মাঝারি শিল্প কাকে বলে?
আমরা সেই সকল শিল্পকে মাঝারি শিল্প বলবো যে শিল্পের মধ্যে শ্রমিক সংখ্যার পরিমান হবে মোট ২০০ জন থেকে ৩০০ জন এর মতো। আর এই ধরনের মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলো বেশ কিছু কাজে মোট ২০ কোটি থেকে ৫০ কোটি টাকা ইনভেস্ট করতে হয়। আর যেমন, সম্পত্তি ক্রয় করা, বিল্ডিং তৈরি করা এবং উৎপাদন কাজে ব্যয় করা।
মাঝারি শিল্প কাকে বলে?
What is medium industry: মাঝারি শিল্প সম্পর্কে আমাদের বাংলাদেশ এর বিশেষ আইন আছে। আর সেই আইন এর বর্ণিত তথ্য অনুযায়ী। আমাদের বাংলাদেশ এর মধ্যে যে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান এর নিন্ম বর্ণিত বৈশিষ্ট্য গুলোর মিল থাকবে। সেই শিল্প গুলোকে মাঝারি শিল্প হিসেবে নির্ধারন করা হবে। যেমন,
- এই ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলোতে শ্রমিক এর সংখ্যা হবে প্রায় ২০ জন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২৩০ জন পর্যন্ত।
- উক্ত প্রতিষ্ঠান গুলো শুরু করার জন্য ব্যয় এর পরিমান হবে প্রায় ১০ কোটি থেকে শুরু করে ৫০ কোটি পর্যন্ত।
- এই ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান করার জন্য বৃহৎ প্রতিষ্ঠান এর তুলনায় অনেক কম মুলধন বিনিয়োগ করতে হবে।
- উক্ত প্রতিষ্ঠান গুলো ক্ষুদ্র ও বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান এর মাঝামাঝি অবস্থান করবে।
তো আমরা আসলে কোন বৈশিষ্ট্যের কারনে একটি শিল্প কে মাঝারি শিল্প বলবো। আশা করি, এবার আপনি সেটা পরিস্কার ভাবে বুঝতে পেরেছেন। চলুন, এবার জেনে নেয়া যাক এমন কোন কোন প্রোডাক্ট এর শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে যেগুলো কে আমরা মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান বলবো।
মাঝারি শিল্প কি?
মাঝারি শিল্পের উদাহরণ
Medium industrial enterprises: মাঝারি শিল্প কাকে বলে, তা আমরা উপরের আলোচনা থেকে জানতে পেরেছি। তো নিচের তালিকায় আপনি যে সকল প্রোডাক্ট এর নাম দেখতে পাচ্ছেন সেই প্রোডাক্ট যে কোম্পানি বা শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরি করে। আর সেই প্রতিষ্ঠান গুলো কে আমরা মাঝারি শিল্প বলবো। যেমন,
- দিয়াশলাই একটি মাঝারি শিল্প,
- বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত সিগারেট একটি মাঝারি শিল্প,
- সাবান তৈরির প্রতিষ্ঠান,
- চামড়া শিল্প (বিলুপ্তির পথে)
তো বর্তমান সময়ে আমাদের বাংলাদেশ এর মধ্যে যে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলোকে মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান বলা যাবে। আপনি উপরের তালিকা তে সেই প্রতিষ্ঠান গুলোর নাম দেখতে পাচ্ছেন। তবে উপরে যে প্রোডাক্ট এর তালিকা দেওয়া হয়েছে এগুলো ছাড়াও মাঝারি শিল্প এর আরো অনেক ধরনের প্রডাক্ট রয়েছে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কাকে বলে?
ক্ষুদ্র শিল্প | মাঝারি শিল্প |
ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্প | |
স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয় ৫ কোটি টাকা বা তার কম | স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয় ১৫ কোটি টাকার বেশি ও ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত |
নিয়োজিত শ্রমিক ১০ জনের বেশি না | নিয়োজিত শ্রমিক ১২১ জন থেকে ৩০০ জন পর্যন্ত |
সেবা শিল্প | |
স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয় ৩ কোটি টাকা বা তার কম | স্থায়ী সম্পদের মূল্য প্রতিস্থাপন ব্যয় ৩০ কোটি টাকার বেশি ও ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত |
নিয়োজিত শ্রমিক ৫০ জনের বেশি না | নিয়োজিত শ্রমিক ৫১ জন থেকে ১২০ জন পর্যন্ত |
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বৈশিষ্ট্য
Characteristics of small and medium industries: ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন, এই ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান শুরু করার জন্য বৃহৎ শিল্পের তুলনায় অনেক কম মূলধন দরকার হয়। আর এই ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান এর মাধ্যমে আয় করা সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও আপনি যদি ক্ষুদ্র কিংবা মাঝারি শিল্প শুরু করেন তাহলে আপনি অধিক কর্মসংস্থান এর সুযোগ সৃষ্টি করতে পারবেন।
বৃহৎ শিল্প কাকে বলে?
What is large scale industry: সহজ কথায় যে সকল শিল্পের মধ্যে বিপুল পরিমান পুঁজির প্রয়োজন হয় এবং যে সকল প্রতিষ্ঠান করার জন্য প্রচুর পরিমান জনবল কাজ করে। সেই ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান কে বলা হয়, বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান। কেননা, বৃহৎ প্রতিষ্ঠান গুলোকে অনেক উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিচালনা করতে হয়।
আর বর্তমান সময়ে বেশ কিছু প্রোডাক্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কে বৃহৎ শিল্প হিসেবে নির্ধারন করা হয়। যেমন,
- আমাদের দেশে চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গুলো হলো, বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান।
- সিমেন্ট শিল্প কে বৃহৎ শিল্প হিসেবে নির্ধারন করা হয়।
- ওষুধ শিল্পকে বৃহৎ শিল্প বলা হয়।
- কীটনাশক বা সার শিল্প হলো,বৃহৎ শিল্প।
আমাদের বাংলাদেশ এর মধ্যে যে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান। উপরে উল্লেখিত প্রোডাক্ট উৎপাদন এর কাজ করে। সেই প্রতিষ্ঠান গুলোকে বলা হয়, বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান।
মাঝারি শিল্প – FAQ
Q: মাঝারি শিল্প গুলো কি কি?
A: সুতা, সুতলি, পাটের ব্যাগ, কাপড়, কার্পেট, পাটের স্যান্ডেল ও সকল পাটজাত দ্রব্য। কাঠ, বাঁশ ও বেতের তৈরি জিনিসপত্র, করাত কল, কাঠের খেলনা ও উন্নতমানের আসবাবপত্র, ক্রীড়া সামগ্ৰী। বিভিন্ন ধরনের কাগজ, প্যাকেট, কার্টন তৈরি ইত্যাদি।
Q: কুটির শিল্প বলতে কি বুঝায়?
A: পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে পরিচালিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান যা বাড়িতে অথবা বাড়ির বাইরে কোথাও স্থাপিত হতে পারে তাকে বলা হয়, কুটির শিল্প।
Q: ক্ষুদ্র শিল্প কাকে বলে?
A: স্বল্প পুঁজি ও স্বল্পসংখ্যক কর্মচারী নিয়ে এক মালিকানা, অংশীদারি অথবা সমবায়ের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা শিল্পকে ক্ষুদ্র শিল্প বলে।
Q: অতি ক্ষুদ্র শিল্প বলতে কি বুঝায়?
A: মুলধন ৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা অথবা ১০ থেকে ২৪ জন বা তার কমসংখ্যক শ্রমিক কাজ করে, এমন শিল্প-কারখানাকে অতি ক্ষুদ্র শিল্প বলে।
Q: ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
A: ১৯৫৭ সালে সংসদীয় আইনের অধ্যাদেশ বলে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
মাঝারি শিল্প নিয়ে কিছুকথা
আজকে মাঝারি শিল্প কাকে বলে – তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি, মাঝারি শিল্প কাকে বলে তা আপনি পরিস্কার ভাবে বুঝতে পেরেছেন। তো আপনি যদি এই ধরনের অজানা বিষয় গুলো খুব সহজ ভাষায় জানতে চান। তাহলে আমাদের সাথে থাকবেন। ধন্যবাদ।