সম্পূর্ণ সরকারি খরচে এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিদেশ যাওয়ার সহজ গাইড

অনেকেই চান বিদেশে যেতে, কিন্তু দালালের খপ্পরে পড়ে টাকা ও সময় দুই-ই নষ্ট হয়। অথচ বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব একটি সংস্থা আছে যাদের মাধ্যমে আপনি দালাল ছাড়াই, স্বচ্ছ ও সঠিক উপায়ে, সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিদেশে যেতে পারেন। সংস্থাটির নাম BOESL (Bangladesh Overseas Employment and Services Limited)।

এই ব্লগে আমরা বোয়েসেলের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটি সহজভাবে বুঝিয়ে দেব, যেন আপনি নিজের মতো করে আবেদন করতে পারেন।

বোয়েসেল কী?

BOESL হলো বাংলাদেশ সরকারের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান, যা বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দেয়। তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী পাঠিয়ে থাকে।

সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে:

  • এখানে কোনো দালাল লাগে না
  • খরচ অনেক কম
  • সবকিছু সরকারিভাবে হয়, তাই প্রতারণার সুযোগ নেই

কারা বিদেশে যেতে পারেন?

যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক, যাদের বয়স ১৮ বা তার বেশি এবং শারীরিকভাবে সুস্থ।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা বা কাজের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়, আবার অনেক সময়েই কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াও কাজ পাওয়া যায়।

কোথায় কোথায় যেতে পারেন?

BOESL-এর মাধ্যমে আপনি অনেক দেশে যেতে পারেন, যেমন:

  • জাপান
  • দক্ষিণ কোরিয়া
  • জর্ডান
  • সৌদি আরব
  • রোমানিয়া
  • ক্রোয়েশিয়া
  • মরিশাস

    (দেশের তালিকা সময় অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়)

আরো পড়ুনঃ সরকারি ভাবে রোমানিয়া যাওয়ার উপায় ২০২৫

কিভাবে আবেদন করবেন?

ধাপ ১: অনলাইনে নিবন্ধন করুন

প্রথমে brms.boesl.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের একটি প্রোফাইল খুলতে হবে।

এখানে আপনাকে কিছু দরকারি তথ্য দিতে হবে:

  • নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ
  • পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা
  • অভিজ্ঞতা (যদি থাকে)

ধাপ ২: চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখুন

নিবন্ধনের পর, boesl.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে “নোটিশ বোর্ড” বা “চাকরির বিজ্ঞপ্তি” অংশে দেখুন কোন কোন দেশে লোক পাঠানো হচ্ছে।

প্রতিটি বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে বিস্তারিত শর্ত ও আবেদন করার নিয়ম দেওয়া থাকে।

ধাপ ৩: আবেদন করুন

যে দেশের জন্য আপনি যোগ্য, সেই বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া নিয়ম অনুসারে আবেদন করবেন। অনেক সময় অনলাইনে আবেদন করতে হয়, কখনো কখনো সরাসরি কাগজ জমা দিতে হয়।

ধাপ ৪: নির্বাচন ও প্রশিক্ষণ

আবেদন করার পর প্রাথমিক নির্বাচন, মেডিকেল টেস্ট ও দরকার হলে ভাষা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সবকিছু সরকারিভাবে হয়, নির্দিষ্ট ফি ও প্রক্রিয়া অনুযায়ী।

ধাপ ৫: ভিসা ও যাত্রা

সবশেষে, কাজের কাগজ ও ভিসা পাওয়ার পর বোয়েসেল থেকেই বিমান টিকিটের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। আপনি সব কিছু নিশ্চিতভাবে জানতে পারবেন তাদের ওয়েবসাইট ও অফিসিয়াল যোগাযোগ মাধ্যম থেকে।

আরো পড়ুনঃ সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় ২০২৫

কত খরচ পড়ে?

বোয়েসেল-এর মাধ্যমে বিদেশে যেতে খরচ অনেক কম।

অনেক সময় সম্পূর্ণ ফ্রি, আবার কিছু ক্ষেত্রে ন্যূনতম খরচ নেওয়া হয় (যেমন মেডিকেল বা পাসপোর্ট ফি)।

সর্বশেষ খরচ সংক্রান্ত তথ্য আপনি প্রতিটি চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে পেয়ে যাবেন।

সতর্কতা

  • দালালের মাধ্যমে আবেদন করবেন না
  • কেউ যদি বলে “বোয়েসেলের চাকরি আমি পাইয়ে দেব”—তাকে বিশ্বাস করবেন না
  • সব সময় অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও বোয়েসেলের ফেসবুক পেইজ দেখে আপডেট নিন
  • প্রয়োজনে সরাসরি বোয়েসেল অফিসে যোগাযোগ করুন

অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও লিংক

  • আবেদন করার ওয়েবসাইট: https://brms.boesl.gov.bd
  • বোয়েসেলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: https://boesl.gov.bd

উপসংহার

বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন অনেকের। কিন্তু সঠিক তথ্য আর সরকারি পদ্ধতি না জানলে প্রতারণার শিকার হওয়া খুব সহজ।

এই পোস্টে আমরা দেখালাম, কীভাবে আপনি একেবারে সরকারি খরচে এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিদেশে যেতে পারেন, বোয়েসেল-এর মাধ্যমে।

এই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে আপনাকে নিয়মিত সরকারি ওয়েবসাইটে নজর রাখতে হবে। দালালদের এড়িয়ে নিজেই আবেদন করুন—আপনার সুযোগ আপনার হাতেই।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *