স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডা যাওয়ার উপায় ও খরচ

Ways and Costs to Travel to Canada on Student Visa: আমরা সবাই জানি যে, কানাডা হলো উন্নত একটি দেশ। যার কারণে এই দেশের শিক্ষার মানও অনেক উন্নত। আর সে কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য কানাডায় আসে। হয়তবা আপনিও তাদের মধ্যে একজন, যে কিনা কানাডায় পড়াশোনা করতে চাচ্ছেন।

তো আপনি যদি বর্তমান সময়ে কানাডায় পড়াশোনা করতে চান। তাহলে আপনাকে স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডা যাওয়ার উপায় ও খরচ সম্পর্কে জানতে হবে। আর আজকের আর্টিকেলে আমি উক্ত বিষয় গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

আপনি কেন কানাডায় পড়াশোনা করবেন?

দেখুন, কানাডা একটি উন্নত দেশ হওয়ার কারণে সবাই সেই দেশে পড়াশোনা করতে চায়না। বরং কানাডা তে পড়াশোনা করলে আপনি এমন কিছু দিক থেকে সুযোগ সুবিধা পাবেন। যেগুলো আপনি অন্য কোনো দেশে পাবেন না। আর সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন,

  1. কানাডায় শিক্ষার মান অনেক উন্নত
  2. অন্যান্য দেশের তুলনায় এই দেশে অনেক কম খরচে পড়াশোনা করা যায়।
  3. কানাডার মধ্যে থাকা অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় গুলো আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত।
  4. এই দেশটি সম্পূর্ণ নিরাপত্তার চাদরে নিমজ্জিত।
  5. কানাডার স্বংস্কৃতি অনেক ভালো।
  6. কানাডার পরিবেশ খুব সুন্দর।
  7. পড়াশোনা শেষে কানাডায় উচ্চ বেতনে চাকুরি করার সুবিধা।
  8. অনেক সময় কানাডার সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের স্থায়ী বসবাস করার সুবিধা দেয়।

তো যখন আপনি একজন বাংলাদেশি নাগরিক হয়ে কানাডায় পড়াশোনা করবেন। তখন আপনি আসলে যেসব সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। সেগুলো উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। আর আপনি যদি সেই সুবিধা গুলো পেতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনাকে কানাডায় পড়াশোনা করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় ২০২৩

কানাডায় পড়াশোনা করার জন্য কেমন যোগ্যতা লাগে?

দেখুন, কানাডায় পড়াশোনা করার জন্য আপনার কেমন যোগ্যতার প্রয়োজন হবে। সেটা মূলত আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান তার উপর উপর করবে। কেননা, ভিন্ন ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য ভিন্ন ভিন্ন যোগ্যতার প্রয়োজন হয়।

তবে স্বাভাবিক ভাবে কানাডার বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যেসব যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। সেগুলো নিচের তালিকায় উল্লেখ করা হলো। যেমন,

  1. আপনার পূর্ববর্তী পরীক্ষা গুলোতে ভালো নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।
  2. আপনার আইইএলটিএস স্কোর ৬.০০ হতে হবে।
  3. অবশ্যই নির্দিষ্ট ব্যাংক ব্যালেন্স থাকতে হবে।
  4. শারীরিক ভাবে সুস্থ ও সবল হতে হবে।

যদি আপনি কানাডায় পড়াশোনা করতে চান। তাহলে আপনার ক্ষেত্রে কি কি যোগ্যতার প্রয়োজন হবে। সেই যোগ্যতার তালিকা উপরে প্রদান করা হয়েছে। তবে কানাডার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভেদে এই যোগ্যতার পরিমান ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।

কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য কি কি লাগে?

উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম যে, কানাডায় পড়াশোনা করার জন্য কেমন যোগ্যতা লাগে। তো এবার আমাদের জানতে হবে যে, কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করার সময় কি কি ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে।

আর আপনি যদি বর্তমান সময়ে কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করেন। তাহলে আপনার যেসব ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে। সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন,

  1. আপনার নিকট একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে। যার মেয়াদ কমপক্ষে ০৬ মাস থাকবে।
  2. আপনার আইইএলটিএস স্কোর ভালো হতে হবে।
  3. পূর্ববর্তী পরীক্ষা গুলোর সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে।
  4. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশংসাপত্র থাকতে হবে।
  5. কানাডার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অফার লেটার থাকতে হবে।
  6. কোনো প্রকার অপরাধমূলক কাজে জড়িত না থাকার প্রমানপত্র।
  7. কানাডায় লেখাপড়া, থাকা খাওয়া ইত্যাদি খরচের জন্য পর্যাপ্ত ব্যাংক ব্যালেন্স।
  8. জাতীয় পরিচয়পত্র এর কপি।
  9. এছাড়াও আপনার জন্ম নিবন্ধনের কপি দিতে হবে।

মূলত আপনি যখন আমাদের বাংলাদেশ থেকে কানাডার স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করবেন। তখন আপনার নিকট যে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকতে হবে। সেগুলো উপরের তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে এর বাইরে যদি আরো কোনো ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয়। তাহলে আপনাকে কর্তৃপক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

আরো পড়ুনঃ কানাডা জব ভিসা ২০২৩

কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার খরচ কত টাকা?

যেহুতু আপনি কানাডায় পড়াশোনা করতে যাবেন। সেহুতু অবশ্যই আপনার নিকট কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা থাকতে হবে। আর এই স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ খরচ করার প্রয়োজন পড়বে। তাই কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার খরচ সম্পর্কে আমাদের সবার সঠিক ধারনা থাকা দরকার।

আর চলমান সময়ে যদি আপনি কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করেন। তাহলে আপনার মোট ০৫ লাখ থেকে ০৬ লাখ টাকা খরচ করার প্রয়োজন পড়বে।

তবে এই খরচটি শুধুমাত্র আপনার স্টুডেন্ট ভিসার জন্য বহন করতে হবে। এর পরবর্তীতে আপনার কানাডায় পড়ালেখা, থাকা-খাওয়ার জন্য আলাদা ভাবে ব্যয় করতে হবে।

কানাডায় পড়াশোনা করার খরচ কত?

সত্যি বলতে কানাডায় পড়াশোনা করতে আপনার কত টাকা খরচ করতে হবে। তা আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আপনার শিক্ষার স্তরের উপর নির্ভর করবে। কেননা, সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই রকম খরচ হয়না।

তবে স্বাভাবিক ভাবে কানাডায় পড়াশোনা করার জন্য একাডেমিক খরচ হিসেবে ১৫ হাজার থেকে ২৮ হাজার কানাডিয়ান ডলার এর প্রয়োজন হয়। তবে কানাডার মধ্যে এমন কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আছে। যে গুলো তে আপনার একাডেমিক খরচের পরিমান হবে প্রায় ৮ হাজার থেকে ১৪ হাজার ডলার।

তবে একাডেমিক খরচ ছাড়াও আপনার থাকার জন্য, খাওয়ার জন্য এবং হাত খরচের জন্য আলাদা অর্থ ব্যয় করতে হবে। যেমন, আপনি যদি আপনার বিশ্ববিদ্যালয় এর ক্যাম্পাস থেকে পড়াশোনা করেন। তাহলে আপনাকে প্রতি ০৪ মাস পর থাকা খাওয়ার খরচ হিসেবে ৩,০০০ থেকে ৭,০০০ ডলার দিতে হবে।

কিন্তুু যদি আপনি আপনার বিশ্ববিদ্যালয় এর ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে পড়াশোনা করেন। তাহলে আপনার ১.৫ হাজার থেকে ২ হাজার ডলার। মূলত আপনার থাকা খাওয়ার খরচ নির্ভর করবে, আপনি কোন শহরে আছেন এবং কিভাবে জীবনযাপন করবেন তার উপর।

আর আপনি যদি কানাডায় পড়াশোনার খরচ সম্পর্কে আরো সঠিক তথ্য জানতে চান। তাহলে এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ থেকে কানাডা যাওয়ার উপায়

পিতামাতার ওয়ার্ক পারমিট থাকলে বাচ্চারা কি কানাডায় বিনামূল্যে পড়াশোনা করতে পারবে?

বর্তমান সময়ে আমাদের বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় আছে। আর তাদের মনে প্রশ্ন জাগে যে, পিতামাতার ওয়ার্ক পারমিট থাকলে বাচ্চারা কি কানাডায় বিনামূল্যে পড়াশোনা করতে পারবে কিনা।

আর আপনিও যদি এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে শুনুন… যদি আপনি কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় থাকেন। তাহলে আপনি সেখানে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে থাকতে পারবেন। আর উক্ত সময়ে আপনি চাইলে আপনার শিশুকে বিনামূল্যে কানাডায় পড়াশোনা করাতে পারবেন।

কানাডা স্টুডেন্ট ভিসায় কাজ করা যাবে কি?

আপনি যখন কানাডায় স্টুডেন্টস ভিসায় যাবেন। তখন যদি সেখানে লেখাপড়া করার পাশাপাশি পার্ট টাইম জব করতে পারেন। তাহলে কিন্তুু আপনার কানাডায় পড়াশোনা করার চাপ অনেকটা কম হবে। আর সে কারণে আমরা অনেকেই জানতে চাই যে, কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসায় কি কাজ করা যাবে কিনা।

তো আপনি চাইলে কানাডায় পড়াশোনা করার পাশপাশি পার্ট টাইম জব করতে পারবেন। তবে এই ধরনের পার্টটাইম জব করার জন্য আপনাকে সময় নির্ধারন করতে হবে। সেইসাথে আপনি যে পার্ট টাইম কাজ করবেন, সেজন্য আপনাকে আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পারমিশন নিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ কানাডা ভিসা আবেদন ফরম ২০২৩

আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা

প্রিয় পাঠক, আপনারা যারা স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডা যেতে চান। তাদের জন্য আজকের লেখাটি অনেক হেল্পফুল হবে। কেননা, স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডা যাওয়ার উপায় ও খরচ নিয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

তো এরপরও যদি আপনার মনে কোনো ধরনের প্রশ্ন থাকে। তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। আর এতক্ষন ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *