বাংলাদেশের সেরা সরকারি কলেজের তালিকা
বাংলাদেশের সেরা সরকারি কলেজ গুলো দেশের শিক্ষার ঐতিহ্য ও গর্বের প্রতীক। এই কলেজ গুলো দীর্ঘ ইতিহাসের ধারক এবং শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে অবিচ্ছেদ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। একদিকে যেমন এই প্রতিষ্ঠান গুলো আধুনিক শিক্ষার চাহিদা পূরণে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তেমনি তাদের ঐতিহ্য ও মানসম্মত শিক্ষার মাধ্যমে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে আলোকিত করছে।
বিজ্ঞান, মানবিক এবং বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষায় সমৃদ্ধ এসব কলেজ এখন আধুনিক সুবিধা যেমন বিজ্ঞান ল্যাবরেটরি, কম্পিউটার ল্যাব, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং আধুনিক গ্রন্থাগারের সুবিধায় শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করছে। এখানে আমরা বাংলাদেশের সেরা সরকারি কলেজ গুলোর তালিকা তুলে ধরা হলো।
বাংলাদেশের সেরা সরকারি কলেজের তালিকা
বাংলাদেশের অনেক সরকারি কলেজই দীর্ঘ ইতিহাসের ধারক। শতাব্দী প্রাচীন এই প্রতিষ্ঠান গুলো দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তি গড়ে তুলেছে। একদিকে যেমন তারা ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করে, অপর দিকে আধুনিক শিক্ষার চাহিদা মেটাতে নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। বিজ্ঞান ল্যাবরেটরি, কম্পিউটার ল্যাবরেটরি, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং আধুনিক গ্রন্থাগারের মতো সুযোগ সুবিধা এখন স্বাভাবিক ভাবেই এই কলেজ গুলোতে পাওয়া যায়। চলুন এবার বাংলাদেশের সেরা সরকারি কলেজের তালিকা দেখে নেওয়া যাক।
01-রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী
১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী কলেজ দেশের তৃতীয় প্রাচীনতম কলেজ হিসেবে খ্যাত। রাজশাহী শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষাদান করে। এটি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো মাস্টার্স ডিগ্রি প্রদানের সূচনা করে, যা এক অনন্য অর্জন। ২০১৫ সালের তথ্য অনুযায়ী, এটি দেশের সেরা কলেজের স্বীকৃতি লাভ করে। দীর্ঘদিন উচ্চ মাধ্যমিক ভর্তি বন্ধ থাকার পর ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে তা পুনরায় চালু হয়। ২০২৪ সালে এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়, যা এর মর্যাদাকে আরও বৃদ্ধি করেছে।
02-সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ, বরিশাল
বরিশালের ঐতিহ্যবাহী ব্রজমোহন কলেজ, যা বি.এম কলেজ নামে পরিচিত, শিক্ষা ও সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল প্রতীক। ১৮৮৯ সালে সমাজসেবক অশ্বিনীকুমার দত্ত প্রতিষ্ঠিত এই কলেজ একসময় দক্ষিণ বাংলার অক্সফোর্ড হিসেবে খ্যাত ছিল। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত এই প্রতিষ্ঠান স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৪৩টি বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করছে।
কলেজ প্রাঙ্গণে লাইব্রেরি, অডিটোরিয়াম, মসজিদ, মন্দির এবং তিনটি খেলার মাঠ রয়েছে। মনোমুগ্ধকর পরিবেশে তিনটি দিঘি এবং জীবনানন্দ ক্যাফে এর সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ছাত্রদের জন্য তিনটি এবং ছাত্রীদের জন্য একটি আধুনিক হোস্টেলসহ ডিবেটিং ক্লাব ও অন্যান্য কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের বহুমুখী উন্নয়নে সহায়ক।
আরো পড়ুনঃ ঢাকার সেরা বেসরকারি কলেজের তালিকা
03-সরকারি আজিজুল হক কলেজ, বগুড়া
সরকারি আজিজুল হক কলেজ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বগুড়া শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানটি দেশের উত্তরাঞ্চলের শিক্ষার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত এবং উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুযোগ প্রদান করে। উত্তরবঙ্গের বৃহৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে এটি শুধু একাডেমিক সাফল্যেই নয়, বরং ঐতিহ্যবাহী মর্যাদায়ও সমৃদ্ধ। “উত্তরবঙ্গের আলো” নামে পরিচিত এই কলেজটি প্রজন্মের পর প্রজন্ম শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে।
04-সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, পাবনা
বাংলাদেশের পাবনা জেলায় অবস্থিত সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ একটি ঐতিহাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৮৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি গোপাল চন্দ্র লাহিড়ীর দূরদৃষ্টি ও অবদানকে স্মরণ করিয়ে দেয়। অবিভক্ত ব্রিটিশ বাংলার সময় থেকে আজ পর্যন্ত শিক্ষার আলো ছড়িয়ে, এটি অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থীর সাফল্যের পথ প্রশস্ত করেছে। ঐতিহ্য, মানসম্মত শিক্ষা এবং সমৃদ্ধ ইতিহাসের মিশ্রণ এডওয়ার্ড কলেজ শিক্ষার্থীদের মাঝে জ্ঞানের প্রতিচ্ছবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
05-কারমাইকেল কলেজ, রংপুর
কারমাইকেল কলেজ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যা ১৯১৬ সালে রংপুরের লালবাগ এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়। লর্ড কারমাইকেলের নামানুসারে নামকরণ করা এই কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক থেকে শুরু করে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার সুযোগ রয়েছে। এখানে বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য শাখায় শিক্ষার্থীরা সমৃদ্ধ জ্ঞান অর্জন করে। বর্তমানে ২১,৫২২ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত, যা এর বিশাল পরিসরের প্রমাণ। যদিও ২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর উন্নীতকরণের আইন পাস হয়, তবে তা এখনও কার্যকর হয়নি। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার বন্ধনে এই প্রতিষ্ঠান দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে।
06-সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, ঢাকা
পুরান ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। উচ্চ মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত শিক্ষার সুব্যবস্থায় সমৃদ্ধ এ কলেজটি ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭টি সরকারি কলেজের অন্যতম। ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এই প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যুক্ত হয়, যা এর শিক্ষা কার্যক্রমকে আরও আধুনিক ও মানসম্মত করেছে। শিক্ষার্থীদের জন্য এখানে রয়েছে চমৎকার একাডেমিক পরিবেশ, যা তাদের ভবিষ্যৎ গড়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
07-ওমর গণি এম ই এস কলেজ, চট্টগ্রাম
ওমরগণি এম. ই. এস. কলেজ চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ এলাকায় জাকির হোসেন রোডে অবস্থিত একটি বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যা ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজটি উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষাদানের জন্য সুপরিচিত এবং “এম ই এস কলেজ” নামে ব্যাপক পরিচিত। এটি চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্র জিইসি মোড়ের কাছাকাছি অবস্থান করছে। বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা এবং মানবিক বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার পাশাপাশি ডিগ্রি এবং স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর কোর্স করার সুযোগ রয়েছে। প্রতিবছর প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী এখান থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। শিক্ষার পাশাপাশি এটি ছাত্র রাজনীতির ক্ষেত্রেও বিশেষভাবে আলোচিত।
আরো পড়ুনঃ ঢাকার সরকারি অনার্স কলেজের তালিকা
08-ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সরকারি কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্যতম স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত, যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে মাত্র কয়েক মিনিটের দূরত্বে। দীর্ঘ ঐতিহ্যের অধিকারী এই কলেজটি শিক্ষার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত এই প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুত করার পাশাপাশি মূল্যবোধ সম্পন্ন নাগরিক গঠনে সহায়তা করছে। আকর্ষণীয় স্থাপনা এবং শহরের প্রাণকেন্দ্রে এর অবস্থান শিক্ষার্থীদের জন্য সহজলভ্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
09-লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ, লক্ষ্মীপুর
লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ, যা সংক্ষেপে এলজিসি নামে পরিচিত, লক্ষ্মীপুরে অবস্থিত একটি সম্মানিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে একাদশ শ্রেণি থেকে স্নাতক পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত শিক্ষার সুযোগ রয়েছে। ছেলেমেয়ে উভয়ের জন্য উন্মুক্ত এই কলেজটি শিক্ষার ক্ষেত্রে আধুনিক পদ্ধতি ও মানসম্মত শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত। বর্তমানে মুহাম্মদ মঞ্জুরুর রহমান কলেজটির অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ ও ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে কলেজটি একটি নির্ভরযোগ্য স্থান হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।
10-পটিয়া সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় অবস্থিত পটিয়া সরকারি কলেজ একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজটি শিক্ষার গুণগত মান বজায় রেখে ছাত্রছাত্রীদের জীবনে আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার ফলে এটি উচ্চ শিক্ষার নির্ভরযোগ্য কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। অত্যাধুনিক শিক্ষার সুযোগ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এ কলেজটি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত দক্ষতা উন্নত করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছে।
11-সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ, চট্টগ্রাম
সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, চট্টগ্রামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা তার দীর্ঘ ঐতিহ্য ও শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পরিচিত। কলেজটি চট্টগ্রাম শহরের কলেজ রোডে অবস্থিত এবং চট্টগ্রাম কলেজের বিপরীতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এটি পরিবেষ্টিত একটি সুন্দরের প্রাকৃতিক দৃশ্য দ্বারা, যা ছাত্রদের জন্য এক অনুপ্রেরণামূলক পরিবেশ সৃষ্টি করে। এই কলেজের পর্তুগীজ ভবন শহরের অন্যতম প্রাচীন স্থাপনা। বর্তমানে এটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়ে উচ্চমাধ্যমিক এবং স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষা প্রদান করছে।
12-ফেনী সরকারি কলেজ, ফেনী
ফেনী সরকারি কলেজ, বাংলাদেশের ফেনী জেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার অন্যতম পুরানো কলেজ হিসেবে এটি একে অপরকে জানিয়ে দেয় শিক্ষা ও সংস্কৃতির গভীরতা। ১৯২২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজটি স্নাতক, স্নাতকোত্তরসহ উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষাদান করে আসছে। ফেনী শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এই কলেজটির আদি ইতিহাস ও শিক্ষাদানে অবদান একে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান করে তুলেছে।
13-সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ, কুমিল্লা
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, প্রতিষ্ঠিত ১৮৯৯ সালে, কুমিল্লা জেলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও জমিদার রায় বাহাদুর আনন্দচন্দ্র রায়ের উদ্যোগে, যিনি যুক্তরাজ্যের রাণী ভিক্টোরিয়ার সম্মানে এর নামকরণ করেছিলেন। দীর্ঘ ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অধিকারী এই কলেজটি বর্তমানে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত, এবং এখানকার শিক্ষার্থীরা সুশিক্ষিত হয়ে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এটি কুমিল্লা অঞ্চলের শিক্ষার উৎকর্ষের প্রতীক হিসেবে স্বীকৃত।
14-চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ, চট্টগ্রাম জেলার প্রথম সরকারি মহিলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশেষ পরিচিত। ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজটি দীর্ঘ সময় ধরে মেয়েদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে, এটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হয়ে আধুনিক শিক্ষা ও উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষতার বিকাশে সহায়তা করছে। শিক্ষা, ঐতিহ্য, এবং উন্নতির সংমিশ্রণে এই প্রতিষ্ঠানটি আজও জেলার শিক্ষার অন্যতম প্রাচীন ও সম্মানজনক জায়গা হিসেবে স্বীকৃত।
আরো পড়ুনঃ ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক অর্থনীতি কাকে বলে | Micro and Macroeconomics
15-কবি নজরুল সরকারি কলেজ, ঢাকা
কবি নজরুল সরকারি কলেজ বাংলাদেশের অন্যতম পুরনো ও মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৮৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজটি দীর্ঘ ইতিহাসে অনেক শিক্ষার্থীকে আলোকিত করেছে। ১৯৯২ সাল থেকে এটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হলেও ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা, সংস্কৃতি, এবং ঐতিহ্যের অনন্য মিলনস্থল হিসেবে পরিচিত, যা বর্তমানে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি।
16-সরকারি বাঙলা কলেজ, ঢাকা
সরকারি বাঙলা কলেজ, ঢাকা শহরের মিরপুরে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজটি বাংলা ভাষার শিক্ষার প্রতি আগ্রহ এবং চাহিদার ফলস্বরূপ প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রদান করলেও, ১৯৮৫ সালে সরকারিকরণ এবং ১৯৯৭ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তির মাধ্যমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।
২০১৭ সাল থেকে এই কলেজটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়ে শিক্ষাদানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ২৫ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই কলেজ শিক্ষার মান ও সংস্কৃতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
17-সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা
তিতুমীর কলেজ, ঢাকা শহরের মহাখালী এলাকায় অবস্থিত একটি পুরনো ও স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৯৬৮ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে শুরুতে ‘জিন্নাহ কলেজ’ নামে পরিচিত ছিল। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এর নাম পরিবর্তন করা হয় তিতুমীর কলেজ। কলেজটি ১১ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিনটি প্রধান অনুষদে শিক্ষা প্রদান করে। বর্তমানে এখানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ২৩টি বিভাগে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য একটি মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
18-সরকারি সাদত কলেজ, টাঙ্গাইল
সরকারি সা’দত কলেজ, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া এলাকায় অবস্থিত একটি প্রাচীন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঢাকা-টাঙ্গাইল রোডের পাশে, ঢাকার থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ও টাঙ্গাইল শহর থেকে ৭ কিলোমিটার পূর্বে এর অবস্থান। ৩৮ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই কলেজ দেশের শিক্ষা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে, এটি বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের আধুনিক ও মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করছে। এর ইতিহাস ও অর্জন গর্বিত করে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গঠনে সাহায্য করছে।
আরো পড়ুনঃ অর্থনৈতিক খাত কাকে বলে | Economic sector
19-সরকারি আনন্দমোহন কলেজ, ময়মনসিংহ
আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ শহরে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী সরকারি মহাবিদ্যালয়। ১৮৮০ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত, এটি দক্ষিণ এশিয়ার প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর একটি। কলেজটি বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক এবং স্নাতক স্নাতকোত্তর কোর্স পরিচালনা করছে, যা ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। ২০২৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলেজে মোট ২৪,৯৮৭ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছেন। এ প্রতিষ্ঠানের শৈক্ষিক উৎকর্ষতা এবং ঐতিহ্য স্থানীয় এবং জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
20-চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম কলেজ বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং সম্মানিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই কলেজটি চট্টগ্রাম শহরের চকবাজারে, কলেজ রোডে অবস্থিত। এটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত, এবং ঢাকা কলেজের পর এটি দেশের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠিত কলেজ হিসেবে খ্যাত। দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে চট্টগ্রাম কলেজ, যা শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে বিশেষ সহায়তা প্রদান করে। ইতিহাসে ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ এই কলেজের শিক্ষার মান এবং আভ্যন্তরীণ পরিবেশ শিক্ষার্থীদের উন্নতির পথে এগিয়ে নিতে অবিচ্ছেদ্য অংশ।