সার্বিয়া কি সেনজেন ভুক্ত দেশ?

সার্বিয়ার নাগরিকদের জন্য ইউরোপে অবাধ ভ্রমণের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত হতে চলেছে। কারণ, ২০২৫ সালের মধ্যে সেনজেন অঞ্চলে যোগদানের আশায় সার্বিয়া ২০১৯ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে আবেদন করেছে।

যদিওবা সার্বিয়া এখনো সেনজেনের অংশ না, তবে ভিসার মাধ্যমে সার্বিয়ার নাগরিকরা শেনজেন অঞ্চলে প্রবেশ করতে পারবেন। এছাড়াও পূর্বের তুলনায় বর্তমানে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া অনেক সহজ হয়েছে। সার্বিয়ান নাগরিকরা এখন অনলাইনে বা কোন ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাস বা কনস্যুলেট থেকে ভিসা আবেদন করতে পারবে।

সার্বিয়া কি সেনজেন ভুক্ত দেশ?

এখন পর্যন্ত সার্বিয়া সেনজেন অঞ্চলে যুক্ত হতে পারেনি। তবে সার্বিয়া সেনজেন ভুক্ত দেশ হওয়ার জন্য চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কারণ, সার্বিয়া ২০১২ সালের ২২ ডিসেম্বর সেনজেন অঞ্চলে যোগদানের জন্য আবেদন করেছিলো। 

সার্বিয়ার জন্য সেনজেন অঞ্চলে যোগদান করাটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এর কারণ সেনজেন ভুক্ত অঞ্চলে যুক্ত হতে পারলে এই দেশটির অর্থনীতি খাতে দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা আনবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তাই অনুমান করা হচ্ছে যে, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে সার্বিয়া সেনজেন ভুক্ত দেশ হিসেবে যুক্ত হতে পারবে। 

সার্বিয়া মুসলিম জনসংখ্যা কত?

১৪৫৯-১৮৭৮ সালে অটোমান সাম্রাজ্যের শাসনামলে এই অঞ্চলে ইসলাম ধর্মের যাত্রা শুরু হয়েছিলো। বসনিয়া, কসোভো ও মন্টেনেগ্রোর সীমান্ত ঘেঁষা সার্বিয়ার স্যান্ডজাক রাজ্যে বসবাস করে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার মুসলিম। মোট জনসংখ্যার ৩.১% নিয়ে তারা দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সম্প্রদায়। 

আর বর্তমান সময়ে সার্বিয়ার মুসলিমরা তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধরে রেখেছেন। এই দেশে মোট জনসংখ্যার মধ্যে যতোগুলো মুসলিম আছেন তাদের বেশিরভাগই সুন্নি মুসলিম।

সার্বিয়া কি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত?

সার্বিয়া, দীর্ঘদিন ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দরজায় কড়া নাড়ছে। ২০০৯ সালে সদস্যপদ পাওয়ার জন্য আবেদন করার পর থেকে, এখনও দীর্ঘ আলোচনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর প্রার্থীর মর্যাদা লাভের পর থেকে, সার্বিয়া ইইউ-এর সাথে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করছে। তাদের আইন ও নীতি গুলোকে ইইউ-এর মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে।

তবে সার্বিয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদান করার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ অবশ্যই রয়েছে। কসোভোর সাথে সম্পর্কের টানাপোড়া এবং অপরাধীদের বিচারের মতো বিষয় গুলো এখনও সমাধান করা হয়নি। কিন্তুু তারপরও সার্বিয়ার লক্ষ্য হলো ২০২৫ সালের মধ্যে ইইউ-তে যোগদান করা। তবে, সম্ভাবনা নির্ভর করছে আলোচনার ফলাফলের উপর।

এটা সত্যি যে ইইউ-তে যোগদান করলে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। যা সার্বিয়ার অর্থনীতির জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। সার্বিয়ার বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। তবে, ইইউ তে যোগদান করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু উদ্বেগও রয়েছে। কারণ অনেকে মনে করেন, ইইউ-তে যোগদানের ফলে সার্বিয়ার স্বাধীনতা হ্রাস পাবে।

সুইজারল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য নয় কেন?

ইউরোপের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সুইজারল্যান্ড, তার মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং অত্যাধুনিক অর্থনীতির জন্য বিখ্যাত। কিন্তু এই দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অংশ নয়, যা অনেকের কাছে অদ্ভুত মনে হতে পারে।

১৯৯২ সালে, সুইজারল্যান্ড ইইউ-এর পূর্বসূরি, ইউরোপীয় অর্থনৈতিক এলাকা (EEA)-তে যোগদানের জন্য একটি গণভোট অনুষ্ঠিত করে। ভোটের ফলাফল ছিল অত্যন্ত কাছাকাছি, ৫০.৩% ভোটার EEA-তে যোগদানের বিপক্ষে ভোট দেয়। এর ফলে সুইস সরকার ইইউ সদস্যপদের জন্য আলোচনা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়।

২০১৬ সালে, সুইজারল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে ইইউ সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহার করে নেয়। এর পেছনে বেশ কিছু কারণ ছিল। তারমধ্যে অন্যতম কারণ হলো, ইইউ সদস্যপদ পেলে বহু বিষয়ে সুইস সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা হ্রাস করবে বলে মনে করা হয়েছিল। এছাড়াও সুইজারল্যান্ড ঐতিহাসিক ভাবে নিরপেক্ষ এবং স্বাধীন রাষ্ট্র। তাই ইইউ-এর নিয়ন্ত্রণের অধীনে আসতে অনেক সুইস নাগরিক অনিচ্ছুক ছিলেন।

আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা

প্রিয় পাঠক, এখন পর্যন্ত সার্বিয়া সেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকায় জায়গা করে নিতে পারেনি। আর আজকের আর্টিকেলে উক্ত বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করা হয়েছে। তো আশা করি, আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি অনেক অজানা বিষয় জানতে পেরেছেন। আর ধন্যবাদ, এতক্ষন ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। 

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *