জার্মানি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ | germany work visa apply online | জার্মানি কেমন দেশ

জার্মানির শক্তিশালী অর্থনীতি, উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা এবং সুন্দর জীবনযাত্রার কারণে বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দেশ গুলোর একটি। আর এই দেশে কাজের সুযোগ পাওয়া মানে হচ্ছে, একটি স্বপ্নের জীবন গড়ার সুযোগ পাওয়া।

২০২৪ সালে জার্মানি কাজের ভিসা পাওয়ার বিষয়টি এখন আর স্বপ্নের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেনা। কারণ, জার্মান সরকার বিভিন্ন সেক্টরে দক্ষ কর্মীর চাহিদা মেটাতে নতুন নীতিমালা চালু করেছে। এই নীতিমালা অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশের দক্ষ কর্মীরা জার্মানিতে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।

জার্মানি কাজের ভিসা আপডেট নিউজ

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে সচল রাখার তাগিদে জার্মান সরকার বিভিন্ন খাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মী নিয়োগ দেয়। আর ২০২৪ সালের সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী বর্তমান সময়ে জার্মান সরকার মোট ৮০ হাজার কর্মী নিয়োগ দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। যে নিয়োগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি আমাদের বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্যও বিরাট একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে।  

 

সেক্ষেত্রে আপনি যদি একজন দক্ষ ও যোগ্যতা সম্পন্ন কর্মী হয়ে থাকেন তাহলে আপনিও এই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারবেন। আর উক্ত সুযোগকে কাজে লাগাতে চাইলে আপনার কি কি ডকুমেন্টস থাকতে হবে আর কিভাবে জার্মানির কাজের নিয়োগে আবেদন করবেন সেগুলো নিয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। 

জার্মানি কাজের ভিসা ২০২৪

জার্মানি তে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মীর চাহিদা বাড়ছে। বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং, স্বাস্থ্যসেবা এবং গবেষণা খাতে। এই চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে, জার্মান সরকার বিদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার চেষ্টা করছে। সেক্ষেত্রে আপনি যদি নির্দিষ্ট কোনো কাজে দক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার জন্য জার্মানি কাজের ভিসা পাওয়া তুলনামূলক ভাবে সহজ হবে। 

 

কিন্তুু জার্মানি কাজের ভিসা পাওয়ার আগে জার্মানির কাজের বেতন, জার্মানি কাজের ভিসার খরচ সহো আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে হবে। এছাড়াও জার্মানি সর্বনিন্ম বেতন কত হয় তা জেনে নেওয়াও অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়। মূলত এবার আমি আপনাকে সেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করবো। 

জার্মানি কাজের ভিসার জন্য কি কি লাগে?

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভিসার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্টস এর দরকার হয়। ঠিক তেমনি ভাবে আপনি যখন জার্মানি কাজের ভিসার জন্য আবেদন করবেন তখন আপনার নিকট প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস থাকতে হবে। তাই যারা জানতে চান জার্মানি কাজের ভিসার জন্য কি কি লাগবে, তারা নিচে উল্লেখিত ডকুমেন্টস গুলো সংগ্রহ করার চেষ্টা করবেন। যেমন, 

 

  1. Visa application form
  2. passport
  3. Biodata
  4. Educational qualification certificate
  5. Proof of work experience (if any)
  6. Evidence of relevant skills or certificates
  7. Job offer letter
  8. Health Insurance
  9. Proof of financial solvency (bank statement)
  10. Proof of German language proficiency (in some cases)
  11. Medical certificate
  12. Police Clearance
  13. Passport size photograph

 

প্রাথমিক ভাবে আমাদের বাংলাদেশ থেকে যারা জার্মানি কাজের ভিসার জন্য আবেদন করবেন তাদের উপরোক্ত ডকুমেন্টস গুলোর দরকার হবে। এছাড়াও আপনি জার্মানির কোন কোম্পানির আওতায় থাকা জবের জন্য আবেদন করবেন তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আরো অন্যান্য ডকুমেন্টস দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। 

জার্মানি চাকরি আবেদন করার উপায় 

আপনারা যারা আমাদের বাংলাদেশ থেকে জার্মানি কাজের ভিসা পেতে চান তাদের সবার প্রথমে জব অফার লেটার সংগ্রহ করতে হবে। আর এই জব অফার লেটার পেতে হলে আপনাকে জার্মানিতে থাকা বিভিন্ন কোম্পানির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে হবে। এরপর সেই কোম্পানি যদি আপনাকে যোগ্য হিসেবে বিবেচিত করে তাহলে তারা আপনাকে তাদের কোম্পানি থেকে জব অফার লেটার প্রদান করবে। 

 

তো এখন প্রশ্ন হলো যে, আমরা কিভাবে জার্মানি কোম্পানির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করবো? -হুমম আপনি চাইলে নিজের ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে জার্মানি চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারবেন। তবে সেজন্য আপনাকে নিচের পদ্ধতি গুলো সঠিকভাবে ফলো করতে হবে। 

জার্মানি জব অফার লেটার সংগ্রহ

সবার প্রথমে আপনি গুগলে যাবেন তারপর ”Germany Job Circular Official Website” লিখে সার্চ করবেন। এরপর আপনার সামনে প্রথমে যে ওয়েবসাইট এর লিংক আসবে সেখানে ক্লিক করবেন। অথবা আপনি চাইলে সরাসরি এখানে ক্লিক করেও সরাসরি উক্ত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারবেন। তো আপনি যদি লিংকে ক্লিক করেন, তাহলে নিচের পিকচারে দেখানো একটি সাইটে প্রবেশ করবেন।

তো এটি হলো জার্মানির সরকারি একটি ওয়েবসাইট, যেখানে জার্মানির চলমান ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির নিয়োগ প্রকাশ করা হয়। আর এখান থেকে আপনি আপনার যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গুলো খুজে নিতে পারবেন। আর উক্ত কাজটি করার জন্য নিচের পদ্ধতি গুলো ফলো করবেন।

উপরে পিকচারে দেখানো “Find the job that suits you” অপশন থেকে কি ধরনের জব পেতে চান, জার্মানির কোন স্থানে চাকরি করতে চান এই বিষয় গুলো সিলেক্ট করে দিবেন। তারপর আপনি যখন “Find Jobs”- এ ক্লিক করবেন তারপর আপনি আপনার চাহিদা মতো চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গুলো দেখতে পারবেন।

 

উদাহরন হিসেবে আমি “Welder”- লিখে সার্চ করলাম তারপর দেখতে পাচ্ছেন নিচে বিভিন্ন কোম্পানির জব লিস্ট দেখানো হচ্ছে। এখন আমরা যদি উপরের যেকোনো একটি জবে ক্লিক করি তাহলে সমস্ত বিস্তারিত ইনফরমেশন গুলো দেখতে পারবো। 

 

এখন আপনার যদি যোগ্যতা অনুযায়ী কোনো জব ম্যাচ করে তাহলে আপনাকে সেই জব লিংকে ক্লিক করতে হবে। তারপর বিস্তারিত দেখে আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আবেদন শেষে সেই কোম্পানি যদি আপনাকে শর্টলিষ্ট করে তাহলে তারা আপনাকে ইন্টারভিউ এর জন্য কল করবে। 

 

সেক্ষেত্রে যদি সকল অফিসিয়াল প্রক্রিয়া শেষে যখন আপনি তাদের কাছে যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হবেন ঠিক তখন আপনি আপনার কাঙ্খিত জব অফার লেটার পাবেন। তবে এই বিষয়টিকে আমি যতোটা সহজ ভাবে উপস্থাপন করলাম বাস্তবতা কিন্তুু এর চেয়েও অনেক বেশি কঠিন। কেননা, বিদেশের কোনো কোম্পানিতে চাকরি পাওয়া যে কতটা কঠিন তা আমরা সবাই ভালো করেই জানি। 

জার্মানি কোন কাজের চাহিদা বেশি?

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন কাজের চাহিদা থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি যদি জার্মানি তে কাজ করার চেষ্টা করেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি তা জানতে হবে। কেননা, আপনি যদি সেই চাহিদাসম্পন্ন কাজে নিজেকে দক্ষ করে তুলেন। তাহলে আপনি জার্মানিতে কাজের বিনিময়ে বেশি বেতন সুবিধা নিতে পারবেন।

 

  1. ডাক্তার
  2. ড্রাইভিং
  3. হোটেল বয়
  4. মেকানিক
  5. প্লাম্বার
  6. কনস্ট্রাকশন শ্রমিক
  7. ফ্যাক্টরি ওয়ার্কার
  8. নার্স
  9. ক্লিনার
  10. ইলেকট্রিশিয়ান
  11. ফুড ডেলিভারি ম্যান
  12. সিকিউরিটি গার্ড
  13. ফুড সার্ভিস
  14. হাউজকিপিং

 

বর্তমান সময়ে জার্মানির মতো উন্নত একটি দেশে যেসব কাজের চাহিদা বেশি সেই কাজ গুলো উপরের তালিকায় শেয়ার করা হয়েছে। আর আপনি যদি জার্মানিতে কাজের ভিসা পেতে চান তাহলে অবশ্যই উপরোক্ত কাজ গুলোতে নিজেকে দক্ষ করে তোলার চেষ্টা করবেন। 

কাজের ভিসায় জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে?

আমাদের বাংলাদেশ থেকে যারা কাজের ভিসায় জার্মানি যায় তাদের সব মিলিয়ে প্রায় ৮ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ করার দরকার হয়। আবার এমন অনেক মানুষ আছেন যাদের ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করে জার্মান যেতে পেরেছে। কিন্তুু আপনার যদি জার্মানিতে নিজস্ব লোক থাকে তাহলে আপনি এর চেয়ে আরো কম খরচে যেতে পারবেন। 

 

কিন্তুু সমস্যা হলো আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ জার্মান যাওয়ার জন্য দালালের শরণাপন্ন হয়। আর যখনি আপনি দালালের সাহায্য নিবেন তখন আপনার খরচ কয়েকগুন বৃদ্ধি পাবে। সেক্ষেত্রে আপনি যদি বর্তমান সময়ে দালালের সহোযোগীতায় জার্মান যেতে চান তাহলে আপনার প্রায় ১৪ লাখ থেকে ১৬ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করার দরকার হবে। 

 

তবে আমার পরামর্শ হলো, জার্মান যেতে হলে আপনি অবশ্যই বৈধ পথে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে করে আপনার চাকরির নিশ্চয়তার পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত থাকবে। অপরদিকে দালাল এর মাধ্যমে গেলে আপনার অনেক ঝুঁকি থাকবে। কারণ, দালালরা সর্বদাই আপনার থেকে বেশি অর্থ পাওয়ার ধান্দায় থাকবে। সেইসাথে অর্থ আত্মসাৎ, গুম, মানবপাচার, ভূয়া ভিসা এর ভয় তো থাকবেই। 

আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা

আজকের আর্টিকেলে আমরা জার্মান কাজের ভিসা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করার চেষ্টা করছি। আশা করি, আজকের এই লেখাটি থেকে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। আর বিদেশের ভিসা সম্পর্কিত জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য জার্মানিতে সরকারিভাবে যাওয়ার সূবর্ণ সুযোগIelts করে বিদেশ যাওয়ার খরচ নিয়ে লেখা কন্টেন্ট গুলো পড়তে পারেন। ধন্যবাদ, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *