কোপা আমেরিকার ইতিহাস (আপডেটেড)

History of Copa America: আমরা সকলেই জানি যে, কোপা আমেরিকা হলো অন্যান্য ফুটবল প্রতিযোগীতা গুলোর মধ্যে অন্যতম। আর সে কারণে আমরা অনেকেই কোপা আমেরিকা সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় জানতে চাই। তো তাদের মধ্যে অনেকে কোপ আমেরিকার ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চায়। মূলত তাদের উদ্দেশ্যে আজকের আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে।

তো আপনি যদি কোপা আমেরিকার ইতিহাস সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে চান। তাহলে আপনাকে আজকের পুরো লেখাটি মন দিয়ে পড়তে হবে। চলুন আর দেরী না করে সরাসরি মূল আলোচনা তে ফিরে যাওয়া যাক।

কোপা আমেরিকার ইতিহাস সম্পর্কে জেনে নিন

আপনি যদি বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় ফুটবল প্রতিযোগীতা কোপা আমেরিকার শুরুর দিকের ইতিহাস দেখেন। তাহলে লক্ষ্য করতে পারবেন যে, ১৮৫৯ সালে পেরুতে “লিমা ক্রিকেট অ্যান্ড ফুটবল ক্লাব” নামের একটি ফুটবল দলের সূচনা হয়েছিলো। আর তার পরবর্তী সময়ে অর্থ্যৎ ১৮৯৩ সালে পুনরায় “আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন” এর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো।

তবে আমরা সকলেই জানি যে, বিংশ শতাব্দির প্রথম সময়ে ফুটবল খেলা ক্রমাগত ভাবে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছিলো। আর সে কারণে উক্ত মহাদেশের মধ্যে যে সকল জাতীয় ফুটবল দল ছিলো। তাদের মধ্যে ১৯১০ সালে বিশেষ এক ধরনের ফুটবল প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়েছিলো।

আর বলে রাখা ভালো যে, ঠিক একই সময়ে “মে বিপ্লব” এর শতবর্ষ স্বরন হিসেবে আরো একটি ফুটবল প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়। তো উক্ত প্রতিযোগীতায় চিলি এবং উরুগুয়ে অংশগ্রহন করলেও। উক্ত ফুটবল প্রতিযোগীতাতে কনমেবল অংশগ্রহন করার সম্মতি প্রদান করেনি।

কিন্তুু তার পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতার শতবর্ষ পূরণ হওয়ার কারণে আর্জেন্টিনা ১৯১৬ সালে আরো একটি ফুটবল প্রতিযোগীতার আয়োজন করে। যার প্রথম নাম দেওয়া হয়েছিলো, “কাম্পেওনাতো সুদামেরিকানো দে ফুতবল”। মূলত এই প্রতিযোগীতা কে বর্তমানে আমরা কোপা আমেরিকা বলে থাকি। আর এই প্রথম আসলে উরুগুয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছিলো।

তো যখন কাম্পেওনাতো সুদামেরিকানো দে ফুতবল প্রতিযোগীতা ব্যাপক ভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। তখন উরুগুয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েনশন এর একজন সদস্য একটি কনফেডারেশন প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

আরো পড়ুনঃ কোপা আমেরিকা কত বছর পর পর হয়?

কোপা আমেরিকার নামকরন এর ইতিহাস

উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম যে, প্রায় ১৯১৬ সাল থেকে কোপা আমেরিকার যাত্রা শুরু হয়েছিলো। তবে যখন এই ফুটবল প্রতিযোগীতার প্রথম যাত্রা শুরু হয়েছিলো, তখন এর নাম ছিলো দক্ষিন আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপ।

কিন্তুু শুরুর দিকে এই ফুটবল প্রতিযোগীতার বিভিন্ন নাম থাকলেও। ১৯৭৫ সালের মধ্যে উক্ত ফুটবল প্রতিযোগীতার নাম দেওয়া হয়, কোপা আমেরিকা। আর আপনি হয়তবা বেশ ভালো করেই জানবেন যে, কোপা আমেরিকা হলো বর্তমান সময়ের মধ্যে অধিক জনপ্রিয় একটি ফুটবল প্রতিযোগীতা। আর সময় এর সাথে সাথে এই ফুটবল প্রতিযোগীতার জনপ্রিয়তা আরো ক্রমাগত ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কোপা আমেরিকার বিশৃঙ্খলার ইতিহাস

প্রায় ১৯৩০ সালে উরুগুয়েতে সর্বপ্রথম বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়েছিলো। আর সেই সময়ে আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশন এর সাথে উরুগুয়ে ফুটবল ফেডারেশন এর মধ্যে শত্রুতার শুরু হয়। আর সে কারণে এই দুটি ফুটবল দলের সাথে একে অপরের উপস্থিতি নিয়ে বেশ ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছিলো।

আর তাদের মধ্যে থাকা এই শত্রুতাকে শেষ করার জন্য ১৯৩৫ সালে একটি বিশেষ সংস্করন এর আয়োজন করা হয়। যেটি মূলত ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত কার্যকর ছিলো। এবং সেই একই সময়ে উক্ত প্রতিযোগীতার আয়োজক দেশ হিসেবে নিযুক্ত ছিলো পেরু। বলে রাখা ভালো যে, সেই খেলার মধ্যে পেরু আয়োজক দেশ হওয়ার পাশাপাশি উক্ত খেলায় চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছিলো।

কোপা আমেরিকার আয়োজক দেশের নামের তালিকা

আপনারা হয়তবা বেশ ভালো করেই জানবেন যে, ২০০৫ সাল থেকে কোপা আমেরিকার নিজস্ব মাস্কট ও লোগো রয়েছে। এছাড়াও আমাদের আরো একটা বিষয় জেনে রাখা দরকার। সেটি হলো, ১৯৮৭ সালের আসরের মাস্কট গারদেলিতো হচ্ছে কোপা আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম মাস্কট।

তো এবার আমি আপনাকে কোপা আমেরিকার আয়োজক দেশের নাম গুলো সম্পর্কে বলবো। অর্থাৎ ১৯১৬ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কোন দেশ কত সালে এই কোপা আমেরিকার আয়োজন করেছিলো। এবার আপনি সেই তথ্য গুলো নিচের তালিকা থেকে দেখে নিতে পারবেন। যেমন,

  1. আর্জেন্টিনাঃ এই দেশটি মোট ৯ বার কোপা আমেরিকার আয়োজন করেছিলো। আর উক্ত সাল গুলো হলো, (১৯১৬, ১৯২১, ১৯২৫, ১৯২৯, ১৯৩৭, ১৯৪৬, ১৯৫৯, ১৯৮৭, ২০১১) সাল। 
  2. উরুগুয়েঃ এই দেশটি মোট ৭ বার কোপা আমেরিকার  আয়োজন করেছিলো। আর উক্ত সাল গুলো হলো, (১৯১৭, ১৯২৩, ১৯২৪, ১৯৪২, ১৯৫৬, ১৯৬৭, ১৯৯৫) সাল। 
  3. চিলিঃ এই দেশটি মোট ৭ বার কোপা আমেরিকার আয়োজন করেছিলো। আর উক্ত সাল গুলো হলো,  (১৯২০, ১৯২৬, ১৯৪১, ১৯৪৫, ১৯৫৫, ১৯৯১, ২০১৫) সাল। 
  4. ব্রাজিলঃ এই দেশটি মোট ৬ বার কোপা আমেরিকার আয়োজন করেছিলো। আর উক্ত সাল গুলো হলো, (১৯১৯, ১৯২২, ১৯৪৯, ১৯৮৯, ২০১৯, ২০২১) সাল। 
  5. পেরুঃ মোট ৬ বার কোপা আমেরিকার আয়োজন করেছিলো। আর তাদের আয়োজন করা সাল গুলো হলো,  (১৯২৭, ১৯৩৫, ১৯৩৯, ১৯৫৩, ১৯৫৭, ২০০৪) সাল। 
  6. ইকুয়েডরঃ এই দেশটি মোট ০৩ বার কোপা আমেরিকার আয়োজন করেছিলো। আর উক্ত সাল গুলো হলো, (১৯৪৭, ১৯৫৯, ১৯৯৩) সাল। 
  7. বলিভিয়াঃ কোপা আমেরিকার আয়োজন এর সংখ্যা মোট ০২ বার। আর উক্ত সাল গুলো হলো, (১৯৬৩, ১৯৯৭) সাল।
  8. প্যারাগুয়েঃ মোট ০১ বার, ১৯৯৯ সাল।
  9. কলম্বিয়াঃ মাত্র ০১ বার, ২০০১ সাল।
  10. ভেনেজুয়েলাঃ মাত্র ০১ বার, ২০০৭ সাল।
  11. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রঃ মাত্র ০১ বার, ২০১৬ সাল।

উপরের তালিকা থেকে আপনি কোপা আমেরিকার বিভিন্ন আয়োজক দেশের নাম দেখতে পাচ্ছেন। এছাড়াও তারা কোন সালে এই ফুটবল প্রতিযোগীতার আয়োজন করেছিলো। সেই সাল গুলো উপরের তালিকা তে প্রদান করা হয়েছে।

কোপা আমেরিকা কত বছর পর পর হয়?

এই জনপ্রিয় ফুটবল প্রতিযোগীতা নিয়ে বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন আছে। তবে তার মধ্যে অন্যতম একটি প্রশ্ন হলো, কোপা আমেরিকা কত বছর পরপর অনুষ্ঠিত হয়। তো যারা আসলে উক্ত বিষয় টি সম্পর্কে জানতে চান। তাদের বলে রাখি যে, কোপা আমেরিকা মোট ০৪ বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয়। 

কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন লিস্ট (আপডেট)

এতক্ষনের আলোচনা থেকে আমরা কোপা আমেরিকার ইতিহাস এর পাশাপাশি উক্ত প্রতিযোগীতা সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারলাম। তো এবার আমি আপনাকে কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন লিষ্ট প্রদান করবো। যে তালিকা থেকে আপনি জানতে পারবেন যে, কোন দল কতবার কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছে। যেমন,

  1. উরুগুয়ে ১৫ বার
  2. আর্জেন্টিনা ১৫ বার
  3. ব্রাজিল ০৯ বার
  4. প্যারাগুয়ে ০২ বার
  5. চিলি ০২ বার
  6. পেরু ০২ বার
  7. কলম্বিয়া ০১ বার ও 
  8. বলিভিয়া ০১ বার

তো আপনারা যারা জানতে চান যে, এ পর্যন্ত কোন দল কতবার  কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছে। তাদের জন্য উপরের তালিকা টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কেননা, উপরের তালিকা তে আমি আপনাকে কোপা আমেরিকার আপডেট চ্যাম্পিয়ন লিষ্ট প্রদান করেছি।

কোপা আমেরিকার ইতিহাস নিয়ে আমাদের কিছুকথা

প্রিয় পাঠক, আপনারা যেন বিভিন্ন অজানা বিষয় গুলো সম্পর্কে জানতে পারেন। সে কারণে আমরা এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ে আর্টিকেল পাবলিশ করি। আর সেই ধারবাহিকতায় আজকে আমি আপনাকে কোপা আমেরিকার ইতিহাস জানিয়ে দিয়েছি।

এছাড়াও আজকে আমি কোপা আমেরিকা সম্পর্কে এমন কিছু বলেছি। যেগুলো আপনার জেনে নেওয়া দরকার। তো আশা করি, আজকের আর্টিকেলে শেয়ার করা তথ্য গুলো আপনার জন্য অনেক হেল্পফুল হবে।

তবে যদি আপনার আমাদের লেখা সম্পর্কে কোনো মতামত কিংবা অভিযোগ থাকে। তাহলে সেটি আপনি নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। আর এতক্ষন ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *