চ্যাটজিপিটি কি? | chatgpt | এআই প্রযুক্তির বর্তমান ও ভবিষ্যত 

What is chatgpt: আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর সূচনা অনেক আগে হলেও। যখন থেকে ওপেন এআই চ্যাটজিপিটি চালু করেছে। তারপর থেকে মানুষের মনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্পর্কে নতুন নতুন ধারণার জন্ম হয়েছে।

কেননা আমরা অনেকেই মনে করি যে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানেই হলো, চ্যাটজিপিটি। আবার এমন অনেক মানুষ আছেন। যারা মনে করেন যে, চ্যাটজিপিটি দিয়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর সকল কাজ করা যাবে।

কিন্তু আপনারা যারা এমনটা মনে করেন, তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কেননা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ক্ষুদ্র একটি অংশ হলো, চ্যাটজিপিটি (ChatGPT).

মূলত এই চ্যাটজিপিটি কাকে বলে ও বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে চ্যাটজিপিটি দিয়ে কি কি করতে পারবেন। এছাড়াও ভবিষ্যতে এই চ্যাটজিপিটি কোন কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে। এই যাবতীয় বিষয় গুলো নিয়ে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়ার জন্যই আজকের এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে।

চ্যাটজিপিটি কি বা চ্যাটজিপিটি কাকে বলে?

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন একটি বৃহৎ ভাষা মডেল সম্বলিত চ্যাটবট কে বলা হয়ে থাকে, চ্যাটজিপিটি। যার কার্য পদ্ধতি একবারই আলাদা।

কেননা একটি মানুষ যেমন শিশু অবস্থায় থাকার সময় বিভিন্ন বিষয় নিজের মধ্যে আয়ত্ত করে নিতে পারে। ঠিক তেমনি ভাবে চ্যাটজিপিটি নামক এই চ্যাটবট এর বিভিন্ন ভাষা কে নিজের মধ্যে আয়ত্ত করার ক্ষমতা রয়েছে।

মূলত এটি হলো এমন এক ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন চ্যাটবট। যাকে আপনি মানুষের মতো করে প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন। আর এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চ্যাটজিপিটি নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে পারবে।

অর্থাৎ আপনি একজন মানুষ হয়ে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমতা কে প্রথমত প্রশিক্ষণ দিয়ে ডেটা ইনপুট করাতে পারবেন। আর পরবর্তী সময়ে সেই ডেটা সম্বলিত প্রাসঙ্গিক আউটপুট দেখতে পারবেন।

চ্যাটজিপিটি এর কাজ কি ?

উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম যে, চ্যাটজিপিটি কাকে বলে। তাই এবার আমাদের চ্যাটজিপিটি এর কাজ কি সে সম্পর্কে জানতে হবে। আর আপনি যদি এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আমি আপনাকে বলব, চ্যাটজিপিটি হল একটি টেক্সট ভিত্তিক প্রোগ্রাম।

যেখানে আপনি চ্যাটিং করার মাধ্যমে চ্যাটজিপিটি নামক চ্যাটবট কে বিভিন্ন বিষয় জিজ্ঞেস করতে পারবেন। আর আপনার প্রশ্নের উপর ভিত্তি করে যে, প্রাসঙ্গিক উত্তর রয়েছে। সেই উত্তর গুলো কে সাজিয়ে গুছিয়ে আউটপুট দেওয়া হল, চ্যাটজিপিটি এর মূল কাজ।

যেমন ধরুন, আপনি যদি এখন চ্যাটজিপিটি কে ”আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়” সম্পর্কে একটা রচনা লিখতে বলেন। তাহলে এই চ্যাটবট মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আপনার এই রচনা লিখে দিবে।

আবার আপনি যদি চ্যাটজিপিটি কে একটি গান লিখতে বলেন। তাহলে আপনি দেখতে পারবেন যে, সেই চ্যাটবট কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আপনাকে গান লিখে দিবে। আর সেগুলো হবে সম্পূর্ণ নতুন ও ইউনিক।

তবে শুধুমাত্র গান কিংবা রচনা লেখার মধ্যে এই চ্যাটজিপিটি নামক চ্যাটবট সীমাবদ্ধ নয়। বরং এ গুলো ছাড়াও আপনি চ্যাটজিপিটি থেকে বিশ্বের বিভিন্ন অজানা তথ্য গুলো চ্যাটিং এর মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন।

আর অবাক করার মত বিষয় হলো যে, আপনি চ্যাটজিপিটি কে যত বেশি প্রশ্ন করবেন। সে তত বেশি নতুন নতুন বিষয় শিখতে পারবে।

চ্যাটজিপিটি কিভাবে কাজ করে?

আলোচনা শুরুতেই আমি আপনাকে একটা কথা বলেছি। আর সেই কথাটি হল, চ্যাটজিপিটি একটি ভাষা মডেল। যাকে মানুষের মত করে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়। যেমন, একটি ছোট্ট শিশু কে যেভাবে আমরা বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেই। ঠিক তেমনি ভাবে আপনি সেই ছোট্ট শিশুর মত করে চ্যাটজিপিটি কে প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন।

তো সে কারণে আমাদের অনেকের মনে একটি প্রশ্ন জেগে থাকতে পারে। আর সেই প্রশ্ন টি হলো, চ্যাটজিপিটি কিভাবে কাজ করে?

আর আপনি যদি চ্যাটজিপিটি এর কাজ করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আমি আপনাকে বলব যে, চ্যাটজিপিটি সাধারণত নিউরাল নেটওয়ার্ক ইনপুট টেক্সট এর মাধ্যমে কাজ করে থাকে।

যাকে টেক্সট ভিত্তিক কমান্ডের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া যাবে। এমন পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে চ্যাটজিপিটি কে তৈরি করা হয়েছে।

যেমন, আপনি যখন চ্যাটজিপিটি কে নতুন একটি টেক্সট কমান্ড প্রদান করবেন। তখন চ্যাটজিপিটি  আপনার কমান্ড রিলেটেড বিষয় গুলো সম্পর্কে নতুন করে শিখবে।

তারপর আপনাকে যুক্তিসংগত ও প্রাসঙ্গিক উত্তর প্রদান করবে। এভাবে যত বেশি মানুষ চ্যাটজিপিটি তে নতুন নতুন কমান্ড প্রদান করবে। চ্যাটজিপিটি ঠিক তত বেশি নতুন বিষয় গুলো সম্পর্কে জানতে পারবে।

চ্যাটজিপিটি কে প্রতিষ্ঠা করেন?

আমরা সকলেই জানি যে, ওপেন এআই নামক একটি প্রতিষ্ঠান থেকে চ্যাটজিপিটি চালু করা হয়েছে। আর এই জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানের মালিক হলো, বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক।

মূলত তিনি হলেন সেই ব্যক্তি। যিনি সর্বপ্রথম এই ভাষা মডেল এর সূচনা করেছিলেন। আর তার হাত ধরেই চ্যাটজিপিটি এর প্রথম যাত্রা শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এই জনপ্রিয় কোম্পানি থেকে ইলন মাস্ক ২০১৮ সালের পদত্যাগ করেন।

আর যখন তিনি পদত্যাগ করেন। তারপর দেশের অন্যতম জনপ্রিয় কোম্পানি মাইক্রোসফট ওপেন এ আই নামক বৃহৎ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা শুরু করেন।

তবে বর্তমান সময়ে চ্যাটজিপিটি এর মালিক মাইক্রোসফট হলেও। উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন ভাষা মডেল চ্যাটজিপিটি এর মূল প্রতিষ্ঠা হল, ইলন মাস্কা।

চ্যাটজিপিটি কিভাবে ব্যবহার করা যাবে?

এতক্ষণের আলোচনা থেকে আমরা চ্যাটজিপিটি সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় জানতে পেরেছি। তো এবার আমাদের জানতে হবে যে, কিভাবে আমরা আমাদের ডিভাইস থেকে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করতে পারব। আর আপনি যদি আপনার ডিভাইস থেকে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করতে চান।

তাহলে আপনাকে বেশ কিছু পদ্ধতি ফলো করতে হবে। আর সেই পদ্ধতি গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো,

চ্যাটজিপিটি কিভাবে ব্যবহার করা যাবে

  1. সবার প্রথমে আপনি গুগল সার্চ ইঞ্জিনে প্রবেশ করুন। 
  2. তারপর আপনাকে ”ChatGPT” লিখে সার্চ করতে হবে। 
  3. এবার আপনি “Open AI” এর ওয়েবসাইট দেখতে পারবেন। আপনাকে তাদের ওয়েবসাইট লিংকে ক্লিক করতে হবে। 
  4. এখন আপনি মোট দুইটি অপশন দেখতে পারবেন। সে গুলো হলো “Log in” এবং “Sign up”.
  5. আপনি যেহেতু নতুন একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন। সেহুতু অবশ্যই আপনাকে “Sign up” এর মধ্যে ক্লিক করতে হবে। 
  6. এবার আপনি “Continue with google” এর মধ্যে ক্লিক করুন। 
  7. তারপর আপনার জিমেইল একাউন্ট সিলেক্ট করবেন।

যখন আপনি আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট সিলেক্ট করবেন। তারপর Open Ai থেকে আপনার জিমেইলে একটি ভেরিফিকেশন লিংক পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

আর আপনাকে সেই লিঙ্ক এর মধ্যে ক্লিক করে ভেরিফাই করতে হবে। তো যখন আপনি সেই ভেরিফাই লিংকে ক্লিক করবেন। তারপর আপনাকে আরো বেশ কিছু কাজ করতে হবে। যেমন, 

  1. এবার আপনাকে আপনার নাম দিতে হবে। 
  2. তারপর আপনার মোবাইল নম্বর প্রদান করতে হবে। 
  3. মোবাইল নম্বর দেওয়ার পর আপনার মোবাইল নম্বরে একটি ভেরিফিকেশন কোড পাঠিয়ে দেওয়া হবে। 
  4. আপনাকে সেই ভেরিফিকেশন কোড টি সঠিক ভাবে বসিয়ে দিতে হবে।

এভাবে যখন আপনি আপনার মোবাইল নম্বর ভেরিফিকেশন করবেন। তারপর আপনি সরাসরি চ্যাট জিপিটি এর মূল পেজে প্রবেশ করবেন। তারপর আপনিও অন্যান্য মানুষের মতো চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করতে পারবেন।

চ্যাটজিপিটি এর সীমাবদ্ধতা কি?

যখন সর্বপ্রথম ওপেন এআই প্রতিষ্ঠান থেকে চ্যাটজিপিটি চালু করা হয়েছিল। তখন আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ মনে করেছিলেন যে, এমন কোন কাজ নেই। যে কাজ গুলো চ্যাটজিপিটি দিয়ে করা যাবে না। কিন্তু আপনারা যারা এমনটা মনে করেছেন, তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।

কারণ চ্যাটজিপিটি এর মূল প্রতিষ্ঠান থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, চ্যাটজিপিটি এর অনেক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই চলুন এবার তাহলে চ্যাটজিপিটি এর বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। যেমন,

  1. চ্যাটজিপিটি সব সময়ের জন্য নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারবে না। কারণ এটি একটি সফটওয়্যার বা বিভিন্ন প্রোগ্রামের সমন্বয়ে গঠিত। 
  2. যার কারণে চ্যাটজিপিটি তে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের ত্রুটি দেখা দিবে। 
  3. চ্যাটজিপিটি আপনাকে সব সময় শতভাগ সঠিক উত্তর দিতে পারবে না। অনেক সময় আপনাকে ভুল উত্তর প্রদান করবে। 
  4. চ্যাটজিপিটি এর পক্ষে ইন্টারনেট এর মধ্যে থাকা সকল তথ্য সম্পর্কে জানা প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার। 
  5. সমসাময়িক রাজনৈতিক ব্যাপার গুলো সম্পর্কে চ্যাটজিপিটি কোন ধরনের তথ্য প্রদান করতে পারবে না। 
  6. চ্যাটজিপিটি কখনোই কোন ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ বাণী করতে পারবে না। কারণ চ্যাটজিপিটি এর মধ্যে উক্ত ক্ষমতা টি নেই। 
  7. এটি ২০২১ সালের পরে সংঘটিত হওয়া কোন ধরনের তথ্য প্রদান করতে পারে না।

মূলত আপনারা যারা মনে করেন যে, চ্যাটজিপিটি থেকে সকল ধরনের তথ্য জানতে পাওয়া যায়। তাদের ধারণা যে ভুল, সেটি আপনি উপরের সীমাবদ্ধতা গুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন।

তাই সবসময় একটা কথা মনে রাখবেন। সেটি হল, চ্যাটজিপিটি একটি প্রোগ্রামিং রোবট। যার মধ্যে অবশ্যই কোনো না কোনো সীমাবদ্ধতা থাকবে।

চ্যাটজিপিটি এর সুবিধা ও অসুবিধা কি ?

এতক্ষণ ধরে আমরা চ্যাটজিপিটি সম্পর্কে বিভিন্ন অজানা বিষয় জানতে পেরেছি। কিন্তু এই বিষয় গুলো জানার পাশাপাশি আমাদের অবশ্যই চ্যাটজিপিটি এর সুবিধা ও অসুবিধা গুলো জেনে নিতে হবে।

কেননা, বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ভাষা মডেল চ্যাটজিপিটি এর যেমন সুবিধা রয়েছে। ঠিক তেমনি ভাবে আপনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি এর অনেক অসুবিধা লক্ষ্য করতে পারবেন। তাই চলুন এবার ধাপে ধাপে সেই সুবিধা ও অসুবিধার বিষয় গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। 

চ্যাটজিপিটি এর সুবিধা গুলো কি কি?

যদি আপনি বর্তমান সময়ে চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করেন। সেক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন দিক থেকে সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। আর সেই সুবিধা গুলো নিচে ধাপে ধাপে উল্লেখ করা হলো। যেমন,

০১| দ্রুত উত্তর পাওয়া যায়ঃ সত্যি বলতে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করার অন্যতম একটি সুবিধা আছে। সেটি হল, এর মাধ্যমে খুব দ্রুততার সাথে যে কোনো বিষয়ে উত্তর জানতে পারা যায়।

অর্থাৎ আপনি যদি এই চ্যাট বটকে একটি প্রশ্ন করেন। তাহলে আপনি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আপনার প্রশ্নের উত্তর জানতে পারবেন।

০২| উন্নতমানের টেক্সট পাওয়া যায়ঃ আমরা সকলেই জানি যে, চ্যাটজিপিটি হল একটি ভাষা মডেল। যার কারণে আপনি বিভিন্ন বিষয়ে এই ভাষা মডেল কে দিয়ে উন্নতমানের টেক্সট তৈরি করতে পারবেন। আর আপনার পছন্দের বিষয়ের উপর ভিত্তি করে লেখা সংগ্রহ করতে পারবেন।

৩| মানুষের কথা বুঝতে পারেঃ আপনি জানলে অবাক হয়ে যাবেন। কারণ, চ্যাটজিপিটি একটি প্রোগ্রামিং বট হওয়ার পরেও সে মানুষের কথা বুঝতে পারে। আর আপনার কথার উপর ভিত্তি করে সে যুক্তিসঙ্গত উত্তর দিতে পারে।

০৪| বিভিন্ন ধরনের ভাষা বুঝতে পারেঃ আপনি একজন বাংলাদেশী হয়ে চ্যাটজিপিটি এর সাথে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারবেন।

আবার আপনি যদি ভারতের একজন নাগরিক হয়ে থাকেন। তাহলে আপনি হিন্দি ভাষায় চ্যাটজিপিটি  এর সাথে কথা বলতে পারবেন। কেননা চ্যাটজিপিটি বিভিন্ন দেশের ভাষা জানে।

০৫| মানুষের সাথে কথা বলার মতো চ্যাটিং করতে পারেঃ সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে আমরা যেমন একজন মানুষ অন্য একজন মানুষের সাথে চ্যাটিং করি। ঠিক একই ভাবে আপনি চ্যাটজিপিটি এর সাথে চ্যাটিং করতে পারবেন। আর বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ আলোচনা করতে পারবেন।

০৬| এটি সবসময় নতুন কিছু শিখছেঃ যেহেতু চ্যাটজিপিটি একটি প্রোগ্রামিং ভাষা মডেল। যার কারণে এটি সর্বদাই নতুন নতুন কিছু শিখছে। আর সেইসাথে নিজেকে প্রশিক্ষিত করছে। যার কারণে আমরা এর মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে আরও অজানা তথ্য গুলো খুব সহজে জেনে নিতে পারবো।

উপরের আলোচনা তে আপনি যা কিছু দেখতে পাচ্ছেন ।মূলত এগুলো হলো চ্যাটজিপিটি এর সুবিধা। তবে সুবিধা গুলো জানার পাশাপাশি আমাদের চ্যাটজিপিটি এর অসুবিধা গুলো সম্পর্কেও জেনে নিতে হবে।

চ্যাটজিপিটি এর অসুবিধা গুলো কি কি? 

একটু আগে আমি আপনাকে একটা কথা বলেছি। আর সেই কথাটি হল, চ্যাটজিপিটি এর বিভিন্ন ধরনের সুবিধার পাশাপাশি বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে। আর আপনি যেন সেই অসুবিধা গুলো সম্পর্কে জানতে পারেন। সে কারণে এবার আমি স্টেপ বাই স্টেপ চ্যাটজিপিটি এর অসুবিধা গুলোকে তুলে ধরব। যেমন,

০১| ভুল তথ্য প্রদান করেঃ আমরা সকলে জানি যে, চ্যাটজিপিটি কে প্রশ্ন করলে সে প্রশ্নের উত্তর প্রদান করে। কিন্তু সব সময় সেই উত্তর গুলো সঠিক হয় না। বরং অনেক সময় লক্ষ্য করা যায় যে, চ্যাটজিপিটি বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের ভুল উত্তর প্রদান করে।

০২| ভুল বা সঠিক বিবেচনা করতে পারেনাঃ একজন মানুষ হিসেবে আমরা যেমন ভুল এবং সঠিক বিষয় গুলো কে বিবেচনা করতে পারি। সেটা চ্যাটজিপিটি কখনোই করতে পারবেনা।

এর কারণ হলো, চ্যাটজিপিটিএর মূল কাজ উত্তর প্রদান করা। কিন্তু সেই উত্তরটি ভুল নাকি সঠিক সেটা কখনোই সে বুঝতে পারবে না।

০৩| উত্তর প্রাসঙ্গিক হয়নাঃ চ্যাট জিপিটি থেকে পাওয়া প্রত্যেক টা উত্তর আপনার প্রশ্নের সাথে প্রাসঙ্গিক হবে এমন কোন বিশ্বস্ততা নেই। বরং অনেক সময় চ্যাট জিপিটি থেকে অপ্রাসঙ্গিক উত্তর পাওয়া যায়।

০৪| কোন ধরনের সৃজনশীলতা নেইঃ এটি একটি প্রোগ্রামিং রোবট। যার কারণে এর মধ্যে কোন ধরনের সৃজনশীলতা লক্ষ্য করতে পারবেন না। কেননা মানুষ যেভাবে তাকে প্রশিক্ষণ দিবে। সে সেভাবেই প্রশিক্ষিত হবে।

০৫| জ্ঞানের সীমাবদ্ধতাঃ আপনি হয়তো বা বেশ ভালো করে জানবেন যে, চ্যাট জিপিটি শুধুমাত্র ২০২১ সালের আগের তথ্য গুলো প্রদান করতে পারে। কিন্তু তারপরে আর কোন ধরনের তথ্য সে দিতে পারে না।

০৭| সাময়িক বিষয়ে অজ্ঞতাঃ মনে করুন, আপনি দুই ঘন্টা আগের একটি খবর চ্যাটজিপিটি থেকে জানতে চাচ্ছেন। কিন্তু সে আপনাকে কখনোই সমসাময়িক খবর প্রদান করতে পারবে না। কারণ এই বিষয়ে কোনো তথ্য তার কাছে জমা নেই।

চ্যাটজিপিটি এর সুবিধার পাশাপাশি যে সকল অসুবিধা রয়েছে। সেই অসুবিধা গুলো উপরের আলোচনায় উল্লেখ করা হয়েছে। আশা করি, আপনি চ্যাটজিপিটি এর সুবিধা ও অসুবিধা গুলো সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিতে পেরেছেন। 

চ্যাটজিপিটি সম্পর্কে অজানা সব মজার তথ্য

দেখতে দেখতে আমরা আর্টিকেল এর একবারে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। তাই এবার আমি আপনাকে এই চ্যাটজিপিটি সম্পর্কে বেশ কিছু মজার তথ্য বলব। যে তথ্য গুলো জানার পর আপনিও রীতিমতো অবাক হয়ে যাবেন।

আর সেই মজার তথ্য গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন,

  1. GPT-3.5 মডেলটি প্রস্তুত করার জন্য 175 বিলিয়ন প্যারামিটার ব্যবহার করা হয়েছে। 
  2. চ্যাটজিপিটি নামক এই বৃহৎ ভাষা মডেলের মধ্যে যে তথ্য গুলো ইনপুট করা হয়েছিল। সে গুলো ইন্টারনেটের বিভিন্ন সোর্স থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
  3. GPT-3.5 ভার্সনের মধ্যে বাংলা ভাষা সমর্থন করে না। বরং ইংরেজি তথ্য গুলো কে বাংলা ভাষায় ট্রান্সলেট করে প্রদর্শন করা হয়।
  4. অনেক বড় বড় কোডিং বা প্রোগ্রামিং গুলো চ্যাটজিপিটি থেকে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সংগ্রহ করা যায়। 
  5. চ্যাটজিপিটি কে মানুষ যত বেশি প্রশ্ন করবে, সে তত বেশি নতুন নতুন তথ্য শিখতে পারবে। 
  6. বৃহৎ এই ভাষা মডেলের মধ্যে যে এপিআই ব্যবহার করা হয়েছে। সেটি মূলত ওপেন এআই থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। 
  7. আমরা বিভিন্ন ভাষায় চ্যাট জিপিটি এর সাথে চ্যাটিং করতে পারলেও। এই ভাষা মডেল শুধুমাত্র কয়েকটি দেশের ভাষা সঠিক ভাবে বুঝতে পারে। যেমন, ইংরেজি, চীনা, ফরাসি, স্প্যানিশ, জার্মান, ইতালিয়ান, ডচ, পর্তুগিজ, রুসিয়ান, আরবি, করিয়ান, জাপানি ইত্যাদি।

উপরের তালিকা তে আপনি চ্যাটজিপিটি সম্পর্কে বেশ কিছু অজানা তথ্য জানতে পেরেছেন। আর আমার দীর্ঘ বিশ্বাস রয়েছে যে, এই তথ্য গুলো আপনার কাছে অনেক ভালো লাগবে। 

আপনার জন্য আমাদের কিছু কথা 

এই ওয়েবসাইটের মধ্যে আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিষয়ে আর্টিকেল পাবলিশ করি। সেই ধারাবাহিকতায় আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাকে চ্যাটজিপিটি সম্পর্কে অজানা তথ্য গুলো জানিয়ে দিয়েছি।

আশা করি, আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো জানতে পেরেছেন।

তবে আমাদের ওয়েবসাইটে পাবলিশ করা আর্টিকেল গুলো সম্পর্কে। যদি আপনার কোন ধরনের মতামত থাকে। তাহলে সেটি অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।

আর এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *