মাথাপিছু আয় কাকে বলে?
যখন কোন একটি দেশের মোট আয়কে দিয়ে যখন সেই দেশের মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করা হয়। তখন যে ফলাফল আসবে তাকে বলা হয়, মাথাপিছু আয়। যেমন ধরুন, আমাদের বাংলাদেশ এর মধ্যে থাকা মোট জনসংখ্যাকে যখন মোট আয় দিয়ে ভাগ করা হবে। তখন আমরা আমাদের বাংলাদেশ এর মাথাপিছু আয় বের করতে পারবো।
মাথাপিছু আয় কি? | Matha pichu ay kake bole
মাথাপিছু আয় হিসাব করার জন্য, একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (সাধারণত এক বছর) একটি দেশের মোট জাতীয় আয় (জিডিপি) ঐ দেশের মোট জনসংখ্যার দ্বারা ভাগ করা হয়।
উদাহরণ:
ধরা যাক, একটি দেশের মোট জাতীয় আয় (জিডিপি) ১০০ টাকা এবং জনসংখ্যা ১০ জন।
মাথাপিছু আয় = জিডিপি / জনসংখ্যা = ১০০ টাকা / ১০ জন = ১০ টাকা।
মাথাপিছু আয় কাকে বলে?
মাথাপিছু এই শব্দের একটি অর্থ আছে। আর সেই অর্থটি হলো, প্রতি ব্যক্তি। আর এই মাথাপিছু আয় বলতে নির্দিষ্ট কোন একটি দেশের মধ্যে থাকা মোট জনসংখ্যার প্রতিটি ব্যক্তির আয় কে বোঝানো হয়। তবে মাথাপিছু আয় কি এর বিষয়টি কে আরো একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা যায়। সেটি হলো, নির্দিষ্ট কোন সময়ে নির্দিষ্ট একটি দেশ বা ভৌগলিক অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার গড় আয়কে বলা হয়, মাথাপিছু আয়।
আর কোন একটি দেশের মাথাপিছু আয় মূলত ১ বছর সময়কাল কে নির্ধারন করে বের করা হয়। এবং একটি দেশের মধ্যে বসবাস করা জনসংখ্যার জীবনমান এর উপর নির্ধারন করার নিমিত্তে। সেই দেশ এর প্রতি একজন ব্যক্তির অর্জন করা গড় আয় এর পরিমান কে বলা হয়, মাথাপিছু আয়।
মাথাপিছু আয় এর গুরুত্ব
একটি দেশের জন্য মাথাপিছু আয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারন, মাথাপিছু আয় এর মাধ্যমে একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে ভালোভাবে বিশ্লেশন করা সম্ভব। যেমন ধরুন, আমরা আমাদের বাংলাদেশ এর মাথাপিছু আয় বের করার মাধ্যমে। এই দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সম্পদ এর পরিমান হিসেব নির্ণয় করতে পারবো।
আর যখন একটি দেশের মাথাপিছু আয় এর পরিমান বৃদ্ধি পাবে। তখন সেই দেশে যে সকল মানুষ বসবাস করবে। সেই মানুষ গুলোর জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হবে। কিন্তুু কোন কারণে যদি সেই দেশ এর মানুষের মাথাপিছু আয় এর পরিমান কমে যায়। তাহলে সেই দেশে বসবাস করা মানুষের জীবন যাত্রার মান কয়েকগুন হ্রাস পাবে।
বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় কিভাবে নির্ধারন করা হয়?
উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম, মাথাপিছু আয় কাকে বলে। তো এখন আপনাকে জানতে হবে, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় কিভাবে নির্ধারন করা হয়। তো আমাদের বাংলাদেশ এর মাথাপিছু আয় যেভাবে নির্ধারন করা হয়। এবার আমি আপনাকে সে সম্পর্কে ধারনা দিবো।
দেখুন, প্রথমত আমাদের দেশের মধ্যে উৎপাদন থেকে যে পরিমান আয় করা হয়। সেই মোট আয় এর পরিমান কে রেমিট্যান্স দিয়ে যোগ করা হয়। আর এই পদ্ধতি তে আমাদের দেশের জাতীয় আয় কে বের করা হয়। আর যখন মোট জাতীয় আয় বের করা হয়। তখন উক্ত আয় এর পরিমান কে মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করা হয়। তখন আমাদের দেশের মাথাপিছু আয় নির্ধারন করা হয়।
বাংলাদেশ এর মাথাপিছু আয় কত?
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬২১ ডলার, যেখানে ভারতের তা ২ হাজার ৬১২ ডলার। গর্বের সাথে বলা যায়, ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে ভারতকে ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। ঐ বছর বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ১ হাজার ৮৮৮ ডলার। [তথ্যসূত্রঃ প্রথম আলো]
মাথাপিছু আয় নিয়ে আমাদের কিছুকথা
আপনারা যারা মাথাপিছু আয় কাকে বলে সে সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আশা করি, তারা আজকের আলোচনা থেকে উক্ত বিষয়টি পরিস্কার ভাবে বুঝতে পেরেছেন। আর আপনি যদি অজানা বিষয় গুলো খুব সহজ ভাষায় জানতে চান। তাহলে আমাদের সাথে থাকার চেষ্টা করবেন। ধন্যবাদ।