ভিজিএফ কার্ডের অনলাইন আবেদন

দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন? -তাহলে ভিজিএফ কার্ড হবে আপনার জন্য দুর্যোগ পরবর্তী সময়ের এক টুকরো আশা! সরকারের এই মানবিক সহায়তা কর্মসূচি আপনাকে খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করবে। তবে কীভাবে ভিজিএফ কার্ডের জন্য অনলাইন আবেদন করবেন, কারা এই সুবিধা পাবেন সব বিস্তারিত জানতে চাইলে এই আর্টিকেলটি পড়ুন। কেননা, আপনার জীবনকে আরো সহজ করার জন্য এই তথ্য গুলো জেনে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ!

ভিজিএফ কার্ড কি?

প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় – এই সবই মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলে। এই সময় খাদ্যের অভাব এক চরম সংকট তৈরি করে। আর ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে সরকার এই সংকট মোকাবিলায় পাশে দাঁড়ায়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাস করা দরিদ্র ও দুঃস্থ মানুষের জন্য খাদ্যশস্য সরবরাহ করে ভিজিএফ। ভূমিকম্প, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, নদী ভাঙন, আগুন ইত্যাদি বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ক্ষুধা মেটাতে এই কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

কাদের জন্য ভিজিএফ?

দেশের দরিদ্র ও দুঃস্থ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভিজিএফ কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। একইসাথে, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসন ও স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে আসতে সহায়তা করা হয়। তবে সবাই এই কর্মসূচীর আওতায় আসবেনা। আর বর্তমান সময়ে যেসব মানুষের জন্য ভিজিএফ কর্মসূচী উন্মুক্ত তারা হলো, 

০১-ভূমিহীন কৃষক

যাদের নিজস্ব জমি নেই, তারা এই কর্মসূচির আওতায় আসেন। কারণ, জমি না থাকায় তারা স্বাবলম্বী হতে পারে না।

০২-দরিদ্র পরিবার

দৈনিক দুই বেলা খাবার জুটাতে যাদের কষ্ট হয়, তারাও ভিজিএফ এর সুবিধা পাবেন। কারণ, সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার হলো খাদ্য।

০৩-প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত

বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি দুর্যোগে বাড়ি-ঘর হারিয়ে যাদের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, তারা এই কর্মসূচির মাধ্যমে সহায়তা পাবেন। কারণ, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা সরকারের দায়িত্ব।

০৪-বেকার

বেকারত্বের কারণে যারা খাদ্য সংকটে ভোগেন, তারাও ভিজিএফ এর আওতায় আসবেন। কারণ, কর্মহীন মানুষের জন্য খাদ্য সরবরাহ করা সরকারের দায়িত্ব।

কিভাবে ভিজিএফ কার্ড পাওয়া যায়?

ভিজিএফ কার্ডের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়াটি খুব সহজ। সেজন্য আপনাকে আপনার ওয়ার্ড কমিটিতে যোগাযোগ করতে হবে। ওয়ার্ড কমিটি আপনার আবেদন গ্রহণ করবে এবং যাচাই-বাছাই করবে। যদি আপনি যোগ্য হন, তাহলে আপনাকে ভিজিএফ কার্ড দেওয়া হবে। তো চলুন এবার ভিজিএফ কার্ড পাওয়ার ধাপ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। 

ভিজিএফ কার্ড অনলাইন আবেদন

ভিজিএফ কার্ড অনলাইন আবেদন

০১-ইউপি ওয়ার্ড কমিটির প্রচার 

প্রথম ধাপ হলো, আপনার ওয়ার্ড কমিটির ব্যাপক প্রচার। তারা নির্দিষ্ট একদিন সকল মানুষকে জড়ো করে তাদের তথ্য সংগ্রহ করবে।

০২-সাক্ষাৎকার ও তথ্য সংগ্রহ

এই সাক্ষাৎকারে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা, পরিবারের সদস্য সংখ্যা ইত্যাদি সংরক্ষন করবে।

০৩- যোগ্য ব্যক্তি বাছাই

সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে ওয়ার্ড কমিটি ভিজিএফ কার্ডের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের বাছাই করবে।

০৪-ইউনিয়ন ভিজিএফ কমিটিতে প্রেরণ

সবশেষে বাছাইকৃত তালিকা ইউনিয়ন ভিজিএফ কমিটিতে পাঠানো হবে। তারপর ইউনিয়ন ভিজিএফ কমিটি থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন প্রাদন করা হবে।

ভিজিএফ কার্ডের অনলাইন আবেদন করা যায়?

গুগলে অনেকেই ভিজিএফ কার্ডের অনলাইন আবেদন করতে চান। তো বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ভিজিএফ কার্ডের অনলাইন আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। তাই যারা ভিজিএফ কার্ড করতে চান তাদের উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিতে কাজ করতে হবে। আর ভবিষ্যতে যদি ভিজিএফ কার্ড অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়, তাহলে আমরা আবেদন পদ্ধতি গুলো আপনার সাথে শেয়ার করবো।

ভিজিএফ আর ভিজিডি কার্ডের মধ্যে পার্থক্য

ভিজিএফ মানে হলো Vulnerable Group Feeding. বাংলায় বলতে গেলে দুর্বল শ্রেণির মানুষদের খাদ্য সহায়তা। এই কার্ডের মাধ্যমে দেশের দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। আর ভিজিএফ কার্ড নারী-পুরুষ উভয়ই নিতে পারে।

অপরদিকে ভিজিডি মানে হলো Vulnerable Group Development. বাংলায় বলতে গেলে দুর্বল শ্রেণির মানুষদের উন্নয়ন। এই কার্ডের মাধ্যমে দেশের দরিদ্র নারীদেরকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করা হয়। ভিজিডি কার্ড শুধু নারীদের জন্য। তবে ভিজিএফ ও ভিজিডি কার্ড পাওয়ার পদ্ধতি একই।

উপসংহার-

ভিজিএফ কার্ড দুস্থ মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সহায়তা কর্মসূচি। যা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের পুনর্বাসনে সহায়তা করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত, ভূমিহীন, দরিদ্র ও বেকার মানুষরা এই সুবিধা পেয়ে থাকেন। তবে ভিজিএফ কার্ড এবং ভিজিডি কার্ডের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও, উভয়ের লক্ষ্য দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *