৩ নভেম্বর কি দিবস?

What day is November 3?: আমাদের বাংলাদেশের মধ্যে নভেম্বর মাসের ০৩ তারিখ জাতীয় জেলহত্যা দিবস পালন করা হয়। কেননা, ১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাসের ৩ তারিখেআওয়ামী লীগের চার (০৪) জন জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয়েছিলো। যার কারণে এই দিনটিকে জেল হত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

আর সেই হত্যাকান্ডে কারা নিহত হয়েছিলো, কেন তাদের হত্যা করা হয়েছিলো। এই বিষয় গুলো নিয়ে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস পালন করা হয় কেন?

উপরের আলোচনা থেকে জানতে পারলাম, নভেম্বর মাসের ০৩ তারিখ জেল হত্যা দিবস পালন করা হয়। তো এই বিশেষ দিবসটি পালন করার পেছনে বিরাট একটি ইতিহাস আছে। কেননা, বর্তমান সময়ে এই দেশের আওয়ামীলীগ সহো আরো অনেক রাজনৈতিক দল থেকে এই দিবসটি বিশেষ ভাবে পালন করা হয়।

কেননা, ১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাসের ০৩ তারিখে আওয়ামীলীগের মোট চারজন নেতাকে হত্যা করা হয়েছিলো। আর সেই নেতাদের নাম হলো,

  1. সৈয়দ নজরুল ইসলাম
  2. তাজউদ্দীন আহমদ
  3. মুহাম্মদ মনসুর আলী এবং আ
  4. বুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান

আর উক্ত হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি স্মরণার্থে এই জেলহত্যা নামক বিশেষ দিবস টি পালন করা হয়। তবে এই জেল হত্যার পিছনে আরো বড় একটা ইতিহাস আছে। যে ইতিহাসকে খুব সংক্ষিপ্ত আকারে নিচে শেয়ার করা হলো।

আরো পড়ুনঃ ২ নভেম্বর কি দিবস?

জেলহত্যা দিবসের ইতিহাস (সংক্ষিপ্ত)

আমরা সকলেই জানি যে, ১৯৭৫ সালে আগষ্ট মাসের ১৫ তারিখ শেখ মুজিব ও তার পুরো পরিবার কে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছিলো। আর যখন এই নেক্কারজনক কাজ করা হয়েছিলো, তখন বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোস্তাক আহমেদ নিজেকে রাষ্টপতির পদে আসীন করে সামরিক শাসন জারি করে।

আর তার পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ আগষ্ট মাসের ২১ তারিখ মোট চারজন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় নেতৃত্ব প্রদান করেছিলো। আর যখন এই চারজন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। তখন তাদের পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছিলো।

তবে তাদের কারাগারে পাঠানোর সাথে সাথে হত্যা করা হয়নি। বরং তাদের কারাগারে পাঠানোর পর ২ মাস ২৩ দিন পর নভেম্বর মাসের ৩ তারিখে খন্দকার মোস্তাক আহমেদ এর অনুমতি নিয়ে বে আইনি ভাবে কারাগারে প্রবেশ করে। তারপর এই নেতাদের গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছিলো।

এক নজরে জাতীয় চার নেতার হত্যাকান্ড

  1. হত্যাকান্ডের স্থানঃ পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, পুরান ঢাকা, বাংলাদেশ।
  2. হত্যাকান্ডের তারিখঃ ৩রা নভেম্বর ১৯৭৫; (ভোর ৪:০০ থেকে ৪:৩৫)।
  3. হামলার ধরনঃ হত্যাকাণ্ড।
  4. ব্যবহৃত অস্ত্র এর নামঃ লাইট মেশিনগান ও বেয়োনেট।
  5. নিহত ব্যক্তির সংখ্যাঃ ৪,
  6. হামলাকারী দলঃ সামরিক বাহিনীর সদস্য।
  7. অংশগ্রহণকারী ব্যক্তির নামঃ রিসালদার মোসলেম উদ্দিন, দফাদার মারফত আলী শাহ, দফাদার আবুল হাসেম মৃধা সহ চার-পাঁচজন।

জেলহত্যা দিবসে মৃত্যুবরন করা ব্যক্তিদের সম্পর্কে

জেলহত্যা দিবসে যেসব ব্যক্তিদের হত্যা করা হয়েছিলো। সেই ব্যক্তিদের নাম উপরের তালিকায় শেয়ার করা হয়েছে। তো এবার আমি উক্ত ব্যক্তিদের সম্পর্কে স্বল্প আকারে বিস্তারিত বলবো।

০১ – সৈয়দ নজরুল ইসলামঃ তিনি হলেন আমাদের বাংলাদেশের প্রথম মুজিবনগর সরকারের উপ রাষ্ট্রপতি এবং ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি। এছাড়াও তিনি বাকশালের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।

০২ –  তাজউদ্দীন আহমদঃ তিনি একজন আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ। এছাড়াও তিনি আমাদের দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আর তিনি সাবেক সংসদ সদস্য ও অর্থমন্ত্রী ছিলেন।

০৩ – আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামানঃ তিনি একজন সংসদ সদস্য ছিলেন। আর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলছিলো। তখন তিনি গঠিত অস্থায়ী সরকারের স্বরাষ্ট্র, কৃষি এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ছিলেন।

০৪ – মুহাম্মদ মনসুর আলীঃ তিনি মুজিবনগর সরকারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। এছাড়াও যখন শেখ মুজিব এর মাধ্যমে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো। তখন তিনি আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

তো জেলহত্যার দিনে যারা নির্মমভাবে হত্যা হয়েছিলো। তাদের সম্পর্কে উপরের আলোচনায় সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা

বাংলাদেশে ৩ নভেম্বর কি দিবস সেটি নিয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও সেই দিবস কে কেন জেলহত্যা দিবস বলা হয় সেটি সম্পর্কে সঠিক তথ্য শেয়ার করা হয়েছে। তো আশা করি, আজকের শেয়ার করা তথ্য গুলো আপনার জন্য অনেক হেল্পফুল হবে।

আর যদি আপনি এমন ধরনের হেল্পফুল তথ্য গুলো বিনামূল্যে পেতে চান। তাহলে আমাদের সাথে থাকবেন। ধন্যবাদ, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *