বাংলাদেশ থেকে মাত্র ২০ দিনে কিভাবে পর্তুগাল আসবেন – বিস্তারিত জেনে নিন

পর্তুগাল – ইউরোপের এক শান্তিপূর্ণ আর উন্নত দেশ। অনেকেই এখন পর্তুগাল যাওয়ার কথা ভাবছেন, বিশেষ করে যাঁরা ইউরোপে কাজ করতে বা ভালো একটা জীবন গড়তে চান। আপনি কি জানেন, বাংলাদেশ থেকেও মাত্র ২০ দিনের মধ্যে আপনি পর্তুগাল যেতে পারেন? হ্যাঁ, সঠিকভাবে কাজ করলে এটা একদমই সম্ভব। চলুন ধাপে ধাপে জেনে নিই কীভাবে এটা সম্ভব।

১ম ধাপ: পাসপোর্ট রেডি আছে তো?

সবচেয়ে প্রথম কাজ হচ্ছে – আপনার বৈধ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট আছে কিনা সেটা নিশ্চিত করা।

  • পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে আরও ৬ মাস থাকতে হবে।
  • অন্তত ২টি খালি পৃষ্ঠা থাকা দরকার।

যদি আপনার পাসপোর্ট না থাকে, তাহলে এখনই পাসপোর্ট অফিসে আবেদন করে ফেলুন।

বাংলাদেশ থেকে পর্তুগালে ওয়ার্ক পারমিট কিভাবে পাওয়া যায়?

২য় ধাপ: কোন ভিসার জন্য আবেদন করবেন?

পর্তুগালে যেতে হলে সাধারণত তিন ধরনের ভিসা জনপ্রিয়:

  1. শেনজেন ট্যুরিস্ট ভিসা (সর্বোচ্চ ৯০ দিন)
  2. ওয়ার্ক পারমিট ভিসা (নিয়োগপত্র থাকলে)
  3. ডি-টাইপ ভিসা – দীর্ঘমেয়াদি থাকার জন্য, পড়াশোনা বা কাজের জন্য

এই লেখায় আমরা ট্যুরিস্ট বা শর্ট-স্টে ভিসা কিভাবে পাবেন সেটাই ধরেছি, যেটা ২০ দিনের মধ্যে পাওয়া সম্ভব।

৩য় ধাপ: অনলাইনে আবেদন

বাংলাদেশে পর্তুগালের ভিসা সরাসরি VFS Global এর মাধ্যমে প্রসেস করা হয়। আবেদন করতে হবে অনলাইনে:

  • VFS ওয়েবসাইট: https://www.vfsglobal.com
  • এখানে আপনার আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে।
  • আবেদন ফি প্রায় ৮০ ইউরো (ভ্যালু সময়ে ভিন্ন হতে পারে)।
  • আবেদন করার সময় আপনি আপনার অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্লটও বেছে নিতে পারবেন।

পর্তুগাল জব সিকার ভিসা আবেদন

৪র্থ ধাপ: দরকারি কাগজপত্র তৈরি

ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার আগে কিছু ডকুমেন্ট অবশ্যই দরকার হবে:

  • পূরণ করা ভিসা ফর্ম (অনলাইনে)
  • পাসপোর্ট এবং কপি
  • ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট (শেষ ৬ মাস, ব্যালেন্স কমপক্ষে ৩-৫ লাখ টাকা হলে ভালো)
  • কর্মস্থলের NOC (যদি চাকরি করেন)
  • ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স (৩০,০০০ ইউরো কভার করে এমন)
  • হোটেল বুকিং ও ফ্লাইট বুকিং কাগজ

৫ম ধাপ: বায়োমেট্রিক ও কাগজ জমা

  • নির্ধারিত দিনে VFS অফিসে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি তুলতে হবে।
  • সব কাগজপত্র একসাথে জমা দিতে হবে।
  • তারা আপনার সব ডকুমেন্ট চেক করে নেবে।

৬ষ্ঠ ধাপ: অপেক্ষা আর প্রার্থনা!

  • একবার আবেদন জমা হয়ে গেলে, এখন অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।
  • সাধারণত ১৫ কার্যদিবসের মধ্যেই ভিসার রেজাল্ট আসে।
  • আপনি চাইলে VFS এর মাধ্যমে ভিসার স্ট্যাটাস ট্র্যাকও করতে পারবেন।

৭ম ধাপ: ভিসা পেলে কী করবেন?

  • ভিসা পেয়ে গেলে দ্রুত ফ্লাইট বুক করে ফেলুন।
  • হোটেল কনফার্ম করুন।
  • যাবার আগে প্রিন্ট করা কাগজপত্র সঙ্গে রাখুন: পাসপোর্ট, ইনস্যুরেন্স, হোটেল বুকিং, ফ্লাইট টিকিট।

পর্তুগাল কৃষি ভিসা আবেদন করার উপায় 

সংক্ষেপে ২০ দিনের ভিসা যাত্রা

ধাপসময়কাজ
দিন ১পাসপোর্ট চেক
দিন ২ফর্ম পূরণ ও অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক
দিন ৩-৪কাগজপত্র তৈরি
দিন ৫VFS-এ জমা
দিন ৬-১৮ভিসা প্রসেসিং
দিন ১৯-২০পাসপোর্ট সংগ্রহ ও ফ্লাইট

কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:

  • আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট যেন পরিষ্কার ও জেনুইন হয়।
  • সব কাগজপত্র ইংরেজিতে অনুবাদ করা থাকলে ভালো।
  • কারও সহায়তা লাগলে অভিজ্ঞ ট্রাভেল এজেন্টের সাহায্য নিন।

পর্তুগাল যাওয়ার স্বপ্ন আর স্বপ্ন থাকুক না কেন – সেটা পূরণ হোক আপনার সঠিক প্রস্তুতির মাধ্যমে। ধৈর্য, সততা আর পরিকল্পনা থাকলে ২০ দিনের মধ্যেই আপনি ইউরোপের এই সুন্দর দেশে পা রাখতে পারেন।

ভালো থাকবেন, শুভ ভ্রমণ!

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *