বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায় ২০২৪

Ways to go from Bangladesh to America: স্বাধীনতার পর থেকেই আমেরিকা অনেক বাঙালির স্বপ্নের দেশ। উন্নত জীবনযাপন, উচ্চশিক্ষা, এবং বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির আকর্ষণে অনেকেই এই দেশে পাড়ি জমাতে চান। আজকের এই প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করবো বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায় সম্পর্কে।

আমেরিকা যাওয়ার উপায় | USA যাওয়ার সহজ উপায়

বর্তমান সময়ে যারা বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাবেন তারা মোট ০৫ টি ভিসায় যেতে পারবেন। আর সেই ভিসার ধরন গুলো হলো,

  1. অভিবাসী ভিসা
  2. ভিজিটর ভিসা
  3. মার্কিন নাগরিক পুরুষ বা নারীকে বিয়ে করার জন্য বাগদত্তা ভিসা
  4. শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা
  5. ট্রানজিট ভিসা

America jawar upay? |আমেরিকায় কিভাবে যাওয়া যায়?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, স্বপ্নের দেশ, যেখানে সুযোগের অভাব নেই। তাই অনেকেই হয়তো ভাবছেন, কীভাবে এই স্বপ্নের দেশে পা রাখা যায়! তো চলুন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য কী কী প্রয়োজন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।

আমেরিকা যাওয়ার উপায়

আমেরিকা যাওয়ার উপায়

যুক্তরাষ্ট্র পৌছানোর আগে কি কি করবেন?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য আপনার পাসপোর্ট অবশ্যই আপনার ভ্রমণের তারিখ থেকে পরবর্তী ছয় মাসের জন্য বৈধ থাকতে হবে। এর মানে হলো, যদি আপনি 10 জানুয়ারী ভ্রমণ করেন, তাহলে আপনার পাসপোর্ট অবশ্যই 10 জুলাই পর্যন্ত বৈধ থাকতে হবে।

আর আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ আছে কিনা তা পরীক্ষা করার করতে চাইলে আপনার পাসপোর্টের “Date of Expiry”(মেয়াদ শেষের তারিখ) চেক করে নিন। তবে যদি আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ না থাকে, তাহলে অবশ্যই সেই পাসপোর্ট রিনিউ করে নিতে হবে। এছাড়াও আপনার নিকট সকল ডকুমেন্টস আছে কিনা সেটা খুব ভালোভাবে চেক করে নিবেন। 

নোটঃ সকল ধরনের ভিসার জন্য ”কোভিড-১৯” -টিকা বাধত্যামূলক। কিভাবে কোভিড টিকা সনদ ডাউনলোড করা যায় জানতে হলে নিচের লিংকে ক্লিক করুন:

আমেরিকা যাওয়ার সহজ উপায়

আরো পড়ুনঃ আমেরিকা মাল্টিপল ভিসা কি | আমেরিকার ৫ বছরের মাল্টিপল ভিসা

আমেরিকা কিভাবে যাওয়া যায়?

বর্তমান সময়ে আমাদের বাংলাদেশ থেকে প্রায় অধিকাংশ মানুষ অভিবাসন ভিসায় আমেরিকা যায়। তবে আপনি যেভাবেই আমেরিকা যাওয়ার চেস্টা করুন না কেন, আপনার নিকট অবশ্যই মার্কিন ভিসার প্রয়োজন হবে। যদিওবা কিছু কিছু দেশের নাগরিক ‘গ্লোবাল অ্যান্ট্রি’ প্রোগ্রামের আবেদন করার সুযোগ পান। তবে আমাদের বাংলাদেশের নাগরিকরা ‘গ্লোবাল অ্যান্ট্রি’ প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন কিনা তা জানতে এখানে ক্লিক করুন।

কিন্তুু আপনি যদি অভিবাসী ভিসা ব্যবহার করে আমেরিকা যেতে চান, তাহলে আপনার জানা উচিত যে, কত ধরণের অভিবাসী ভিসা আছে এবং কীভাবে আপনি সেই ভিসা পাবেন। যা নিচে ধাপে ধাপে উল্লেখ করা হলো।

