বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় অবস্থিত
২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি (বিএসএমআরএমইউ), বাংলাদেশের মেরিন ও মেরিটাইম শিক্ষায় বিশেষায়িত একমাত্র সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি উচ্চ শিক্ষার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, বিশেষ করে সমুদ্রবিদ্যা ও সমুদ্রসম্পদ ব্যবস্থাপনায়। ২০১৭ সালে মিরপুর পল্লবীস্থ অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ধরিত্রী ও সমুদ্রবিজ্ঞান অনুষদের অধীনে বিএসসি (অনার্স) ইন ওশানোগ্রাফি প্রোগ্রাম চালুর মাধ্যমে এর যাত্রা শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজ ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে ১০৬.৬ একর জমির উপর শুরু হয়, যা ২০২৫ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে। আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন এই ক্যাম্পাস নির্মাণে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ৩৭তম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এটি ইতিমধ্যে নৌ প্রকৌশল, মেরিটাইম আইন, বন্দর ব্যবস্থাপনা এবং মেরিটাইম ফিশারিজের মতো বিশেষায়িত প্রোগ্রামের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষায় অনন্য অবদান রাখছে।
বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় অবস্থিত
বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যা দেশের মেরিটাইম সেক্টরে উন্নতি এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসটি ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে, মিরপুর-১২ এলাকায় অবস্থিত। যার ঠিকানা হলো প্লট নং ১৪/০৬-১৪/২৩, পল্লবী, মিরপুর-১২, ঢাকা-১২১৬.
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাঙ্গন দুইটি মূল শহরে অবস্থিত, ঢাকা এবং চট্টগ্রাম, যার মধ্যে ঢাকা শহরের ক্যাম্পাসের আয়তন প্রায় ১০৬.৬ একর। এর বিশাল পরিসর শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উন্নত মানের পড়াশোনা ও গবেষণা পরিবেশ নিশ্চিত করবে। শহুরে পরিবেশের মধ্যে শিক্ষা লাভ করা শিক্ষার্থীরা মেরিটাইম খাতে উচ্চতর দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পাবেন। বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য হল মেরিটাইম সেক্টরের প্রতিটি খাতে বিশ্বমানের পেশাদার তৈরির জন্য বিশেষজ্ঞ শিক্ষাদান করা।
বিশ্ববিদ্যালয়টি আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি বাস্তবমুখী প্রশিক্ষণও প্রদান করে, যা শিক্ষার্থীদের একত্রিত ভাবে কাজ করার দক্ষতা এবং সমুদ্র পরিবহন খাতে তাদের ভবিষ্যতের কর্ম জীবনকে শক্তিশালী করবে। অভিজ্ঞ শিক্ষক, উন্নত ল্যাবরেটরি সুবিধা এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা ক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শক্তিশালী দিক গুলোর মধ্যে অন্যতম। যা দেশের মেরিটাইম সেক্টরের উন্নয়নে এক অনন্য অবদান রাখছে এবং ভবিষ্যতে আরো উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমুদ্রপথ সম্পর্কিত শিক্ষা, গবেষণা, ও উন্নয়ন প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবে।
আরো পড়ুনঃ বিএসসি নার্সিং এর বেতন কত
বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদসমূহ
বাংলাদেশে মেরিটাইম শিক্ষার অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান হিসেবে বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ক্যাম্পাসে ৭টি অনুষদের অধীনে মোট ৩৮টি বিভাগ পরিচালিত হচ্ছে। এই বিভাগ গুলোতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষাদান ও গবেষণার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য হলো, মেরিটাইম সেক্টরের উন্নয়নে দক্ষ এবং প্রতিযোগিতা মূলক শিক্ষার্থী তৈরি করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকার দুটি ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। ভবন-১ এবং ভবন-২ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা সামুদ্রিক মাৎস্যবিজ্ঞান, নিরাপদ জাহাজ চলাচল ব্যবস্থাপনা, নৌ-প্রকৌশল, সমুদ্রবিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক মেরিটাইম আইন ইত্যাদি বিষয়ে পাঠদান চলমান আছে। স্নাতক পর্যায়ে বর্তমানে পাঁচটি বিভাগে শিক্ষা প্রদান করা হয়, যা মেরিটাইম খাতে বিশেষ দক্ষতা অর্জনকারী শিক্ষার্থী তৈরি করতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর কোর্সেও কিছু অতিরিক্ত বিষয় রয়েছে। এসব কোর্স মেরিন ক্যাডেটদের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্যও এক বিশাল সুযোগ। ভবিষ্যতে, বিশ্ববিদ্যালয় আরও বেশি বিভাগ চালু করে স্নাতক ডিগ্রি প্রদান করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এভাবে, প্রতিষ্ঠানটি সামুদ্রিক ও নৌ-বিষয়ক বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়ন সাধন করবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
বর্তমানে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি স্নাতক বিভাগে মোট ২০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়, যারা পরবর্তীতে মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রিতে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ পায়। এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় যা দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন কর্মে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে, যা ছাত্রদের জন্য একটি উৎকৃষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
আরো পড়ুনঃ বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন
আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের মেরিটাইম খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের অবস্থান প্রতিষ্ঠা করেছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি ক্যাম্পাসে সমুদ্রবিদ্যা, নৌ-প্রকৌশল, মেরিটাইম আইন, বন্দর ব্যবস্থাপনা এবং মেরিটাইম ফিশারিজের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রামে শিক্ষাদান ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা চলমান আছে।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ক্যাম্পাস এবং অভিজ্ঞ শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্বের মানসম্মত প্রশিক্ষণ প্রদান করে, যা তাদেরকে মেরিটাইম সেক্টরে উচ্চ দক্ষতা অর্জনে সহায়ক। এই বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং উন্নয়নে একটি অমূল্য অবদান রাখবে।