বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় আসন সংখ্যা

বাংলাদেশের শিক্ষা ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়। যা দেশের প্রথম মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে সমুদ্র বিষয়ক উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি শুধু বাংলাদেশের নয়, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান মেরিটাইম শিক্ষাকেন্দ্র, যা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদানে অগ্রগামী।

বিশ্ববিদ্যালয়টি অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সমুদ্র সম্পদের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে এটি উচ্চমানের শিক্ষাব্যবস্থা এবং গবেষণার সুযোগ প্রদান করছে। বিশেষ করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মেরিন ক্যাডেটদের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ‘ব্যাচেলর অব মেরিটাইম সায়েন্স’ ডিগ্রি প্রাপ্তির ব্যবস্থাও রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় আসন সংখ্যা

বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে চারটি অনুষদের অধীনে পাঁচটি বিভাগে পাঠদান করা হয়। এই বিভাগ গুলোতে রয়েছে বৈচিত্র্যময় ও যুগোপযোগী বিষয়ভিত্তিক প্রোগ্রাম, যা শিক্ষার্থীদের তাত্ত্বিক জ্ঞান ও ব্যবহারিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। প্রতিটি বিভাগ উচ্চমানের শিক্ষা প্রদানের জন্য সমৃদ্ধ গবেষণা ল্যাব, অভিজ্ঞ শিক্ষক মণ্ডলী এবং আধুনিক শিক্ষাপ্রযুক্তি ব্যবহার তার বাস্তব প্রমাণ।

বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ২০০টি আসন রয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এখানে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করে, যা আসনপ্রতি ১১৪ জনের প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করে। যা স্পষ্ট করে যে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি গভীর আগ্রহ এবং বিশ্বাস রয়েছে। এমন কঠিন প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের মানসিক দৃঢ়তা বাড়াতে এবং সেরাদের মধ্য থেকে সেরা শিক্ষার্থী বেছে নিতে সাহায্য করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে তৈরি করা হয়, যাতে শিক্ষার্থীরা গ্লোবাল মেরিটাইম সেক্টরে নিজেদের জায়গা তৈরি করতে পারে। সেইসাথে, বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য রয়েছে ইন্টার্নশিপ এবং ইন্ডাস্ট্রি-সংযুক্ত প্রোগ্রাম। এছাড়া, নীতিনিষ্ঠা, পেশাগত দক্ষতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়।

আরো পড়ুনঃ এলএলবি ভর্তি যোগ্যতা 

বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম ইউনিভার্সিটিতে কি কি পড়ানো হয়?

বর্তমানে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪টি ফ্যাকাল্টির অধীনে ৫টি ডিপার্টমেন্ট পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে রয়েছে অত্যাধুনিক কারিকুলাম এবং প্রশিক্ষণের সুযোগ। ভবিষ্যতে, বিশ্ববিদ্যালয়টি ৭টি ফ্যাকাল্টির অধীনে ৩৮টি ডিপার্টমেন্ট চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে ৪০টি আসন রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিযোগিতামূলক এবং মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রোগ্রাম গুলো অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। যেমন:

  1. BSc (Hons) in Oceanography: এই কোর্সে সাগর ও সমুদ্রের পরিবেশ, তার ভূতাত্ত্বিক গঠন এবং সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
  2. BSc (Hons) in Marine Fisheries: সামুদ্রিক জীববিজ্ঞান ও মৎস্যসম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে যারা কাজ করতে আগ্রহী, তাদের জন্য এই প্রোগ্রাম।
  3. BSc (Engr.) in Naval Architecture and Offshore Engineering: সমুদ্রগামী জাহাজের ডিজাইন ও নির্মাণ এবং অফশোর প্ল্যাটফর্ম গুলোর প্রকৌশল নিয়ে গভীরতর জ্ঞান প্রদান করা হয়।
  4. BBA (Hons) in Port Management and Logistics: বন্দর ব্যবস্থাপনা এবং সরবরাহ শৃঙ্খল নিয়ে যারা ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ কোর্স।
  5. LLB (Hons) in Maritime Law: এই প্রোগ্রামে সামুদ্রিক আইনের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিশেষজ্ঞ হওয়া যায়।

এছাড়াও, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স পর্যায়ের বিভিন্ন প্রোগ্রাম চালু রয়েছে, যা মেরিটাইম সেক্টরে গভীরতর গবেষণা ও পেশাদার দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ প্রদান করে।

আরো পড়ুনঃ বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় অবস্থিত

আপনার জন্য আমাদের শেষকথা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের মেরিটাইম শিক্ষা ও গবেষণায় এক অনন্য স্থান। যা শুধুমাত্র উচ্চমানের শিক্ষার সুযোগই নয়, বরং নীল অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে দক্ষ জনবল গড়ে তুলছে। আন্তর্জাতিক মানের কারিকুলাম, অত্যাধুনিক ল্যাব, এবং প্রশিক্ষণ সুবিধা শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক মঞ্চে সাফল্য অর্জনের জন্য প্রস্তুত করছে। 

প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি প্রক্রিয়া এবং গবেষণার ওপর গুরুত্ব এই বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ভবিষ্যতের পরিকল্পনা এর প্রভাবকে আরও সুদূরপ্রসারী করে তুলবে। বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় সত্যিই মেরিটাইম সেক্টরে বাংলাদেশের নেতৃত্ব নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি বহন করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

এই ওয়েবসাইটটি কোনও অফিসিয়াল ভিসা বা ভ্রমণ সংস্থা নয় এবং এই সাইটের সমস্ত তথ্য অনলাইন, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাই কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। এবং পসিবল হলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *