৭ নভেম্বর কি দিবস | ৭ নভেম্বর কিসের ছুটি?

What day is November 7?: আমরা সকলেই জানি যে, নভেম্বর মাসে বিভিন্ন ধরনের দিবস আছে। তো সে কারণে অনেক সময় আমাদের ৭ নভেম্বর কি দিবস সেটি জানার প্রয়োজন হয়। তো তাদের জানিয়ে রাখি যে, ৭ নভেম্বর হলো, ”জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস* বা ”মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস”।

তবে এই দিনে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করার পেছনে বিরাট একটি ইতিহাস আছে। আর আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা সেই ইতিহাস কে সহজ ভাবে জানার চেষ্টা করবো। যা নিচের আলোচনাতে শেয়ার করা হলো।

৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করা হয় কেন?

আমাদের বাংলাদেশের মধ্যে জাতীয় ভাবে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করা হয়। আর এই দিবসটি পালন করার পেছনে মূল কারণ হলো, ১৯৭৫ সালে সংঘটিত হওয়া সিপাহী ও জনতার বিপ্লব কে স্মরণ করা।

কেননা, ১৯৭৫ সালের আগষ্ট মাসের ১৫ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সহো তার পুরো পরিবারকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। আর এই নির্মম হত্যাকান্ডের পর মুজিব সরকারের মোট ২৩ জন মন্ত্রীর ২১ জনকে নিয়ে খন্দকার মোশতাক আহমেদ নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষনা করেন।

আরো পড়ুনঃ নভেম্বর মাসের দিবসসমূহ দেখে নিন

কিন্তুু সমস্যা হলো খন্দকার মোশতাক আহমেদের ক্ষমতার নেপথ্যে ছিলো সেই ব্যক্তিরা। যারা ১৫ই আগষ্টের জঘন্য ঘটনার মূল নায়ক ছিলো। যার কারণে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ মোশাররফ এই ব্যাপারকে মেনে নিতে পারেনি। এর ফলস্বরুপ তিনি তার অনুগত সৈন্য বাহিনী নিয়ে সরকার মোশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে ৩রা নভেম্বর একটি অভ্যুত্থান ঘটান।

আর এই অভ্যুত্থান এর সময়কাল ছিলো মোট ৩ দিন। তবে যদিওবা এই অভ্যুত্থান সফল হয়েছিলো কিন্তুু পরবর্তী সময়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ মোশাররফ এর জন্য এই অভ্যুত্থান কাল হয়ে দাড়িয়েছিলো।

এর পরবর্তী সময়ে ৩রা নভেম্বর মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে নিজ বাস ভবন এর মধ্যে গৃহবন্দী করা হয়। আর উক্ত সময়ে জিয়াউর রহমানের একজন বিশেষ শুভাকাঙ্খী হিসেবে ছিলেন, কর্নেল (অবঃ) আবু তাহের। মূলত তিনি কখনই সৈনিক – অফিসার এর মধ্যে থাকা বৈষম্যকে পছন্দ করতেন না। এর পাশাপাশি তিনি ছিলেন সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী একজন মানুষ।

তো যখন জিয়া তার নিজ বাসভবনে বন্দী অবস্থায় ছিলেন। তখন তাকে বন্দী অবস্থায় রাখার দায়িত্বরত হিসেবে ছিলেন ক্যাপ্টেন হাফিজুল্লাহ। আর তিনি জিয়ার বাসায় সকল ধরনের টেলিফোনের লাইন বিছিন্ন করে দিয়েছিলেন। তবে জিয়ার বেডরুমের মধ্যেও যে একটি টেলিফোন লাইন ছিলো। সেটা ক্যাপ্টেন হাফিজুল্লাহ বুঝতে পারেননি।

আরো পড়ুনঃ নভেম্বর মাসের সরকারি ছুটি তালিকা

আর এই সুযোগে জিয়া কৌশলে তাহেরকে ফোন দিয়ে বলেছিলেন, সেভ মাই লাইফ। যখন জিয়া তাহের কে ফোন করেছেন, তখন তাহের জিয়ার ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন। এরপর তিনি ঢাকাতে তার অনুগত ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সিপাহীদের পাল্টা প্রতিরোধ গড়ার নির্দেশ দিয়ে নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া থেকে ঢাকা রওনা হন।

তবে তিনি একা এই প্রতিরোধ গড়েননি বরং তার সঙ্গী হিসেবে আরো শত শত জাসদ কর্মী তার সাথে যোগ দিয়েছিলেন। আর কর্ণেল তাহেরের এই পাল্টা অভ্যুত্থান ০৭ নভেম্বর সফল হয়েছিলো। কেননা, এই দিনে তিনি বন্দী অবস্থায় থাকা জিয়াকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

আর জিয়াকে মুক্ত করার পেছনে বেশ কিছু উদ্দেশ্য ছিলো। কেননা, তাহের ও তার সঙ্গীরা মনে করেছিলো জিয়াকে মুক্ত করার পর তাদের অফিসে নিয়ে যাবে। তারপর তাদের যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে আছে সেগুলো জিয়াকে বলা হবে। এছাড়াও বিরাট একটি সিপাহী জনতার সমাবেশের আয়োজন করে সেখানে জিয়া ও তারেক বক্তব্য রাখবে।

কিন্তুু সমস্যা হলো জিয়া মুক্ত হওয়ার পর পরিস্থিতি পুরো বদলে যায়। কেননা, সেই সময় জিয়া ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হতে রাজি হননি। এছাড়াও উর্ধ্ধতন কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী জিয়া ভাষন দিতেও রাজি হয়নি।

উল্টো যখন তাহের পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করেছেন। তখন জিয়া ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জাসদকে সরানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। যার ফলাফল হিসেবে জাসদের সব নেতাদের গ্রেফতার করা হয় এমনকি তাহেরকেও গ্রেফতার করা হয়।

তার পরবর্তী সময়ে তাহেরকে ফাঁসি ও অন্যান্য নেতাদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়। আর উক্ত বিচারকার্য পরিচালিত হয়েছিলো গোপন আদালতের মাধ্যমে। অবশেষে ১৯৭৬ সালের জুলাই মাসের ২১ তারিখ তাহেরের ফাঁসি হয়। যদিওবা ৭ নভেম্বর এর বিপ্লবী কারিগর হিসেবে ছিলো তাহেরের নাম। কিন্তুু এর ফল হিসেবে ক্ষমতায় আসেন জিয়া।

আর আমরা সবাই জানি যে, “বিপ্লব ও সংহতি” -শব্দটি সাধারণত সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের স্লোগান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে বর্তমানে এই বিশেষ দিনটিকে জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক দল বিএনপি “জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস” হিসেবে পালন করে। Source: [Wikipedia]

আরো পড়ুনঃ স্বর্ণের বর্তমান দাম নভেম্বর ২০২৩

আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা

৭ নভেম্বর ”জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস* বা ”মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস” পালন করা হয়। তবে এই দিবসটি পালন করার পেছনে যে ইতিহাস আছে। সেই ইতিহাসকে খুব স্বল্প আকারে উল্লেখ করা হয়েছে আজকের আর্টিকেলে।

তো আপনি যদি উক্ত ইতিহাসকে আরো বিস্তারিত ভাবে জানতে চান। তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। আর ধন্যবাদ, আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করার জন্য। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *