আর্টিকেলে সৌদি আরবের কোন কাজের চাহিদা বেশি সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলাম। তো সেখানে আপনারা অনেকেই সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত সে সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। মূলত সে কারণে আজকের এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে। আর আপনি যদি উক্ত বিষয় টি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের আলোচিত আলোচনা গুলো মন দিয়ে পড়ার চেস্টা করুন।
সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত?
সৌদি আরব, কর্মসংস্থানের এক আকর্ষণীয় লক্ষ্যস্থল। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ উন্নত জীবনের আশায় সৌদি ভূমিতে পাড়ি জমান। আর অধিকাংশ মানুষ সৌদি আরবে কোম্পানি ভিসায় যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু, সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসায় কত বেতন পাবেন, এই প্রশ্নটি সকলের মনেই ঘুরপাক খায়।
সৌদি আরবে বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি এবং সেখানে বিভিন্ন ধরণের কাজের সুযোগ রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই, কাজের ধরন, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং কোম্পানির ধরণের উপর নির্ভর করে বেতনের পরিমাণে ভিন্নতা দেখা যায়।
সৌদি আরব কোম্পানি ভিসা বেতন:
- ড্রাইভিং ভিসা: ২০০০ থেকে ৫০০০ রিয়াল
- লেবার ভিসা: ৮০০ থেকে ৩০০০ রিয়াল
- সুপারমার্কেট ভিসা: ১২০০ থেকে ১৪০০ রিয়াল
আমরা জানি যে, নির্মাণ শিল্পে দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের চাহিদা সৌদি আরবে সবসময়ই বেশি থাকে। তাই আপনার যদি নির্মাণ কাজের অভিজ্ঞতা থাকে এবং বিদেশে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখেন, তাহলে সৌদি আরব আপনার জন্য উপযুক্ত স্থান। কারণ এখানে নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য বেশ ভালো বেতন ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় ।
কত বেতন পাবেন?
- অভিজ্ঞ শ্রমিক: অভিজ্ঞ নির্মাণ শ্রমিকরা সৌদি আরবে মাসিক ২ হাজার থেকে ৩ হাজার রিয়াল পর্যন্ত বেতন পাবেন। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা।
- নতুন শ্রমিক: যারা নতুন সৌদি কোম্পানিতে চাকরি করবেন তারা সর্বোনিম্ন ৩৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা বেতন পেতে পারেন।
মনে রাখবেন, যদি আপনি একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বেতনের পরিমানও বেশি হবে। তাই উচ্চ বেতন পাওয়ার লক্ষ্যে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার চেস্টা করুন। আশা করি, সৌদি আরব বেতন কত সে সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা পেয়ে গেছেন।
সৌদি আরব ক্লিনার ভিসা বেতন কত?
বাস্তবতা হলো, সৌদি আরবে ক্লিনারের বেতন তুলনামূলকভাবে অনেক কম। বর্তমানে একজন ক্লিনারের বেতন আনুমানিক ৬০০ রিয়াল থেকে ১৫০০ রিয়ালের মধ্যে। এই অল্প বেতনে জীবিকা নির্বাহ করা কতটা কঠিন, তা সহজেই অনুমান করা যায়।
আর সৌদি আরব ক্লিনার ভিসা বেতন কম হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত, সৌদি আরবে প্রচুর পরিমাণে অভিবাসী শ্রমিক রয়েছে। এর ফলে শ্রম বাজারে প্রতিযোগিতা বেশ তীব্র। দ্বিতীয়ত, ক্লিনারদের কাজকে অনেকেই হীন মনে করে, যার ফলে তাদের বেতনও কম নির্ধারণ করা হয়।
সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি?
উপরের আলোচনা তে আমরা সৌদি আরব কোম্পানি ভিসার বেতন সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় জানতে পারলাম। তো এবার আমাদের জানতে হবে যে, সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি। বর্তমান সময়ে আপনি সৌদি আরবের প্রায় সব কাজের ক্ষেত্রে বেশি বেতনের সুবিধা নিতে পারবেন। তবে অন্যান্য কাজের তুলনায় যেসব কাজে বেশি বেতন প্রদান করা হয়। সেই কাজ গুলোর তালিকা নিচে উল্লেখ করা হলো।
বেশি বেতনের কাজের তালিকা:
- ড্রাইভিং: সৌদি আরবে দক্ষ ড্রাইভারদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ট্রাক, বাস, টেক্সি, এবং ব্যক্তিগত গাড়ি চালানোর জন্য আপনি উচ্চ বেতন সুবিধা পাবেন।
- ইলেকট্রিশিয়ান: যোগ্য ইলেকট্রিশিয়ান হলো সৌদি আরবে বেশি চাহিদাসম্পন্ন একটি কাজ। বিদ্যুৎ স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের কাজের জন্য আকর্ষণীয় বেতন পাবেন।
- নির্মাণ: সৌদি আরবের অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রকল্পগুলোর জন্য দক্ষ নির্মাণ শ্রমিকদের প্রয়োজন হয়। আপনি যদি রাজমিস্ত্রি, টিনসেটার, ওয়েল্ডার বা অন্য কোনও নির্মাণ ট্রেডে দক্ষ হন, তাহলে আপনি উচ্চ বেতন পাবেন।
- রেস্টুরেন্ট: রেস্তোরাঁয় ওয়েটার, শেফ এবং বেকারদের জন্য সৌদি আরবে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আপনি যদি অভিজ্ঞ হন এবং ভালো ইংরেজি বলতে পারেন, তাহলে আপনি বেশি বেতন পাবেন।
- সুপারমার্কেট: সুপারমার্কেটে ক্যাশিয়ার, সেলস অ্যাসোসিয়েট এবং স্টোরকিপারদের জন্য সৌদি আরবে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আপনি যদি দ্রুত কাজ শেখেন এবং ভালো গ্রাহক পরিষেবা দিতে পারেন, তাহলে আপনি ভালো বেতন পাবেন।
উপরের তালিকায় আপনি বেশ কিছু কাজের নাম দেখতে পাচ্ছেন। মূলত সৌদি আরবে এই কাজ গুলো করতে পারলে আপনি সৌদি আরবের মধ্যে অনেক বেশি বেতন সুবিধা নিতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ সৌদি এয়ারলাইন্স রিয়াদ টু ঢাকা টিকেট প্রাইস
সৌদি আরবের কোন কোম্পানি ভালো?
যেহুতু আপনি সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসায় যেতে চান। সেহুতু এবার আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য জেনে নিতে হবে। আর সেটি হলো, সৌদি আরবের কোন কোম্পানি ভালো। আর আপনি যদি উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আমি আপনাকে বলবো যে, সৌদি আরবের মধ্যে ভালো কোম্পানি এর নাম হলো, আরমকো কোম্পানি (Aramco Company).
আর আমাদের বাংলাদেশ থেকে যে সকল মানুষ কোম্পানি ভিসায় সৌদি আরব যায়। তাদের মধ্যে অনেকেই আরমকো কোম্পানির মাধ্যমে ভিসা করে থাকে। তাই চাইলে আপনিও উক্ত কোম্পানির মাধ্যমে সৌদি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে তার জন্য আপনার অবশ্যই কাজ করার মতো পূর্বের অভিজ্ঞতার দরকার হবে।
আরো পড়ুনঃ ১ গ্রাম স্বর্ণের দাম কত সৌদি আরব?
ভিসা সৌদি আরবের কোম্পানি নাম
উপরের আলোচনা থেকে আমরা সৌদি আরবের সবচেয়ে ভালো কোম্পানির নাম সম্পর্কে জানতে পারলাম। তো এটি ছাড়াও এমন আরো অনেক কোম্পানি আছে যেগুলো থেকে বিভিন্ন সময় নিয়োগ প্রকাশ করা হয়ে থাকে। আর সেই কোম্পানি গুলোর নাম নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন,
- আলবদর কোম্পানি
- আল খায়ের কোম্পানি
- পেপসিকো কোম্পানি
- ইনিশিয়াল কোম্পানি
- আল ইমামা কোম্পানি
- জুসুর ইমদাদ কোম্পানি
- বলদিয়া কোম্পানি
- সাসকো কোম্পানি
- আল মারাই কোম্পানি
- আরমকো কোম্পানি
উপরের তালিকা তে আপনি সৌদি আরবের জনপ্রিয় কিছু কোম্পানির নাম দেখতে পাচ্ছেন। যে কোম্পানি গুলো থেকে বিভিন্ন সময় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ সৌদি টু বাংলাদেশ ফ্লাইট
FAQ – Saudi Arabia Company Visa
Q: কত বছর বয়স হলে সৌদি আরব যাওয়া যায়?
A: বাংলাদেশ থেকে যারা কাজের ভিসায় সৌদি আরব যাবেন তাদের সর্বনিন্ম বয়স হতে হবে ২১ বছর।
Q: সৌদি আরব ভিসা কত প্রকার?
A: বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের সৌদি আরব ভিসা পাওয়া যায়। আর সেগুলো হলো, হজ ভিসা, কাজের ভিসা, ফ্যামিলি ভিসা, শিক্ষা ভিসা, ট্যুরিষ্ট ভিসা, ব্যবসা ভিসা ইত্যাদি। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
Q: সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি?
A: এমন অনেক কাজ আছে যে কাজ গুলোতে সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি বেতন দেওয়া হয়। আর সেই কাজ গুলো হলো, ওয়েল্ডিং কাজ, অটোমোবাইল মেকানিক কাজ, ক্লিনার কাজ, ফ্যাক্টরি শ্রমিক, কনস্ট্রাকশন কাজ, ড্রাইভিং ভিসা, প্লাম্বার ভিসা ইত্যাদি।
আপনার জন্য কিছুকথা
আপনারা যারা সৌদি আরবে কাজের ভিসায় যেতে চান। তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল টি অনেক বেশি হেল্পফুল হবে। কেননা, আজকে আমি আপনাকে সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা সম্পর্কে বিভিন্ন অজানা বিষয় গুলো জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
তো আপনি যদি ভিসা কিংবা পাসপোর্ট রিলেটেড আরো কোনো অজানা তথ্য জানতে চান। তাহলে আমাদের সাথে থাকার চেষ্টা করবেন। আর ধন্যবাদ, এতক্ষন ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।