মুক্তিযোদ্ধা mis তালিকা অনুসন্ধান করার উপায়
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য সংরক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা MIS তালিকা। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় (Molwa) কর্তৃক পরিচালিত এই ডাটাবেস কেবল তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমই নয়, বরং এটি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি জাতির কৃতজ্ঞতার প্রতীক।
তো বিভিন্ন সময় আমাদের মুক্তিযোদ্ধা mis তালিকা অনুসন্ধান করার দরকার হয়। আর কিভাবে আপনি অনলাইন থেকে মুক্তিযোদ্ধা mis তালিকা খুজে বের করবেন সেই পদ্ধতি গুলো আজকে ধাপে ধাপে দেখিয়ে দিবো।
মুক্তিযোদ্ধা mis তালিকা অনুসন্ধান করার উপায়
বর্তমান সময়ে আপনি খুব সহজে অনলাইন থেকে মুক্তিযোদ্ধা mis তালিকা অনুসন্ধান করতে পারবেন। তবে তার জন্য আপনাকে “মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়”-এর মূল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। তারপর আপনি যে ব্যক্তির তালিকা দেখতে চান তার কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। আর উক্ত কাজ গুলো করার জন্য নিচে দেখানো ধাপ গুলো ফলো করুন।
- (http://mis.molwa.gov.bd/freedom-fighter-list) এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
- তারপর আপনি উপরের পিকচারের মতো নতুন একটি পেজ দেখতে পারবেন।
- এখন আপনাকে বিভাগ, জেলা, থানা সিলেক্ট করে দিতে হবে।
- তার ঠিক নিচের অপশনে নাম, মুক্তিযোদ্ধার তালিকা, গেজেট নং ও মুক্তিযোদ্ধার নাম্বার দিতে হবে।
- সবগুলো তথ্য দেওয়ার পর আপনাকে “অনুসন্ধান” -বাটনে ক্লিক করতে হবে।
আর যখন আপনি উপরে দেখানো পদ্ধতি গুলো সঠিক ভাবে ফলো করবেন তখন আপনি আপনার কাঙ্খিত মুক্তিযোদ্ধার Mis তালিকা দেখতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ
- বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বিত তালিকা সর্বশেষ
- মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ
- বেসামরিক গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা
- জামুকা গেজেট তালিকা
মুক্তিযুদ্ধের খেতাব কয়টি ও কি কি?
স্বাধীনতার মহান যুদ্ধে, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অদম্য সাহস ও ত্যাগের স্মরণে প্রদান করা হয়েছিল চারটি খেতাব। এই খেতাব গুলো কেবল সম্মানের প্রতীকই নয়, বরং জাতির কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। আর মুক্তিযুদ্ধের সকল খেতাব গুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। যেমন,
১. বীরশ্রেষ্ঠ
মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ বীরত্বের জন্য প্রদত্ত খেতাব। মাত্র ৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এই অসামান্য সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। তাদের অসাধারণ সাহস ও ত্যাগ জাতির ইতিহাসে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
২. বীর উত্তম
বীরশ্রেষ্ঠের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বীরত্বের জন্য প্রদত্ত খেতাব। মুক্তিযুদ্ধে মোট ৬৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এই খেতাব পেয়েছেন। তাদের বীরত্বের গাথা জাতির স্বাধীনতার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা।
৩. বীর বিক্রম
বীর উত্তমের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ বীরত্বের জন্য প্রদত্ত খেতাব। মুক্তিযুদ্ধে মোট ২৭১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এই খেতাব পেয়েছেন। তাদের বীরত্ব ও ত্যাগ জাতির কাছে চিরকৃতজ্ঞতার দাবিদার।
৪. বীর প্রতীক
বীরত্বের জন্য প্রদত্ত চতুর্থ সর্বোচ্চ খেতাব। মুক্তিযুদ্ধে মোট ৩০৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এই খেতাব পেয়েছেন। তাদের বীরত্বের প্রতি জাতির কৃতজ্ঞতা সর্বদাই বিরাজমান থাকবে।
তবে এই খেতাব গুলো ছাড়াও, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল ব্যক্তিদের “মুক্তিযোদ্ধা” খেতাব দেওয়া হয়। তাদের অবদানের ফলে আমরা পেয়েছি স্বাধীন দেশ। তাই এই সকল বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে আজীবন।
মুক্তিযুদ্ধের প্রথম বীর উত্তম খেতাব প্রাপ্ত কে?
বীরত্বের প্রতীক, স্বাধীনতার সৈনিক ক্যাপ্টেন (অব.) মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, মুক্তিযুদ্ধের প্রথম বীর উত্তম খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪২ সালে বরিশালের গৌরনদীতে জন্মগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করে মুক্তিবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালের ৮ এপ্রিল, ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি অসামান্য বীরত্ব প্রদর্শন করেন।
আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা
আজকের আর্টিকেলে মুক্তিযোদ্ধা MIS তালিকা অনুসন্ধান করার পদ্ধতি দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাদের অসামান্য ত্যাগ ও বীরত্বের ফলে আমরা পেয়েছি স্বাধীন দেশ। তাই তাদের স্মৃতি ধারণ করা এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা আমাদের সকলের কর্তব্য।