বাংলাদেশে পিএইচডি করার খরচ
পিএইচডি হলো উচ্চতর শিক্ষার শীর্ষ ধাপ, যা জ্ঞান অন্বেষণ ও গবেষণার অবারিত সুযোগ এনে দেয়। বাংলাদেশে পিএইচডি প্রোগ্রাম গুলোর খরচ তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী এবং গুণগত মানের কারণে শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়। এখানে গবেষণা খাতে সরকার ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সহায়তা সুবিধা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বড় সুযোগ।
বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে পিএইচডি করার মোট খরচ ভিন্ন হয়। টিউশন ফি ছাড়াও গবেষণা উপকরণ, যাতায়াত এবং দৈনন্দিন খরচ প্রাসঙ্গিক থাকে। তবে, অনেক ক্ষেত্রে স্কলারশিপ বা ফেলোশিপ পাওয়ার সুযোগ থাকায় খরচের বোঝা কমানো সম্ভব।
বাংলাদেশে পিএইচডি করার খরচ | Cost of doing a PhD
বাংলাদেশে পিএইচডি করার বিষয়টি উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য একটি চমৎকার সুযোগ। তবে এই দীর্ঘ মেয়াদী শিক্ষা পরিকল্পনার সঙ্গে খরচের বিষয়টি জড়িত, যা ছাত্রছাত্রী এবং তাদের পরিবারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়।
বাংলাদেশের পিএইচডি প্রোগ্রামের খরচ সাধারণত ২০,০০০ টাকা থেকে ৩০,০০০ টাকার মধ্যে শুরু হয়। তবে এটি কোনও নির্দিষ্ট সীমা নয় কারণ, ভার্সিটি অনুযায়ী খরচের তারতম্য হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার ক্ষেত্রে খরচ তুলনামূলক কম। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলো সাধারণত শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তার সুযোগ এবং অপেক্ষাকৃত সাশ্রয়ী টিউশন ফি প্রদান করে। তবে, ভর্তি হওয়ার আগে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল পিএইচডি নোটিশ এবং খরচের বিবরণ ভালোভাবে জেনে নেওয়া জরুরি।
অন্যদিকে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে চাইলে খরচ বেশি হবে। এই ধরনের প্রতিষ্ঠান গুলো গবেষণার জন্য উচ্চমানের সুবিধা এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রশিক্ষক সরবরাহ করে। ফলে খরচ কিছুটা বাড়লেও, উচ্চমানের গবেষণার সুযোগ নিতে এটি একটি কার্যকরী পদক্ষেপ।
পিএইচডি প্রোগ্রাম শুরু করার আগে, গবেষণার বিষয়ের উপযুক্ততা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরদের গাইডেন্স এবং সুযোগ-সুবিধা গুলো মূল্যায়ন করা উচিত। একইসঙ্গে স্কলারশিপ বা ফান্ডিং অপশন রয়েছে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
আরো পড়ুনঃ বি এ অনার্স মানে কি | BA Honours Meaning
বিদেশে পিএইচডি করার খরচ
বিদেশে পিএইচডি করার স্বপ্ন অনেক শিক্ষার্থীরই থাকে, তবে এই পথচলার প্রথম প্রশ্নটি প্রায়ই অর্থনৈতিক বিষয়ক হয়। যদিওবা খরচের নির্দিষ্ট হিসাব দেওয়া কঠিন, কারণ এটি দেশের ভিন্নতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি এবং ব্যক্তিগত অবস্থা অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। তবে, যদি সঠিক প্রস্তুতি এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দেওয়া যায়, তাহলে বিদেশে পিএইচডি করা তুলনামূলক ভাবে কম খরচে সম্পন্ন করা সম্ভব।
স্কলারশিপ বা শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে বড় সহায়তা। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ বা আংশিক স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। এ ধরনের স্কলারশিপ গুলোতে টিউশন ফি, লিভিং এক্সপেন্সেস এবং গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে। বাংলাদেশ থেকে আবেদনকারীদের জন্য চীনের CSC স্কলারশিপ, যুক্তরাজ্যের চিভনিং স্কলারশিপ এবং ইউরোপীয় ইরাসমাস মুনডাস প্রোগ্রামের মতো সুযোগ গুলো বিশেষভাবে জনপ্রিয়।
বিদেশে পিএইচডি করার জন্য ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণ প্রয়োজন হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি আইইএলটিএস স্কোরের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। একটি ভালো আইইএলটিএস স্কোর থাকলে কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়াই সহজ হয় না, বরং স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনাও বহুগুণ বেড়ে যায়।
আরো পড়ুনঃ স্নাতক মানে কি পাস | Graduation mean in Bangla
বাংলাদেশে কি পিএইচডি করা যায়?
বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য পিএইচডি অত্যন্ত সম্মানজনক পদ হিসেবে বিবেচিত হয়। আর দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে এই সুযোগের অভাব নেই। দেশের অনেক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও উচ্চতর শিক্ষা লাভের জন্য পিএইচডি এবং এমফিল কোর্স চালু রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের মেধা ও আগ্রহ অনুযায়ী বিভিন্ন বিষয় ও অনুষদে পিএইচডি করার সুযোগ রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দেশের অন্যতম প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গবেষণা ও একাডেমিক উন্নয়নে প্রতিনিয়ত নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। এখানে নানা বিষয়ে পিএইচডি করার সুযোগ পাওয়া যায়, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের জ্ঞান ও দক্ষতাকে আরো গভীরভাবে উন্নত করতে পারেন। এছাড়া, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও পিএইচডি প্রোগ্রাম অফার করা হয়, যা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রের ওপর মনোযোগ দিতে সহায়তা করে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ও দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে একটি, যেখানে উচ্চতর গবেষণার জন্য অসংখ্য সুযোগ রয়েছে। দেশের অন্যান্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ও গবেষণা ও পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গড়তে সহায়তা করছে। এইসব বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি কোর্স গুলো শিক্ষার্থীদের গভীর গবেষণা, নতুন ধারণা ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের প্রসার ঘটাতে সাহায্য করে।