পরিবার-ভিত্তিক ভিসা

আপনার যদি আমেরিকায় স্থায়ী বাসিন্দা বা নাগরিক বন্ধু, পরিবার, বা স্ত্রী/স্বামী থাকে, তাহলে আপনি তাদের স্পনসরশিপে পরিবার-ভিত্তিক ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।

কাজ বা চাকরি ভিসা

আপনার যদি আমেরিকার কোন কোম্পানি থেকে চাকরির অফার লেটার থাকে, তাহলে আপনি কাজ বা চাকরি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ আমেরিকার নাগরিক হওয়ার উপায়

আমেরিকা অভিবাসী ভিসা কাদের জন্য?| america kivabe jabo

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের স্বপ্ন অনেকেই দেখেন। আর ‘অভিবাসী ভিসা’ এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য যথেষ্ট একটি উপায়। কিন্তু আমেরিকা অভিবাসী ভিসা পাওয়া কতটা সহজ? চলুন, অভিবাসী ভিসা পাওয়ার উপায় গুলো সম্পর্কে ধাপে ধাপে জেনে নেওয়া যাক।

১. স্পন্সর বা পিটিশন

অধিকাংশ ক্ষেত্রে, আপনাকে অবশ্যই একজন স্পন্সরের প্রয়োজন হবে, যিনি আপনার আবাসন, খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা পূরণের দায়িত্ব নেবেন। স্পন্সর হতে পারেন আপনার মার্কিন নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দা আত্মীয়, কর্মদাতা, অথবা অন্য কোন প্রতিষ্ঠান।

স্পন্সর না থাকলে, আপনি নিজেই ‘অভিবাসী পিটিশন’ জমা দিতে পারেন। বিভিন্ন ধরণের পিটিশন আছে, যেমন পারিবারিক, কর্মসংস্থান-ভিত্তিক, বিনিয়োগ-ভিত্তিক ইত্যাদি। আপনার যোগ্যতার উপর নির্ভর করে কোন পিটিশনটি আপনার জন্য উপযুক্ত তা নির্ধারণ করতে হবে।

২. পিটিশন অনুমোদন ও ভিসার আবেদন

আপনার পিটিশন অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অনুমোদন মিললে, আপনি ‘অভিবাসী ভিসার’ জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর এই আবেদন করতে হবে বিদেশে অবস্থিত মার্কিন কনস্যুলেটের মাধ্যমে।

৩. মেডিক্যাল টেস্ট

ভিসার জন্য আবেদন করার পর আপনাকে অবশ্যই মেডিক্যাল টেস্ট সম্পন্ন করতে হবে। মার্কিন সরকার কর্তৃক অনুমোদিত চিকিৎসকের কাছে এই টেস্ট করাতে হবে।

৪. সাক্ষাৎকার

সব কাগজপত্র প্রস্তুত করার পর আপনাকে মার্কিন কনস্যুলেটে সাক্ষাৎকারের জন্য যেতে হবে। সাক্ষাৎকারে আপনার ভিসার আবেদনের যোগ্যতা যাচাই করা হবে। এছাড়াও এই সাক্ষাৎকারের সময় আপনাকে আমেরিকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে সম্পর্কে বেশ কিছু সাধারন প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

৫. সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা

সাক্ষাৎকারের পর আপনার আবেদনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সিদ্ধান্ত অনুমোদন হলে আপনাকে ‘অভিবাসী ভিসা’ প্রদান করা হবে।

অভিবাসী ভিসা ও স্বপ্নের গ্রিন কার্ড

অবশেষে, দীর্ঘ অপেক্ষার পর আপনার হাতে এসে পৌঁছে যাবে কাঙ্খিত সেই অভিবাসী ভিসা। মনে রাখবেন, এটি কেবল একটি ভিসা নয়, বরং আপনার স্বপ্নের দরজা খুলে দেওয়ার মূল চাবিকাঠি। যদিওবা অভিবাসী ভিসা পাওয়ার পর অনেকেই মনে করেন যে, স্বপ্নের দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। তবে থামুন, কারণ এখনও আপনার অনেক কাজ বাকি আছে।

কারণ, ভিসা পেয়ে গেলেই আপনি সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারবেন না। তার আগে আপনাকে অবশ্যই ইউএসসিআইএস (United States Citizenship and Immigration Services) নামক অভিবাসী ফি জমা দিতে হবে। এরপর আপনি পাবেন একটি সিল করা নথির প্যাকেট, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। আর সবশেষে আপনার ই-মেইলের মধ্যে পৌঁছে যাবে গ্রিন কার্ড। 

আরো পড়ুনঃ আমেরিকার গ্রিন কার্ড পাওয়ার উপায়

আমেরিকা গ্রিন কার্ড

আমেরিকা গ্রিন কার্ড

ডিভি লটারি প্রোগ্রাম

অভিবাসী ভিসা পাওয়ার আরেকটি উপায় হলো ‘ডাইভারসিটি ভিসা (ডিভি)’ লটারি প্রোগ্রাম। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে যেসব দেশের অভিবাসীর হার যুক্তরাষ্ট্রে কম, সেসব দেশকে অগ্রাধিকার হিসেবে ডিভি লটারিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। দুঃখজনকভাবে, বাংলাদেশ থেকে আপাতত ডিভি লটারি প্রোগ্রামে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সুযোগ নেই।

আরো পড়ুনঃ আমেরিকান ডিবি লটারি ( আপডেট তথ্য)

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা খরচ হয়?

বর্তমান সময়ে আপনি যদি আমাদের বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে চান। তাহলে আপনার বিমান ভাড়ার জন্য মোট খরচ হবে প্রায় ০১ লাখ থেকে ০২ লাখ টাকা। তবে এয়ারলাইন্স ভেদে এই বিমান ভাড়ার পরিমান আরো কম বা বেশি খরচ করার প্রয়োজন হতে পারে।

তবে আমেরিকা যেতে হলে আপনার জন্য সব মিলিয়ে ১০ লাখ থেকে ১৪ লাখ টাকার মতো খরচ করার দরকার হবে। কিন্তুু আপনি যদি দালালের মাধ্যমে আমেরিকার ভিসার জন্য যোগাযোগ করেন। তাহলে আপনার ক্ষেত্রে আরো বেশি টাকা খরচ করার প্রয়োজন হবে।

আরো পড়ুনঃ আমেরিকা থেকে কানাডায় যেতে কি কি লাগে?

ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া কি আমেরিকায় কাজ করা যায়?

বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশ এর ক্ষেত্রে এই বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়। সেটি হলো, আমাদের দেশের অনেক মানুষ জানতে চায় যে, ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া কি আমেরিকায় কাজ করা যাবে কিনাতো যারা আসলে এমন চিন্তা ভাবনা করছেন তাদের বলবো যে, এটা সম্পূর্ণ বে-আইনি ও অবৈধ একটি কাজ। কেননা, আপনি যদি আমেরিকায় কাজ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট নিতে হবে।

কিন্তুু যদি আপনার কাছে কোনো ধরনের ওয়ার্ক পারমিট না থাকে। কিন্তু তারপরও আপনি যদি সেখানে কাজ করেন 12তাহলে আপনাকে আমেরিকার আইন অনুযায়ী জেল বা জরিমানা করা হতে পারে। তাই আমেরিকা তে কাজ করার জন্য অবশ্যই ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করবেন।

আরো পড়ুনঃ আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ এর তালিকা

আমাদের কিছুকথা

কিভাবে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যাওয়া যায়। আজকে সেই উপায় গুলো শেয়ার করা হয়েছে। তো আপনি যদি এই বিষয়ে আরো কোনো তথ্য জানতে চান। তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। ধন্যবাদ, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *