হলিক্রস কলেজ কোথায় অবস্থিত?
হলিক্রস কলেজ, ঢাকা শহরের তেজগাঁও এলাকায় অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এখানে শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র একাডেমিক শিক্ষা নয়, বরং সামাজিক ও ব্যক্তিগত উন্নয়নের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা পায়। আধুনিক শিক্ষা প্রযুক্তি এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের মিশ্রণে তৈরি এ প্রতিষ্ঠানটি মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের তৈরি করে চলেছে। এখানে পড়াশোনা করার জন্য খুবই উন্নত সুবিধা রয়েছে, পাশাপাশি কলেজের মাসিক বেতন কাঠামো এবং হোস্টেল সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত জানার মাধ্যমে আপনি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদান করার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
হলিক্রস কলেজ কোথায় অবস্থিত?
হলি ক্রস কলেজ, ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় অবস্থিত একটি সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি মেয়েদের জন্য একটি ক্যাথলিক উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যা শিক্ষার ক্ষেত্রে তার শক্তিশালী ঐতিহ্য এবং একাডেমিক মানের জন্য পরিচিত। কলেজটি বছরের পর বছর ধরে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের তৈরি করেছে, যারা নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
এটি একটি বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থা প্রদান করে, যেখানে একদিকে আধুনিক শিক্ষা প্রযুক্তির ব্যবহার, অন্যদিকে ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। শিক্ষার্থীরা এখানে শুধু পাঠ্যবই থেকে শিক্ষা নেয় না, বরং তাদের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্যও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা পায়। কলেজটির শিক্ষার পরিবেশ অত্যন্ত শৃঙ্খলিত ও মনোযোগী, যা প্রতিটি শিক্ষার্থীকে তার লক্ষ্য অর্জনের পথে উৎসাহিত করে।
হলি ক্রস কলেজের ক্যাম্পাসটি প্রশস্ত এবং অত্যাধুনিক সুবিধা সমৃদ্ধ। এখানে ছাত্রীরা নিজেদের প্রতিভা বিকাশের জন্য নানা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে। কলেজটি একটি বন্ধুত্বপূর্ণ এবং নিরাপদ পরিবেশ প্রদান করে, যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য সম্পূর্ণ স্বাধীনতা অনুভব করে।
আরো পড়ুনঃ হলিক্রস কলেজে পড়ার খরচ
হলিক্রস কি মেয়েদের কলেজ?
হলিক্রস কলেজ ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা পবিত্র ক্রুশ সংঘের (হলি ক্রস) সিস্টারদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৫০ সালে, ভারতের ভাগের পর ঢাকার আর্চবিশপ লরেন্স গ্রেইনার, সিএসসি, পূর্ব পাকিস্তানে মেয়েদের শিক্ষা প্রসারে বিশেষভাবে উদ্যোগী হন এবং পবিত্র ক্রুশ সংঘের সিস্টারদের উদ্দেশ্যে একটি মেয়েদের কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য অনুরোধ জানান। এই অনুরোধের ফলস্বরূপ, ১ নভেম্বর ১৯৫০ সালে মাত্র পাঁচ জন ছাত্রী নিয়ে হলিক্রস কলেজের যাত্রা শুরু হয়।
কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় থেকে মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এর উদ্দেশ্য ছিল মেয়েদের জন্য এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে তারা শুধু একাডেমিক শিক্ষা পাবে না, বরং তাদের সমাজে একটি শক্তিশালী ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে। কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বহু শিক্ষার্থী এই প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে তাদের দক্ষতা এবং জ্ঞানের ভিত্তিতে সফলতা অর্জন করেছে।
হলিক্রস কলেজ আজও নারীদের শিক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে এবং এর সুনাম দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। একাডেমিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সকল ক্ষেত্রে এই কলেজের ছাত্রীরা নিজেকে সফলভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এর ঐতিহ্য এবং মানসম্পন্ন শিক্ষা পরিবেশ বর্তমানে দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মেয়েদের কলেজ হিসেবে এটি পরিচিত।
আরো পড়ুনঃ ঢাকার কোন কোন কলেজে হোস্টেল আছে?
হলিক্রস কলেজের মাসিক বেতন কত?
হলিক্রস কলেজ একটি উচ্চমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেখানে উচ্চমানের শিক্ষাদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য কলেজের মাসিক বেতন কাঠামো স্পষ্ট। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য মাসিক বেতন ৫০০০ টাকা, যা দুই মাসের জন্য একসাথে পরিশোধ করতে হয়। এই বেতন একটানা দুই মাসের জন্য ২৫০০ + ২৫০০ টাকা হিসেবে নির্ধারিত।
যারা হলিক্রস কলেজে পড়াশোনা করতে চান এবং দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন, তাদের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রিত হোস্টেল সুবিধাও রয়েছে। যদিও হোস্টেলের খরচ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করা হয়নি, তবে এ ধরনের আবাসিক সুবিধা কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক বড় সুবিধা। হোস্টেল থাকা শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনা ও দৈনন্দিন জীবনকে আরও সহজ এবং সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করতে পারবে।
আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা
হলিক্রস কলেজ একটি প্রতিষ্ঠিত এবং সম্মানিত মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা উচ্চমানের একাডেমিক শিক্ষা, সামাজিক দায়িত্বশীলতা, এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি মেয়েদের শিক্ষা এবং তাদের সামাজিক ভূমিকা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
কলেজটির শৃঙ্খলিত পরিবেশ এবং আধুনিক সুবিধা শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ও একাডেমিক উন্নয়নে সহায়ক। এর সুনাম দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে এবং এটি নারীদের শিক্ষায় এক অনন্য স্থান অধিকার করে আছে। এর মানসম্মত শিক্ষা ও সঠিক দিকনির্দেশনা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সাফল্যের পথে চালিত করে।