নিকাশ ঘর কাকে বলে?

সহজ ভাষায়, নিকাশ ঘর হলো বিশেষ এক ধরনের মধ্যস্থকারী যার মূল কাজ হলো, একজন ক্রেতা ও একজন বিক্রেতার মাঝে মধ্যস্থতা তৈরি করা। আর আমাদের বাংলাদেশ এর কেন্দ্রিয় ব্যাংক এর মধ্যে নিকাশ ঘর আছে যেখানে আমাদের দেশের মধ্যে যে সকল আন্তঃব্যাংকিং এর লেনদেন হয় সেই লেনদেন গুলো কে নিষ্পত্তি করে।

নিকাশ ঘর কি?

আমাদের দেশের মধ্যে সকল আন্তঃব্যাংকিং লেনদেন করার একমাত্র স্থান হলো নিকাশ ঘর। আর উক্ত নিকাশ ঘর কে ইংরেজি তে বলা হয়, Clearing House. আমাদের বাংলাদেশ এর মধ্যে যে কেন্দ্রিয় ব্যাংক আছে সেই ব্যাংক এর মধ্যে এই ধরনের লেনদেন গুলোর নিষ্পত্তি হয়ে থাকে। 

তবে শুধুমাত্র আমাদের বাংলাদেশ এর মধ্যে নিকাশ ঘর আছে, বিষয়টা এমন নয়। বরং পৃথিবীর প্রায় সব দেশের মধ্যে এমন নিকাশ ঘর আছে। কেননা, একটি দেশ যদি তার ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা আরো বেশি গতিশীল করতে চায় তাহলে অবশ্যই সেই দেশ কে নিকাশ ঘর ব্যবস্থার প্রচলন করতে হবে।

নিকাশ ঘর এর প্রয়োজনীয়তা

আমরা নিকাশ ঘর কাকে বলে – সে সম্পর্কে জানতে পারলাম। তাই এবার আপনাকে নিকাশ ঘর এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানতে হবে। 

শুনুন, নিকাশ ঘর হলো ব্যাংকিং ইতিহাস এর মধ্যে বিশেষ একটি মাত্রা যোগ করতে পেরেছে। কারন, যখন থেকে এই বিকাশ ঘর ব্যাবস্থাপনার যাত্রা শুরু হয়েছে তখন থেকে বাংকিং লেনদেন এর মধ্যে অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক গতিশীল হয়েছে। 

সেই সাথে এই ব্যবস্থাপনার ফলে পারষ্পরিক লেনদেন নিষ্পত্তির দিক থেকে ঘটিয়েছে আমূল পরিবর্তন। যেমনঃ

  1. নিকাশ ঘর ব্যবস্থাপনা আসার পর থেকে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংক এর মধ্যে যে পারষ্পরিক লেনদেন হয়। সেই লেনদেন গুলো খুব দ্রুততার সাথে নিষ্পত্তি হয়। 
  2. এর ফলে ব্যাংকিং ব্যবস্থার মধ্যে এসেছে চেকেরে মাধ্যমে এক ব্যাংক এর টাকা অন্য আরেক টি ব্যাংকে স্থানান্তর করার সুবিধা। 
  3. নিকাশ ঘর এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট একটি দেশের ব্যাংকিং অবকাঠামো অনেক বেশি গতিশীল হয়। 
  4. ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার মাঝে অনেক বেশি ঝুঁকি আছে। আর নিকাশ ঘর এই ঝুঁকির পরিমান অনেক গুন কমিয়ে আনতে পেরেছে। 
  5. বর্তমান সময়ে নিকাশ ঘর এর কারণে একটি ব্যাংক অন্য একটি ব্যাংক থেকে অর্থ লেনদেন করার জন্য দাগ কাটা চেক ব্যবহার করতে পারছে। 
  6. এছাড়াও নিকাশ ঘর আসার কারনে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় এসেছে তারল্যের সুবিধা।

তো একটি দেশের মধ্যে ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা কে গতিশীল করার জন্য নিকাশ ঘর এর গুরুত্ব কতটুকু। তার বিস্তারিত বর্ননা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। আশা করি, ব্যাংকিং লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য নিকাশ ঘর এর গুরুত্ব সম্পর্কে আপনি পরিস্কার ধারনা পেয়ে গেছেন। 

বাংলাদেশ ব্যাংকে নিকাশ ঘর বলা হয় কেন?

একজন গ্রাহকদের নিকট থাকা ভিন্ন ব্যাংক এর একটি চেকের লেনদেন নিষ্পত্তি করার একমাত্র স্থল হলো, নিকাশ ঘর। আর আমাদের বাংলাদেশ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকা যে সকল ব্যাংক রয়েছে। সেই সকল ব্যাংক এর মধ্যে যে আন্তঃব্যাংকিং লেনদেন এর কাজ সংঘটিত হয় সেই কাজ গুলো কেন্দ্রিয় ব্যাংক করে থাকে। আর সে কারনে, বাংলাদেশ ব্যাংক কে নিকাশ ঘর বলা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক কত সালে গঠিত হয়?

যেহুতু আপনি নিকাশ ঘর কাকে বলে সে সম্পর্কে জানতে এসেছেন। সেহুতু অবশ্যই আপনার একটা বিষয় সম্পর্কে ধারনা রাখা জরুরী। আর সেটি হলো, বাংলাদেশ ব্যাংক কত সালে গঠিত হয়। 

তো এই বাংলাদেশ ব্যাংক গঠিত হয়েছিলো, ১৯৭২ এর মাধ্যম দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিলো (বাংলাদেশ ব্যাংক এর আদেশে)। এই বাংলাদেশ ব্যাংক হলো, বিশেষ এক ধরনের নিয়ন্ত্রক সংস্থা যা মূলত আমাদের দেশের সকল ব্যাংকিং লেনদেন সহো, বর্হিবিশ্বের লেনদেন গুলোকে নিয়ন্ত্রন করে থাকে।

নিকাশ ঘর কাকে বলে – FAQ

Q: নিকাশ ঘর প্রথম কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়?

A: ১৮১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনে সাফলক ব্যাংক প্রথম নিকাশ ঘর চালু করে।

Q: নিকাশ ঘর ব্যবস্থার জনক কে?

A: নিকাশ ঘর ধারণার জনক মি. আরভিল।

Q: নিকাশ ঘর এর কাজ কি?

A: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দিষ্ট একটি ঘর যেখানে বসে আন্তঃব্যাংকিং দেনা-পাওনা নিষ্পত্তি করা হয়।

নিকাশ ঘর নিয়ে আমাদের শেষকথা

তো আপনি যদি নিকাশ ঘর কাকে বলে সে সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আজকের লেখাটি আপনার জন্য অনেক বেশি হেল্পফুল হবে। কারন, আজকে আমি আপনাকে নিকাশ ঘর কাকে বলে, সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানিয়ে দিয়েছি। 

আর আমাদের সাথে থাকুন, নতুন কিছু জানার জন্য।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন